পথ-নিরাপত্তার পাঠ দিতে স্কুলে হাজির ‘হানি-বানি’
হরের রাস্তার ট্রাফিক-কানুন নিয়ে মঞ্চে তখন হরেক প্রশ্ন জুড়েছে ‘হানি-বানি’।
ম্যাজিশিয়ানের কোলে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের বিজ্ঞাপনের ‘মুখ’ ওই পুতুলের কাণ্ডকারখানা দেখে তুমুল মজায় শ’চারেক স্কুলপড়ুয়া। তাদের হাসিতে চাপা পড়ল উদ্যোক্তা ‘পুলিশকাকু’দের হাতের ওয়াকিটকির যান্ত্রিক শব্দ।
কলকাতা পুলিশের ‘পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহে’ বৃহস্পতিবার জোকার একটি স্কুলে এমনই অনুষ্ঠান করল ঠাকুরপুকুর ট্রাফিক গার্ড। ম্যাজিক, ক্যুইজের মাধ্যমে রাজপথে যাতায়াতের নিয়ম শিখল ছাত্রছাত্রীরা। আয়োজকেরা জানালেন, বাচ্চাদের কাছ থেকে ওই সব কানুনের কথা জানবে তাদের পরিজন, বন্ধুরা। এ ভাবে সচেতনতা সহজেই ছড়াবে অনেকের কাছে। এক পুলিশকর্তা বললেন, “আমাদের উদ্দেশ্য হল— ‘ক্যাচ দেম ইয়ং।’ বাচ্চারা মন দিয়ে কিছু শিখলে সারা জীবন তা মনে রাখে।” পথ-নিরাপত্তা নিয়ে জন-সচেতনতা বাড়াতে ঠাকুরপুকুরের মতো ডায়মন্ড হারবার রোড, কসবা ট্রাফিক গার্ডের লক্ষ্য তাই শহরের ছোটরাই।
পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের এই প্রচার কি দুর্ঘটনা কমাতে পারে? লালবাজারের ট্রাফিক-কর্তাদের বক্তব্য, বছরভর এ ধরনের অনুষ্ঠান চলে কলকাতায়। মানুষের মধ্যে সচেতনতা এতে ক্রমেই বাড়ছে।
এ দিন বেহালা চৌরাস্তায় স্থানীয় স্কুলের পড়ুয়াদের রাস্তায় নিরাপদে যাতায়াতের টুকিটাকি জানায় ট্রাফিক পুলিশ। ঠিকঠাক না-চললে কী দুর্দশা হতে পারে, তা বোঝাতে দুর্ঘটনায় ভেঙে চৌচির একটি মোটরসাইকেলও দেখানো হয় তাদের।
জোকার স্কুলে অবশ্য নিয়ম শেখানোর ছক ছিল অন্য রকম। ভিড়ে ঠাসা অডিটোরিয়ামে ‘ঘোষক’ পুলিশ অফিসারের প্রশ্নে একের পর এক হাত উঠল পড়ুয়াদের। বিবাদী বাগ, পার্ক স্ট্রিটের অন্য নাম কিংবা ঘোড়ায় টানা ট্রামগাড়ি নিয়ে সঠিক জবাব দিতে হাতেহাতেই মিলল পুরষ্কার। ছিল ম্যাজিকও। বন্ধ বাক্স থেকে রংবেরঙের রাংতার ফুল, জাপানি পাখার সঙ্গে বেরোলো ট্রাফিকের নানা চিহ্নের ছবি। ঠিকমতো তা চিনে ইনাম জিতল রাহুল দাস, সুপ্রিয় হালদার, সমীর মহম্মদের মতো অনেকে। ‘হানি-বানি’ ম্যাজিশিয়ানের কোলে বসে সবাইকে জানাল, হেলমেট না-পরলে কী কী বিপদ হতে পারে।
ট্রাফিক পুলিশের বেহালা এলাকার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার গৌতম গুপ্ত বলেন, “ম্যাজিক, ক্যুইজের মধ্যে দিয়ে পড়ুয়ারা যা শিখল, সে গল্প বাড়ির লোকেদের বলবে। ট্রাফিক নিয়মের বিষয়ে বাচ্চারা কিছু শেখানোর চেষ্টা করলে অন্যরা নিশ্চয়ই তাতে গুরুত্ব দেবেন।” ব্রতচারী বিদ্যাশ্রমের সহকারী প্রধান শিক্ষক অরুণ মিত্র, বড়িশা শশীভূষণ জনকল্যাণ হাইস্কুলের শিক্ষক অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, শুধু ছোটরাই নয়, বড়দেরও অনেকে রাস্তার সুরক্ষার সব নিয়ম জানেন না। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁরা তা জানতে পারবেন। পাশাপাশি, এর মাধ্যমে পুলিশের সঙ্গে নাগরিকদের সম্পর্ক আরও ভাল হয়।
কথায় কথায় ‘হানি-বানি’ এক ট্রাফিক সার্জেন্টকে মঞ্চে ডেকে বলল, “যখন মোটরবাইক চালাই, মাঝেমধ্যেই হেলমেট পড়তে ভুলে যাই। এ বার কিন্তু দেখা হলেই ছেড়ে দেবেন।” ফের হাসি ছড়াল স্কুলের ওই প্রেক্ষাগৃহ জুড়ে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.