সব ভুলে মাহিতে পাগল রাঁচি
রের ছেলে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি শহরে পা দেওয়া মাত্র সব আলোচনা গিয়েছে থেমে।
রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে যে কোনও দিন।
রাজ্য রাজনীতির লাগাম কার হাতে যাবে, সেই নিয়েও থাকছে অনেক প্রশ্ন।
বুধবার দুপুর পর্যন্ত এখানকার নিউজ চ্যানেলগুলোর আলোচনায় সিংহভাগ ছিল রাজ্য রাজনীতিই। কিন্তু তার পর থেকেই ছবিটা একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে। কারণ? দলবল নিয়ে যে গতকালই পৌঁছে গিয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, রাঁচির প্রিয় মাহি।
ঘরের ছেলেকে ঘরের মাঠে এই প্রথম খেলতে দেখবে রাঁচির মানুষ। উন্মাদনা তাই মাত্রা ছাড়িয়েছে। তবে শুধু রাঁচি নয়। কড্রু ডাইভারশনের ঝাঁ চকচকে টিম হোটেলের সামনে যাঁরা সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই তো এসেছেন কোডারমা, লোহারডাগা, বা হাজারিবাগের মতো দূরের জেলাগুলো থেকে।
রাঁচিতে ধোনি-ধামাকা। বাদ যাচ্ছে না পুলিশও। ছবি:পিটিআই
আর রাঁচির তরুণ প্রজন্ম তো রাত থেকেই কার্যত রাস্তায়। প্রথমে বিমানবন্দরে, তার পর হরমুতে ধোনির বাড়ির সামনে। আজ সকালে আবার এখানকার নবনির্মিত স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি গেটের সামনে জনজোয়ার। অপেক্ষা, কখন ধোনি আসবেন তাঁর টিম নিয়ে। ধোনি এলেন, টিম ইন্ডিয়া এল। কিন্তু ভক্তদের হতাশই হতে হল। কালো কাচ ঢাকা বাসে করে টিম ঢুকে গেল স্টেডিয়ামের মধ্যে। স্বপ্নের নায়কদের তাই দেখা হল না কাছ থেকে। ধোনি মাঠে গেলেন, পিচ দেখলেন। ফুটবল খেললেন। রবীন্দ্র জাডেজার ব্যাটিং স্টান্স একটু বদলে দিলেন। তবে সবই হল ভক্তদের চোখের আড়ালে।
শনিবার ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে রাঁচি এখন ডুবে আছে ক্রিকেটে। এ রকম কিছু হতে পারে ভেবেই সম্ভবত কয়েক দিন আগে ধোনি স্বয়ং বলেছিলেন, “আমি দুশো ভাগ আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছি রাঁচির ম্যাচটার দিকে।” ধোনি মনে করছেন, এ রকম একটা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম পাওয়া মানে ক্রিকেট দুনিয়ার ম্যাপে রাঁচির জায়গা করে নেওয়া। “আমি যখন প্রথম খেলতে আসি, তখন কোন শহর থেকে এসেছি, সেটা অনেককেই বোঝাতে পারতাম না। এখন একটা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম হয়ে যাওয়া মানে লোকে সহজেই রাঁচিকে চিনে ফেলবে।”
ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এই পুরো অভিজ্ঞতাটাই ঝাড়খণ্ডের রাজধানীর মানুষের কাছে অভিনব। সামনে থেকে খেলোয়াড়দের দেখতে পাওয়াটা নতুন। ঘরের ছেলে ধোনিকে চোখের সামনে মাঠে খেলতে দেখাটা নতুন। লাইন দিয়ে স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানোটা নতুন। আবার টিকিট না পেয়ে হা পিত্যেশ করাটাও নতুন।
এরই মধ্যে ধোনির প্রথম কোচ চঞ্চল ভট্টাচার্য প্রার্থনা করে চলেছেন, ঘরের মাঠে যেন চাপের শিকার না হন ধোনি। “প্রথম বার ঘরের মাঠে খেলছে। অবশ্যই ধোনির উপর একটা চাপ থাকবে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, এই চাপটা সামলে দেবে মাহি।”
উন্মাদনা টিকিটের লাইনেও। ছবি: প্রশান্ত মিত্র
এই বিশ্বাসটা শুধু তো এক জনের নয়। সকালে ধোনির আদি বাড়ি শ্যামলী কলোনিতে গিয়ে দেখা গেল মেকন স্টেডিয়ামের সামনে কয়েক জন প্রবীণের জটলা। যাঁদের এক জন সূরয সিংহ বলছিলেন, “আপনাদের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ট্র্যাক রেকর্ডও তো ইডেনে সে রকম ভাল নয়। তা হলে? আমরা পাকিস্তান সিরিজের কথা ভুলে গিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, ধোনির নেতৃত্বে ভারত এখানে ম্যাচ জিতবেই।”
এই বিশ্বাস, এই প্রাপ্তিই এখন যেন রাঁচির মানুষের অক্সিজেন। টিম হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে দুপুরে তাই তো বছর পঁয়ষট্টির, রাজ্য শ্রম দফতরের এক অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ বলতে পারেন, “এ রাজ্যে কেউ একটা স্থায়ী সরকার গড়তে পারল না। ক্রিকেট বোর্ড তো তাও একটা স্টেডিয়াম গড়েছে। অনেক দিন পরে এখানে এমন একটা কিছু হল যার মধ্যে দিয়ে আমরা মুক্ত বাতাস পাব।”
ইংল্যান্ডকে একটা ম্যাচে হারালেও এই মুক্ত বাতাসটা কিন্তু ধোনির দলেরও দরকার। দেখার, নিজের শহর থেকে সেই রসদ তিনি শনিবার তুলে নিতে পারেন কি না।

টিকিট পায়নি ধোনির পরিবারই
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নিজের মহল্লায় ম্যাচ, আর তাঁর পরিবারই কি না টিকিট পায়নি! আশ্চর্য হলেও এমন অভিযোগ উঠে পড়ল রাঁচির ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে। যেখানে ভারত অধিনায়কের দাদা নরেন্দ্র ধোনি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, তাঁদের হাতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ম্যাচের কোনও টিকিট এসে পৌঁছয়নি। “আমাদের হাতে এখনও ম্যাচের টিকিট পৌঁছয়নি। শুধু জানতে পারলাম, ঝাড়খন্ড ক্রিকেট সংস্থা থেকে আমার শ্যালককে চোদ্দোটা কমপ্লিমেন্টারি টিকিট দেওয়া হয়েছে,” বলেছেন নরেন্দ্র। নরেন্দ্রর আরও অভিযোগ, দেড় হাজার টাকার টিকিট কাটতে তাঁর স্ত্রীকে লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, রাঁচির নতুন স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে তাঁরাও যে আছেন, সেটা প্রচারমাধ্যমের কাছে না বলে তাঁদের পরিবারকে অপমান করা হয়েছে বলে মনে করছেন নরেন্দ্র।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.