মোটেও সব কিছু প্রফুল্ল নয়
ড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান। এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলের বিরুদ্ধে এ ভাবেই জেহাদ ঘোষণা করল ইস্টবেঙ্গল।
লাল-হলুদ সচিব কল্যাণ মজুমদারকে শোকজের চিঠি পাঠানোর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের পাল্টা আক্রমণ, “প্রফুল্ল পটেল যদি সব সিদ্ধান্ত একাই নেবেন, তা হলে আমাদের প্রয়োজন কী? ওঁকে যাঁরা সভাপতি করেছেন তাঁরা একবার ভেবে দেখুন। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। সময় দিতে না পারলেও, সব বিষয়ে নজর রাখতেন। কিন্তু প্রফুল্ল পটেলকে তো পাওয়াই যায় না। চিঠির পর চিঠি পাঠিয়েও কোনও উত্তর নেই। চার বছর ধরে জাতীয় লিগে অ্যাপিয়ারেন্স ফি পাচ্ছি না। ফেড কাপ জিতেও টাকা পাইনি। আই লিগে ম্যাচ পরিচালনা করার টাকাও বাকি। যত দিন যাচ্ছে ফুটবলের পরিকাঠামো আরও গাড্ডায় যাচ্ছে। কিন্তু এ সব ব্যাপারে নজর দেওয়ার সময় নেই তাঁর। আমার মতে উনি না পারলে সরে যাওয়া উচিত। লোকের অভাব নেই।”
ফেডারেশন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোহনবাগান সভাপতি টুটু বসুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিয়েও জোর সওয়াল করেছে ইস্টবেঙ্গল। দেবব্রতবাবুর কথায়, “মোহনবাগানের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ হোক, সেটা আমরা কখনওই চাইনি। কিন্তু এত আদর দিলে তো বখে যাবে। উনি যা করলেন তাতে তো মনে হচ্ছে, নতুন নিয়ম চালু হল। অপরাধ করো, মার্জনা আছে। এক সংবাদমাধ্যমে মোহনবাগানের সহ-সচিব বলেছেন, প্রফুল্ল পটেল তাঁর বাবার ২৫ বছরের বন্ধু। এবং দু’জনেই দেশের শীর্ষস্থানীয় আয়করদাতা। এই কথাটার মানে কী, আমরা পরিষ্কার করে জানতে চাই।”
মোহনবাগানের শাস্তি পুরোপুরি মকুব হয়ে যাক, সেটা আই লিগের কোনও ক্লাবই চায়নি। তা হলে কেন শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবকে ছেড়ে দেওয়া হল তার যথাযথ ব্যাখা ফেডারেশনের কাছে চাইবে ইস্টবেঙ্গল। দেবব্রতবাবু বললেন, “মোহনবাগানের জায়গায় অন্য কেউ হলেও একই প্রশ্ন করতাম। ২২ (সি) ধারায় শাস্তি দেওয়া হলে কোন ধারায় ছেড়ে দেওয়া হল আমরা জানতে চাই। আর ফেডারেশন যদি উপযুক্ত জবাব দিতে না পারে আমরা আইনের আশ্রয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। সময় দিতে না পারলেও, সব বিষয়ে নজর
রাখতেন। কিন্তু প্রফুল্ল পটেলকে তো পাওয়াই যায় না। যত দিন যাচ্ছে ফুটবলের পরিকাঠামো
গাড্ডায় যাচ্ছে। আমার মতে উনি না পারলে সরে যাওয়া উচিত। লোকের অভাব নেই।
দেবব্রত সরকার
