ফাঁসির দাবিতে পথে শিশুরাও
জামাত নিষিদ্ধ হতে পারে, ইঙ্গিত বাংলাদেশের মন্ত্রীর
ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারের অবস্থান বিক্ষোভের তৃতীয় দিনেও একই উদ্দীপনা। কাদের মোল্লা-সহ একাত্তরের গণহত্যার নায়কদের ফাঁসির দাবিতে হাজার হাজার মানুষ আজও রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান দিয়েছেন। তিন দিন ধরে এক নাগাড়ে চলছে প্রতিবাদী গান, নাটক, সিনেমা। এর মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছেন, সন্ত্রাসের রাজনীতির প্রবক্তা, একাত্তরে দেশের স্বাধীনতার সক্রিয় বিরোধিতা করা জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বামপন্থী নেতা ইনু বলেন, সরকার এ জন্য নির্বাচনী আইন খতিয়ে দেখছে। মৌলবাদী শক্তি জামাতে ইসলামির সঙ্গে গাঁটছড়া ভাঙার জন্য বিএনপি-র প্রতিও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
কায়রোর তাহরির স্কোয়ারের তকমা পাওয়া ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারের মঞ্চ থেকে শুক্রবার মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই সমাবেশে যোগ দিতে বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। এর ফলে এ দিন বিকেল থেকেই এই চত্বর জনসমুদ্রের রূপ নিয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর, রাজশাহি, সিলেট-সহ সর্বত্র একই ভাবে অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। জামাতের ডাকা দু’দিন হরতালের বন্ধ থাকার পরে আজই ঢাকার স্কুল-কলেজগুলি খুলেছে। কিন্তু সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে শাহবাগ স্কোয়ারে ভিড় জমান। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পাশাপাশি বহু শিশু-কিশোরকেও দেখা যায় বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ‘রাজাকারদের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিতে। ঢাকার অলি-গলিতে আজ শিশু-কিশোরদের মিছিলও নজর কেড়েছে। লেখক-কবি, শিল্পী, অভিনেতা, নাট্যব্যক্তিত্বদের পরে আজ প্রাক্তন ফুটবলার ও ক্রিকেটাররাও সমাবেশে এসে সংহতি জানিয়ে যান। আজও সারারাত গানে-স্লোগানে সরগরম থাকছে শাহবাগ স্কোয়ার।
জামাতে ইসলামির এক প্রথম সারির নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথায় স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁদের নেতাদের ফাঁসির দাবিতে এমন জনজোয়ারের বিষয়টি তাঁরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি। এর ফলে এক দিকে যেমন তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, তেমনই দেশ জুড়ে বড়সড় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই নেতার মতে, স্বতঃস্ফূর্ত এই বিক্ষোভের হাওয়া সরকারের পালে লাগাতে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা-শহিদ দিবসের আগেই জামাতের আর এক শীর্ষ নেতা দেলোয়ার হোসেন সাইদিকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
জামাত নেতার আশঙ্কা, আর তা হলেই দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সইদির বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে রায় দেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই রায় পিছিয়ে দেওয়ার জন্য জামাত দেশজুড়ে আরও হাঙ্গামা করতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন ওই নেতা। ইতিমধ্যেই শনিবার চট্টগ্রামে ফের হরতালের ডাক দিয়েছে জামাতে ইসলামি।
আওয়ামি লিগের বহু নেতাকে সমাবেশে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করতে দেখা গেলেও বিএনপি-র নেতারা অদৃশ্য। বিএনপি-র এক শীর্ষ নেতা, আগের আমলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও একাত্তরে গণহত্যার জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। প্রথম দিকে বিএনপি-র সভা থেকে বিচার বাতিলের দাবি করা হলেও, এখন তারা সেই দাবি থেকে সরে এসেছে। তবে মৌলবাদী জামাতে ইসলামির সঙ্গে জোট ছাড়ার বিষয়ে এখনও কোনও ঘোষণা তারা করেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.