ভিজে উইকেটে টস হারাটাই শেষ করে দিল
মাঠ ছেড়ে যখন বেরিয়ে যাচ্ছি, সচিন এসে আমায় বলল, ‘স্যর, আপনার টিম কিন্তু গোটা মরসুমটা দারুণ খেলেছে। ওয়েল ডান।’
ওয়াংখেড়ে ছেড়ে টিম বাসে ওঠার সময় মনে হল, ফাইনালটায় ব্যর্থ হলাম ঠিকই, কিন্তু খালি হাতে তো আর ফিরছি না। ট্রফি না পাই, প্রাপ্তির ঝুলি কিন্তু একেবারে শূন্য হল না।
যদিও যে প্রশ্নটা এখন আমাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে, তা হল, ফাইনালটায় আমরা এত খারাপ খেললাম কেন? কেন আড়াই দিনের মধ্যে ইনিংসে হারতে হল মুম্বইয়ের কাছে? দেখুন, এখন যা-ই বলি না কেন, পুরোটাই অজুহাতের মতো শোনাবে। অজুহাত দিচ্ছি না। তবু ফাইনালে নিয়ে কয়েকটা কথা বলতে চাই।
প্রথম দিন সকালে যখন ওয়াংখেড়ের পিচ দেখি, চমকে উঠেছিলাম। একটা দিক বেশ ভিজে। অন্য দিকটায় স্যাঁতস্যাঁতে ভাব রয়েছে। বুঝেছিলাম, ওই অবস্থায় টস হারলে বড় ঝামেলায় পড়ে যাব। ঠিক তাই হল। টস হারলাম। মুম্বই আমাদের ব্যাট করতে পাঠাল ওই ভিজে উইকেটে। ওই এন্ডটায় বল লাফিয়েছে, মুভ করেছে। ব্যাটিং করাটা সত্যি খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। অন্য দিকটাতেও টাফ ছিল, কিন্তু অতটা নয়। কিন্তু যা ক্ষতি করার মুম্বই বোলাররা ওই ভিজে এন্ড থেকে করে দিয়ে গেল। প্রথম দিনে একবার দেড়শোর কমে আউট হয়ে গেলে মুম্বইয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে ফিরে আসা সত্যিই কঠিন।
ট্রফি নিয়ে মুম্বই অধিনায়ক আগরকরের সঙ্গে সচিন। ছবি: পিটিআই।
আমরা চেয়েছিলাম, যদি মুম্বইয়ের লিডটা ১০০-১২০-র মধ্যে রেখে দেওয়া যায়। তা হলে আমাদের ম্যাচে ফেরার একটা সুযোগ থাকত। দ্বিতীয় দিন সকালেও বল মুভ করেছে। কিন্তু ওয়াসিম জাফরের সেঞ্চুরিটা আমাদের প্ল্যান বি-টাও মাটি করে দিল। মুম্বই একবার দুশোর উপর রানে লিড নেওয়ার পরে ম্যাচটা আমাদের হাত থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা এ দিন মুম্বই ইনিংসের পর নিজেদের মধ্যে টিম মিটিংয়ে বলেছিলাম, অন্তত তিনশো রানের চ্যালেঞ্জ না দিলে মুম্বইকে চাপে ফেলা যাবে না। কিন্তু সেটা করতে গেলে আবার খুব দ্রুত রান তুলতে হত। সত্যি কথাটা হল, প্রথম ইনিংসে যেখানে ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে যায়, সেখানে দুশো রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নামলে প্রায় অলৌকিকের উপর ভরসা করা ছাড়া উপায় থাকে না।
তার উপর আরও একটা ব্যাপার দেখুন। আমাদের টিমটার গড় বয়স মোটামুটি ২৫। আর অভিজ্ঞতার বয়স বোধহয় আরও কম। চেতেশ্বর পূজারা, রবীন্দ্র জাডেজা নেই। বাকি ব্যাটিংটা সত্যিই একেবারে আনকোরা। ফাইনালে খেলার চাপ, দুশো রানে পিছিয়ে থাকার চাপ সব মিলিয়ে ওরা জেরবার হয়ে গেল। আমাদের ব্যাটসম্যানদের আউটগুলো দেখে মনে হল, মনঃসংযোগটা একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
অনেকেই বলছেন, এই টিমে পূজারা-রবীন্দ্র জাডেজা থাকলে ম্যাচ অন্য রকম হত। আমি ও সব বলব না। ক্রিকেট একটা বলের খেলা। কে থাকলে কী হত, বলা যায় না। এই তো সবাই সচিন-সচিন করছিল, কিন্তু ও ২২ করে রান আউট হয়ে গেল। আর জাফর সেঞ্চুরি করে দিল।
যা-ই হোক। শুরুতে যে কথা বলছিলাম। আমি কিন্তু যন্ত্রণা নিয়ে ফিরছি না। আমি সৌরাষ্ট্রকে ওয়ান ডে চ্যাম্পিয়ন করেছি, টিমকে প্রথমবার রঞ্জি ফাইনালে তুললাম। গোটা মরসুমটা ছেলেরা ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে এসেছে। পরিশ্রমের ফল আমি পেয়ে গিয়েছি।
আরও একটা কথা। ফাইনালে খেলার অভিজ্ঞতা আমার দলের তরুণ ক্রিকেটারদের পরের মরসুমে অনেক সাহায্য করবে। চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে কী করতে হয়, সেটা ওরা খুব কাছ থেকে দেখে নিল। পরের মরসুমের রসদটা কিন্তু আমি এই ফাইনাল থেকেই তুলে নিলাম।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.