বিমলের সঙ্গে বৈঠক শঙ্করের
তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে মোর্চার ‘পাশে’
রাজ্যের শাসক তৃণমূলের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বাড়তেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে তত্‌পর হল কংগ্রেস। সোমবার দার্জিলিঙের পাতলেবাসে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের বৈঠক হয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এদিন দলের তরফে শঙ্করবাবু মোর্চা সভাপতি গুরুঙ্গকে দিল্লি যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। মোর্চার অন্দরের খবর, ১৪ বা ১৫ ফেব্রুয়ারি গুরুঙ্গ দিল্লি যেতে পারেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে ছাড়া কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে গুরুঙ্গের বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
দুই পক্ষই এদিনের বৈঠককে সৌজন্যমূলক সাক্ষাত্‌কার বললেও পুরোটাই কুটনীতি এবং রাজনীতি ছাড়া যে কিছু নয়, তা পাহাড়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। শঙ্করবাবু বলেছেন, “জিটিএ গঠনের পরে পাহাড়ে যাওয়া হয়নি। তাই দার্জিলিঙে গিয়ে মোর্চা সভাপতিকে শুভেচ্ছা জানাই। সম্প্রতি জিটিএ ছেড়ে বার হয়ে আসার কথা বলেছিলেন গুরুঙ্গেরা। তা যে ঠিক নয়, তা ওঁকে বলেছি। জিটিএ-র মাধ্যমেই পাহাড়ের উন্নয়ন, প্রগতি, শান্তি বজায় রাখার কথাও বলেছি।” আর দিল্লি’র আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে শঙ্করবাবুর বক্তব্য, “এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” মোর্চা সভাপতি গুরুঙ্গও বৈঠকের পর কোনও মন্তব্য করেননি। মোর্চার তরফে শুধু জানানো হয়েছে, সঠিক সময়ে দলীয় সভাপতি যা জানানোর তা প্রকাশ্যে জানিয়ে দেবেন।
কালিম্পঙে লেপচাদের একটি সংগঠনের অনশন তিন দিনে পড়ল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন। তরাই এবং ডুয়ার্সে বিভিন্ন এলাকায় মোর্চার ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। পাশাপাশি, আগামী ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে এখনই ঘর গুছিয়ে রাখার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। উল্টো দিকে, এই সময় কেন্দ্রীয় সরকারকে পাশে পেলে পাহাড়ে রাজ্য বিরোধী অবস্থান অনেকটাই মজবুত করা যাবে বলে মনে করছেন মোর্চা নেতারা। বিশেষ করে লেপচা উন্নয়ন পর্ষদকে সামনে রেখে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে মিটতে পারে বলেও মোর্চার একাংশ মনে করছেন। কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, জিটিএ চুক্তি রাজ্য এবং মোর্চার কোনও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নয়। কেন্দ্রের উপস্থিতিতে জিটিএ ত্রিপাক্ষিক চুক্তি তৈরি হয়েছে।
এদিন এআইসিসি-র এই রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাকিল আহমেদের নির্দেশে দার্জিলিঙের পাতলেবাসে যান জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্করবাবু। দুপুর দু’টো থেকে ঘণ্টা খানেক পাতলেবাসে গুরুঙ্গের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। পাহাড়ের বর্তমান অবস্থার জেরে ফের যাতে অস্থিরতা তৈরি না হয়, তা নিয়েই চিন্তিত কংগ্রেস নেতৃত্বের বার্তা গুরুঙ্গদের দেন শঙ্করবাবু। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য, পরামর্শ নেওয়ার কথাও বলেন। এই সময়ে কেন্দ্রও চায় না পাহাড়ের অশান্তির পরিবেশ তৈরি হোক। তাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দায় এসে পড়বে কেন্দ্রের ঘাড়ে।
দার্জিলিং ম্যালে অল ইন্ডিয়া লেপচা অ্যাসোসিয়েশনের নামের একটি লেপচাদের একটি সংগঠন সভা করেছেন। সেখানে সংগঠনের নেতা তথা জিটিএ সদস্য দাওয়া লেপচা বলেন, “আমরা লেপচা উন্নয়ন পর্ষদ চাই। কিন্তু তা তৈরি হোক জিটিএ-র অধীনেই। জিটিএ-র আইনেও তাই বলা আছে। আলাদা একটি পর্ষদ তৈরি হলে প্রশাসনিক কাজকর্মে জটিলতা বাড়বে।” কালিম্পঙের লেপচা ইনডিজেনাস ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশনের অনশন ৩ দিনে পড়ল। সংগঠন প্রধান এনটি লেপচা জানিয়েছেন, মোর্চার নেতারা জিটিএ ছেড়ে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনে নামলে উন্নয়ন পর্ষদ ত্যাগ করে তাতে সামিল হব। এটা না করলে জিটিএ-র পদাধিকারীদের কিছু বলাটা ঠিক নয়। লেপচা উন্নয়ন পর্ষদের এক প্রতিনিধি দল এ দিন মহাকরণে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা দাবি করেছেন পর্ষদ নিয়ে যেন রাজনীতি না হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের আজ, মঙ্গলবার কালিম্পং যাওয়ার কথা। লেপচাদের একটি সংগঠন পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার দাবিতে অনশন শুরু করেছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে অনশন তোলানোর চেষ্টা করবেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.