মোহনবাগানের সম্পূর্ণরূপে শাস্তিমুক্তি হয়ে যাওয়ার বিষয়টা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না ইস্টবেঙ্গল। বরং ফেডারেশনের এই খামখেয়ালিপনাকে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে বহু প্রাক্তন ফুটবলাররাও। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তার দাবি, “ঐতিহ্য, সভ্য-সমর্থক এবং আবেগকে মাথায় রেখে যদি মোহনবাগানকে ছেড়ে দেওয়া হয়, তা হলে মহমেডান কী দোষ করল? বিশ্ব জুড়ে ওদেরও তো সভ্য-সমর্থক রয়েছে। আমাদের সাফ কথা, মোহনবাগানকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হলে, প্রবেশমূল্য দিয়ে মহমেডানকেও খেলতে দিতে হবে। দরকার পড়লে আমরা ৫০ লাখ টাকা দেব। মোহনবাগানকেও সাহায্যের হাত বাড়াতে বলব। আমাদের দাবি মানা না হলে মহমেডানের সঙ্গে যে কোনও আন্দোলনে ওদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করব আমরা।”
ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের প্রভাবে পরবর্তীকালে যে বিষবর্ষণ হবে না, তার নিশ্চয়তা কিন্তু পাওয়া গেল না। উলটে ইস্টবেঙ্গলের আরও মারাত্মক হুমকি, “কল্যাণদাকে নিয়ে এত মাথা না ঘামিয়ে অন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া উচিত ফেডারেশনের। ঠিক করেই নিয়েছি, মাঠে আমার কোনও ফুটবলার লাল-কার্ড দেখলেই আমরা আবেদন করব। টাকা নাও ছেড়ে দাও। কী করব, রাস্তাটা তো ফুটবলের নিয়ামক সংস্থাই দেখিয়ে দিল।”
মোহনবাগানের শাস্তি মকুব। প্রত্যাবর্তনের হাওয়া মহমেডানে। প্রফুল্ল পটেলের যোগ্যতা? ইস্টবেঙ্গল কিন্তু এখন বৃহত্তর আন্দোলনের দিকেই এগোচ্ছে।

ফেডারেশনকে তোপ চার্চিলের
মোহনবাগানের নির্বাসন তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে ইস্টবেঙ্গল আগেই সরব হয়েছিল। ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেলদের রক্তচাপ বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার মাঠে নেমে পড়ল লিগ শীর্ষে থাকা চার্চিল ব্রাদার্স এবং দেশের অন্যতম সমর্থকপুষ্ঠ ক্লাব মহমেডান স্পোর্টিংও। চার্চিল প্রধান আলেমাও বলে দিলেন, “মোহনবাগানকে আই লিগে রেখে ফেডারেশন অন্যায় করেছে। কোর কমিটি এবং এক সদস্যের কমিশন যে শাস্তির কথা বলেছিল সেটা কোন নিয়মে উঠে গেল?” ফেডারেশনকে এ দিনই পাঠানো চিঠিতে চার্চিল কর্তৃপক্ষ লিখেছে, “কলঙ্কিত ম্যাচের পর মোহনবাগানের যে ছ’টা ম্যাচ স্থগিত রাখা হয়েছিল, সেই ম্যাচগুলোতে যারা প্রতিপক্ষ ছিল তাদের পুরো পয়েন্ট দিয়ে দেওয়া হোক। মোহনবাগান শুরু করুক সালগাওকর ম্যাচ থেকে।” ফেডারেশন অবশ্য এ দিনই আই লিগে মোহনবাগান, চার্চিল-সহ সব ক্লাবের বাকি ম্যাচের সূচি ঘোষণা করে দিয়েছে। অন্য ভাবে মহমেডানের দাবিও মোহনবাগানের নির্বাসন তোলাকে কেন্দ্র করে। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মহমেডান প্রেসিডেন্ট সুলতান আহমেদ বলেন, “মোহনবাগানের নির্বাসন তুলে নিয়ে ফেডারেশনই তো আমাদের পথ দেখিয়েছে। গোটা দেশ জুড়ে মোহনবাগানের তুলনায় অনেক বেশি সমর্থক আমাদের। মহামেডানের ঐতিহ্যও মোহনবাগানের চেয়ে কম নয়। তবে আমরা কেন আই লিগের মূল পর্বে সুযোগ পাব না? এটা তো দ্বিচারিতা।” প্রজাতন্ত্র দিবসের পরে মহমেডানের সমর্থনে রাজ্য জুড়ে সই সংগ্রহ শুরু করবেন কর্তারা। বাংলার বাইরেও বড় শহরগুলোতে সই সংগ্রহ হবে। আই লিগের অন্য দলগুলোর সমর্থনও চাওয়া হবে। যার মধ্যে এমনকী মোহনবাগানও আছে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.