বন্ধ চা বাগানের দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী শ্রমিকদের সংখ্যার গরমিলে ফি বছর সস্তায় চাল সরবরাহ খাতে রাজ্য সরকারের ৩০ কোটি টাকা বাড়তি খরচের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিলেন খাদ্য সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মঙ্গলবার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর জেলা কোচবিহারে এক সদস্যের তদন্ত কমিশন গঠনের কথা জানান জ্যোতিপ্রিয়বাবু। এওই ব্যাপারে প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম জড়ালে তাঁকেও তদন্ত কমিশনের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়ে দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলার চারটি বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য ২০০৪ সাল থেকে দু’টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে। আগের সরকারের আমলে মোট ৯১ হাজার শ্রমিককে চাল দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের কাছে আসা তথ্য বলছে, ওই চারটি বাগানে শ্রমিক আছেন ১৭ হাজার। বাকি চাল এত দিন কোথায় গেছে তা তদন্ত করে দেখতে ফুড কমিশনারের নেতৃত্বে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে।” ওই দুই জেলার বন্ধ চা বাগানগুলির মধ্যে ঢেকলাপাড়া, কাঞ্চনভিউ, রিংটোন ও দলমোড় চা বাগান রয়েছে। বাম আমলে ওই চা বাগানগুলির জন্য ৯১ হাজার শ্রমিককে চাল সরবরাহ শুরু হয়। নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে সমীক্ষা করে উত্তরবঙ্গের বন্ধ চা বাগানগুলিতে ১৭ হাজার শ্রমিক রয়েছেন বলে জানতে পারেন। এহিসেব করে দফতরের আধিকারিকরা নিশ্চিত হন সংখ্যার ওই বিপুল হেরফেরের চাল সরবরাহ করতে ফি মাসে রাজ্য সরকারের প্রায় আড়াই কোটি টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, “বাড়তি চাল সরবরাহ করতে হচ্ছে বলে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। কম চাল পাঠালেই চেঁচামেচি হবে। তাই শ্রমিক সংখ্যা নিয়ে তথ্য পেলেও তা বন্ধ করা যাচ্ছে না।” রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী তথা কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারী অবশ্য ওই বিষয়টিকে আমল দিতে চাননি। পরেশবাবু বলেন, “এমন তদন্তের কথা আগেও শুনেছি। সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি না দিয়ে দুর্নীতি প্রমাণ করে সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বাহবা নিক। প্রয়োজনে আমি যে কোন কমিশনের মুখোমুখি হতেও রাজি।” |