হাতুড়ে ‘ডাক্তার’ খুঁজছেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান! একটা নয়, তিনটে।
প্রোফাইলে জরুরি কী? গায়ে-গতরে জোর। অসম্ভব সাহসী। টেকনিক্যালি অসাধারণ না হলেও ‘রোগ’ সারানোর টোটকা জানে। কেন না শুধু ফুটবল বিজ্ঞান দিয়ে যে ওডাফা-টোলগে ‘ভাইরাস’ তাঁর রক্ষণ আটকাতে পারবে না, তা ডার্বির চব্বিশ ঘণ্টা আগেই টের পেয়ে গেলেন ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচ।
মোহনবাগানের মতো লাল-হলুদ শিবিরেও বাক-নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এ দিন থেকে। মর্গ্যান স্বয়ং এড়িয়ে গেলেন সংবাদমাধ্যমকে। বললেন, “যা বলার শুক্রবারই বলব।” কিন্তু ওডাফা-টোলগে জুটি যে প্রথমবার খেলতে নামছে আপনার দলের বিরুদ্ধে? প্রকাশ্যে মর্গ্যানের যুক্তি, “বিপক্ষ নিয়ে আগেও ভাবিনি। এখনও ভাবছি না।”
লাল-হলুদের বহিরঙ্গে যাই থাকুক না কেন, অন্দরমহলের রক্তচাপ ঢেকে রাখতে পারছেন না কেউই। |
ডার্বির উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার মর্গ্যান। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস |
বৃহস্পতিবারের অনুশীলনে ওডাফা-টোলগে জুটির ‘অ্যান্টিডোট’ খুঁজতেই বেশিক্ষণ সময় কাটিয়ে দিলেন মর্গ্যান। খোঁজার চেষ্টা চালালেন দলের সেরা অস্ত্রের। ডিফেন্সিভ সংগঠনকে উলটে পালটে দেখা হল। ওপারা-অর্ণব জুটি জোড়া স্টপারের ভূমিকায় নিশ্চিত হয়ে গেলেও, দুই সাইডব্যাক নিয়ে এখনও দ্বিধায় সাহেব কোচ। লেফট ব্যাকে সৌমিক না রবার্ট? রাইট ব্যাকে হরমনজিৎ সিংহ খাবরা না নওবা? অনুশীলন দেখে অবশ্য যা মনে হল, তাতে এগিয়ে সৌমিক এবং খাবরাই। ঘন ঘন আলোচনা চলছে দলের সিনিয়র ফুটবলারদের সঙ্গে। উদ্দেশ্য একটাই। বাগানের দুই স্ট্রাইকারকে যে অকেজো করতেই হবে!
ওডাফার জন্য ‘ডাবল ট্র্যাপ’ বানাচ্ছেন মর্গ্যান। টোলগের জন্য রাখছেন ‘পুলিশম্যান’। কীভাবে? শরীরকে খুব ভাল ব্যবহার করতে পারেন ওডাফা। চকিত টার্নিং এবং নিখুঁত নিশানা হল তাঁর বড় শক্তি। শনিবারের ম্যাচে তাই মাঝমাঠেই নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারকে আটকে ফেলার ছক কষছেন মর্গ্যান। ওডাফা বল ধরলেই ডিফেন্সিভ স্ক্রিনে মেহতাব পিছন থেকে ট্যাকল করবেন, সামনে থেকে অর্ণব। আর একেবারে নীচে ‘ফ্রি’ প্লেয়ার হিসেবে থাকবেন ওপারা। অর্ণবের নাছোড়ভাব এবং ‘পাওয়ার’ ফুটবলকে মাথায় রেখেই ওডাফার জন্য এই বঙ্গসন্তানকে রাখা হচ্ছে। কেন না ফাঁকা জায়গা বেশি পছন্দ ওপারার। টোলগের ‘ডাক্তার’ রাখা হচ্ছে খাবরাকে। অস্ট্রেলিয়ান স্ট্রাইকার সাইড থেকে বল ধরে ভিতরে পেনিট্রেট করতে বেশি পছন্দ করেন। খাবরার কাজ হল, টোলগের সাপ্লাই লাইন বন্ধ করে দৌড় থামানো।
শনিবারের ম্যাচে দু’টো ‘ফ্রি’ প্লেয়ার রাখছেন মর্গ্যান। ডিপ ডিফেন্সে ওপারা। উইথড্রল ফরোয়ার্ডে পেন। চিডির সাপ্লাই লাইন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি মাঝমাঠের ‘জেনারেল’-ও পেন। বাগানের রক্ষণফাঁদ তছনছ করবেন ইসফাক-লালরিন্দিকা জুটি।
মর্গ্যানের ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরি। এখন দেখার, হাল সিটির প্রাক্তন ডেভলপমেন্ট কোচের স্ট্র্যাটেজি পরীক্ষায় পাস করতে পারে কিনা! |