দিল্লির কলেজে যাচ্ছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী
মোদীকে ফায়দা তুলতে দিতে নারাজ টিম রাহুল
ওঁরা শুধু জেনেছেন, ৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রীরাম কলেজের এক সম্মেলনে বক্তৃতা দিতে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু দু’টি প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং গুজরাতের উন্নয়ন মডেল কী ভাবে গোটা দেশে প্রয়োগ করা যায়। স্রেফ এইটুকু জেনেই হঠাৎ যেন রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছে টিম রাহুল গাঁধীর।
সঙ্গত এই উদ্বেগ। কারণ, গত আট বছর ধরে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা করে এই যুব সম্প্রদায়কেই কাছে টানার চেষ্টা চালাচ্ছেন গাঁধী পরিবারের নবীন প্রজন্ম। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে মোদী সেই ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাতে চাইছেন বলে মনে করছেন তরুণ কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের আশঙ্কা, উন্নয়ন-মন্ত্র আওড়ানোর পাশাপাশি একাধিক সাম্প্রতিক ঘটনার কথা বলে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যুব সম্প্রদায়ের ক্ষোভ উস্কে দিতে পারেন মোদী। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় মোদীকে মোকাবিলার কৌশল ঠিক করতে কংগ্রেস সহ-সভাপতির ‘ডানহাত’ বলে পরিচিত নেতা জিতেন্দ্র সিংহের সঙ্গে টিম রাহুলের বাকি সদস্যদের এক প্রস্ত বৈঠক হয়েছে।
মোদীর প্রস্তাবিত ওই সভা রাজনৈতিক ভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর উত্তরণ নিয়ে জল্পনা যখন তুঙ্গে, তখন গুজরাতে ভোটের পর এই প্রথম রাজ্যের বাইরে সভা করছেন মোদী। তা-ও কি না কলেজে!
উন্নয়ন মডেলের পাশাপাশি মোদীর দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও গুজরাত বিধানসভা ভোটে নবীন প্রজন্মের ভোট টেনেছিল। দিল্লিতে সাম্প্রতিক গণধর্ষণের প্রতিবাদে কলেজ ছাত্রদেরই একটা বড় অংশকে রাস্তায় নামতে দেখা গিয়েছিল। বিজেপি নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, এই নবীনদের মন জয় করা মোদীরও লক্ষ্য। বিশেষ সূত্রে শোনা যাচ্ছে, দিল্লির সভার আয়োজক অরুণ জেটলি, বিজয় গোয়েলের মতো বিজেপি নেতারা, যাঁরা শ্রীরাম কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র।
রাহুল-ঘনিষ্ঠ এক নেতা অবশ্য বলছেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদীকে জমি ছাড়ার কোনও প্রশ্ন নেই। সহ-সভাপতির গুরুদায়িত্ব সামলালেও রাহুলেরই নেতৃত্বে যুব কংগ্রেস কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে প্রচার চালাবে। কেউ পারতপক্ষে মোদীর নাম করবে না। নাম না করেই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রচার চলবে। তুলে আনা হবে গোধরা ও গুজরাত দাঙ্গার প্রসঙ্গ।
এর পাশাপাশি, যুব সম্প্রদায়ের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকার কী কী পদক্ষেপ করছে, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সভা ও কর্মশালা করে তা জানাবেন ছাত্র-যুব নেতারা। বিদেশি লগ্নি টানা তথা আর্থিক সংস্কারের মাধ্যমে সরকার কী ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে চাইছে, কী ভাবে দুর্নীতি দমনে লোকপাল বিল পাশ করাতে চাইছে, সামাজিক বৈষম্য দূর করতে ছাত্রদের হাতে নগদ বৃত্তির টাকা পৌঁছে দিতে চাইছে, তা প্রচার করা হবে। আর সেই সঙ্গে বোঝানো হবে, এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই কী ভাবে আপত্তি তুলেছে বিজেপি।
তাৎপযপূর্ণ হল, কংগ্রেস নেতৃত্ব কোনও ভাবেই প্রকাশ্যে স্বীকার করতে চান না যে আগামী লোকসভা ভোট হবে মূলত রাহুল বনাম মোদী। কিন্তু তলে তলে মোদীকে মোকাবিলার সমস্ত প্রস্তুতিই তাঁরা রাখতে চান। দু’জনের কাউকেই দল এখনও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেনি। কিন্তু এই দুই নেতাই যে দুই শিবিরের সেনাপতি হবেন, তা নিয়েও কোনও রহস্য নেই।
এমনকী মহাকুম্ভের জন্য রাহুল ও মোদীর ইলাহাবাদ সফরের সম্ভাবনা ঘিরেও তুল্যমূল্য আলোচনা চলছে। কে বলতে পারে, হয়তো ৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে মোদীর সভা থেকেই কার্যত পুরোদস্তুর শুরু হয়ে যাবে সেই দ্বৈরথ!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.