নিজেদের দাবি আদায়ে বিহারের চার হাজার সরকারি চিকিৎসক আজ থেকে দু’দিনের ধর্মঘটে নেমেছেন। এর ফলে রাজ্যের ৬টি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ৫৩৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৭০টি রেফারেল হাসপাতাল এবং ৩৮টি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। যদিও আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে চিকিৎসা পরিষেবা ধর্মঘট থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
বিহার হেলথ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার বলেন, “সরকার আমাদের দাবি না মানায় বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের পথে যেতে হয়েছে। তাতে যদি সরকারের টনক না নড়ে তা হলে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা ধর্মঘটের পথে যাব।” তবে সরকারের তরফে জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়ে ছ’টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আউটডোর এবং এমার্জেন্সি বিভাগ চালু রাখা হয়েছে। যদিও চিকিৎসকের সংখ্যা খুবই কম। ফলে চাপও যথেষ্ট। অন্য দিকে, জেলা হাসপাতাল থেকে রেফারেল এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা কার্যত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হেলথ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে আইএমএ। এ দিনের ধর্মঘটে ১৫০০ চুক্তি ভিত্তিক ডাক্তার রয়েছেন। বাকিরা স্থায়ী সরকারি চিকিৎসক।
চিকিৎসকদের মূল দাবির মধ্যে আছে, চুক্তি ভিত্তিক চিকিৎসকদের স্থায়ী করতে হবে। স্থায়ী চিকিৎসকদের কেন্দ্রীয় সরকারি হারে বেতন দিতে হবে। জীবনদায়ী ওষুধ সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত রাখতে হবে এবং চিকিৎসকদের জন্য হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের চাকরির জন্য লিখিতের বদলে মৌখিক পরীক্ষা ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়েছে।
ধর্মঘটের প্রসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার চিকিৎসকদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু তাঁরা যদি ধর্মঘটের পথ থেকে সরে না আসেন তবে সরকার তা ঘোষণা করবে না। যদিও কাল অ্যাসেসিয়েশনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সমস্যার সুরাহা করতে পারেননি।
স্বাস্থ্য দফতরের প্রধানসচিব ভিইয়েস বলেন, “চুক্তি ভিত্তিক চিকিৎসকদের নিয়মিত করতে হলে পদ্ধতি মেনে করতে হবে। হঠাৎ করে এই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে এই নিয়োগ করতে হবে। মাঝ পথে কিছু করা যাবে না।”
তবে ধর্মঘটীদের বক্তব্য, সরকার তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তারা আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসবেন। এই দাবি দীর্ঘদিনের। সরকার এতদিন তা উপেক্ষা করেছে। দু’পক্ষের এই অনড় মনোভাবের বলি রাজ্যের সাধারণ মানুষ। |