রাজনীতির স্বার্থেই আসছেন শিন্দে, তাগিদ মমতারও
তাগিদটা দু’দিকেরই। লোকসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত তৃণমূল এবং সিপিএম দু’পক্ষের সঙ্গে সম্পর্কে ভারসাম্য রেখে চলতে চায় ইউপিএ। আবার পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে বিমল গুরুঙ্গদের সন্তুষ্ট রাখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও কেন্দ্রীয় সরকারকে পাশে প্রয়োজন।
এবং এই রাজনৈতিক সমীকরণ মেনেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দে। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে টেলিফোনে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। নাগাল্যান্ডে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার সেরে ফেরার পথে শিন্দে কলকাতায় পা দেবেন। সেখানে মমতার সঙ্গে বৈঠক করবেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সুন্দরবন লাগোয়া এলাকায় এক সরকারি অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হাজির থাকার কথা। সোমবার মহাকরণ-সূত্রেও ১৯ তারিখে শিন্দের প্রস্তাবিত সফরের কথা জানানো হয়েছে। আজ ভাঙড়ে মমতা নিজেও বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন। তাঁর সঙ্গে আমার কথা হবে।”
রাজ্যের এক স্বরাষ্ট্র-কর্তা জানান, হোভারক্র্যাফট রাখার জন্য নামখানায় উপকূলরক্ষী বাহিনীকে জমি দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রের টাকায় নদী তীরবর্তী এলাকায় একাধিক উপকূল-থানার কাজ শেষ। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অনুদানে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৈরি হচ্ছে ‘ফ্লাড শেল্টার।’ এর মধ্যে যে কোনও একটির উদ্বোধনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর থাকার কথা। উল্লেখ্য, ইউপিএ ছাড়ার পরে তাঁর সঙ্গে এটাই হবে মমতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে জিটিএ-র শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে শিন্দে উপস্থিত হয়েছিলেন। এখন আবার সেই দার্জিলিং পাহাড়েই সমস্যা শুরু হয়েছে। তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের বিষয়টি সামনে এসে যাওয়ার নতুন করে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে রাস্তায় নামছেন বিমল গুরুঙ্গ-রোশন গিরিরা। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা দিল্লিতেও ধর্নায় বসেছেন। এক দিকে গুরুঙ্গ মমতার বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন। অন্য দিকে দিল্লিতে রোশন গিরিরা বিজেপি শীর্ষনেতাদের কাছে দরবার করছেন।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে পাশে রাখতে চাইছেন মমতা। কারণ জিটিএ-কে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। কলকাতা হাইকোর্ট জিটিএ-র সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত, বাজেট অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধন বিল আনা হবে। রাজ্য ইতিমধ্যে বিলের খসড়া পাঠিয়ে দিয়েছে। বাজেট অধিবেশনেই সংসদের দু’কক্ষে তা পাশ করানোর চেষ্টা করবে সরকার। এতে খুব সমস্যা হবে না বলে দিল্লি আশাবাদী। এ ক্ষেত্রে বিজেপি-র সাহায্যের দরকার পড়বে ঠিকই, তবে মমতার স্বস্তির কারণ, বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব রাজ্য ভাগের বিপক্ষে। যাই হোক, গোটা বিষয়টি নিয়ে শিন্দের সঙ্গে আগাম একটা আলোচনা সেরে নিতে চাইছেন মমতা। তিনি মনে করছেন, সংবিধান সংশোধনের পরে পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রক্রিয়াও সেরে ফেলা যাবে। ফলে পাহাড়ের উন্নয়নে পঞ্চায়েতের অর্থও মিলবে।
অন্য দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার তাগিদ রয়েছে বিলক্ষণ। কারণ জিটিএ গড়তে যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল, কেন্দ্রও তাতে সামিল ছিল। তার পরেও পাহাড়ে নতুন করে অশান্তি তৈরি হলে বিজেপি কেন্দ্রকে দুষবে। এমনিতেই যখন তেলেঙ্গানাকে সামনে রেখে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন মাথা চাড়া দিচ্ছে, তখন অন্তত জিটিএ-কে পাকাপোক্ত চেহারা দিয়ে তাকে দার্জিলিং-সমস্যার পাকা সমাধান হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে কেন্দ্র। পৃথক রাজ্যের বদলে জিটিএ-র মতো কার্যকরী একটি আঞ্চলিক পরিষদও যে সমাধানের পথ হতে পারে, মন্ত্রক তা তুলে ধরতে চায়।
যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিছু দিন আগে তেলেঙ্গানা-সিদ্ধান্তের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে চাপে পড়েছিলেন, এ দিন সেই শিন্দেই বলেন, “তেলেঙ্গানার অধ্যায়টি শেষ হয়ে যায়নি। কিন্তু এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের কোনও সময়সীমা নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.