চলতি অর্থবর্ষের শেষ ছ’মাসে ভর্তুকির ৩টি এলপিজি সিলিন্ডারের কোটা শেষ করে বাজার দরে (৯২৫ টাকা) যাঁরা এর মধ্যেই আরও সিলিন্ডার কিনেছেন, তাঁরা কোনও টাকাই আর ফেরত পাবেন না। ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম ও ভারত পেট্রোলিয়াম, তিনটি সংস্থাই শুক্রবার জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তেল মন্ত্রকের এটাই নির্দেশ। প্রসঙ্গত, এর আগে কেন্দ্র চলতি অর্থবর্ষে ভর্তুকি মূল্যে ৩টি সিলিন্ডার দেওয়ার কথা জানায়। বৃহস্পতিবারই তা বাড়িয়ে ৫ করা হয়।
বিভ্রান্তির শুরু এখানেই। গ্রাহকদের প্রশ্ন, যাঁরা ইতিমধ্যেই ওই বাজার দরে সিলিন্ডার কিনেছেন, কেন তাঁরা সেই বাড়তি টাকা ফেরত পাবেন না?
উল্লেখ্য, গত বছর কেন্দ্র জানিয়েছিল, এ বার থেকে একটি অর্থবর্ষে পরিবার পিছু ৬টি ভর্তুকির সিলিন্ডার মিলবে। তবে চলতি অর্থবর্ষে গত অক্টোবর থেকে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে মিলবে ৩টি। বৃহস্পতিবার নয়া সিদ্ধান্তে কেন্দ্র জানায়, একটি আর্থিক বছরে ভর্তুকি সিলিন্ডারের সংখ্যা বেড়ে হচ্ছে ৯টি। তবে এ বার ৩টির পাশাপাশি আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে আরও ২টি ভর্তুকি সিলিন্ডার পাবেন গ্রাহকেরা। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই নয়া সিদ্ধান্ত কাযর্কর হয়েছে।
নয়া নিয়মে বিভ্রান্ত গ্রাহকদের প্রশ্ন, যাঁরা সম্প্রতি গ্যাস বুক করেছেন, কিন্তু এখনও হাতে পাননি, তাঁদের সিলিন্ডার নেওয়ার সময়ে কত টাকা দিতে হবে? সে ক্ষেত্রে অবশ্য তেল সংস্থাগুলি জানিয়েছে, তাঁরাও এখন আগে ৪১২.৫০ টাকায় ভর্তুকির বাড়তি ২টি সিলিন্ডারই পাবেন। সেই মতো এখন ডিস্ট্রিবিউটরদের ভর্তুকির দামেই সিলিন্ডার বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপর আরও সিলিন্ডার লাগলে বাজার দরেই (এখনকার হিসেবে যা প্রায় ৯৭১ টাকা) কিনতে হবে।
কিন্তু যাঁরা গ্যাস বুক করলেও এখনও সিলিন্ডার হাতে পাননি, তাঁদের বুকিং কি বাতিল হবে? তাঁদের কি নতুন করে বুক করতে হবে? সে ক্ষেত্রে গ্রাহককেই উদ্যোগী হতে হবে নাকি ডিস্ট্রিবিউটররা ব্যবস্থা করবেন, তা স্পষ্ট নয়। গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, ইতিমধ্যে বুকিং বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। অল ইন্ডিয়া ডিস্ট্রিবিউটর্স ফেডারেশনের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক বিজনবিহারী বিশ্বাসের পরামর্শ, এ রকম ঘটলে গ্রাহকেরা যেন ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
যদিও তেল সংস্থাগুলির দাবি, এমন ঘটনা ঘটার কথা নয়। গ্রাহককে যাতে কোনও রকম সমস্যায় পড়তে না-হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা। দু’একদিনের মধ্যেই তা কার্যকর হবে, আশা তাদের। নয়া নিয়মের জেরে অনেকেরই আশঙ্কা গ্যাস পেতে দেরি হবে। অবশ্য তেল সংস্থাগুলির দাবি, তা অমূলক।
সংস্থাগুলির আরও দাবি, ভর্তুকির সিলিন্ডারের সংখ্যা বাড়তে পারে, এই আশায় ছিলেন অনেকে। তাই এর মধ্যে গ্যাস বুক করার পরে তাঁদের বাড়িতে সিলিন্ডার পাঠানো হলেও কেউ কেউ তা নিতে চাননি। ফলে তাঁদের বুকিং সাধারণ নিয়মেই বাতিল হয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে গ্রাহকদের নিজেদেরই ফের বুকিং করতে হবে। তবে নতুন নিয়মের জন্য কারও বুকিং এখনও বাতিল হয়নি।
বিভ্রান্তি রয়েছে ডিস্ট্রিবিউটরদের মধ্যেও। তাঁদের বক্তব্য, অনেক ডিস্ট্রিবিউটরই তেল সংস্থাগুলির কাছ থেকে বাড়তি দামে সিলিন্ডার কিনেছেন। সেগুলি এখন যদি ভর্তুকির দামে বিক্রি করতে হয়, তা হলে তাঁদের লোকসান হবে। সে নিয়েও কোনও স্পষ্ট দিশা এ দিন পর্যন্ত মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের। |