অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন এক সময়ের অন্যতম শীর্ষ মাওবাদী নেতা গুরুচরণ কিস্কু ওরফে মার্শাল। তিনি শ্বাসকষ্ট ও সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে। রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। আইজি (কারা) রণবীর কুমার জানিয়েছেন, মার্শাল ঝাড়গ্রাম জেলে বন্দি ছিলেন। অসুস্থ বোধ করায় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের তত্ত্বাবধানে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরিবারকে মার্শালের মৃত্যুসংবাদ জানানো হয়েছে।
বান্দোয়ানের ওসি নীলমাধব দাস হত্যা, সিপিএম নেতা রবীন্দ্রনাথ কর ও তাঁর স্ত্রীকে খুন, দুয়ারসিনিতে অতিথি নিবাসে বিস্ফোরণ-সহ পুরুলিয়ায় ছ’টি মামলা মার্শালের বিরুদ্ধে থাকলেও প্রতিটিতেই জামিন হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী সাগর মণ্ডল। কিন্তু জামিনদার না মেলায় তাঁর মুক্তি হয়নি। সবেচেয়ে বেশি, ১৪টি মামলা ছিল ঝাড়গ্রামে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বছর পঁয়তাল্লিশের মার্শালের আসল নাম হেমাল মান্ডি। বান্দোয়ানের আসনপানি গ্রামের এই যুবক ১৯৯৫ সালে জনযুদ্ধে যোগ দেন। ২০০৪-এর সেপ্টেম্বরে জনযুদ্ধ এবং এমসিসি মিশে তৈরি হয় সিপিআই (মাওবাদী)। এর পর বেলপাহাড়ি এলাকায় মাওবাদীদের প্লাটুনের সক্রিয় সদস্য হন মার্শাল। তাত্ত্বিক নেতা হিসাবেই পরিচিত মার্শালের হাত ধরেই সুদীপ চোংদার ওরফে কাঞ্চন বা জাগরী বাস্কের মতো এ রাজ্যের প্রথম সারির মাওবাদী নেতানেত্রীর উত্থান।
২০০৯ সালের শেষ থেকে আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে নিহত মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজির সঙ্গে মার্শালের বিরোধের সূচনা। দল তাঁকে বহিষ্কার করে।
পরে পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ওড়িশায় বিক্ষুব্ধদের নিয়ে আলাদা দল গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। এ রাজ্যের পুলিশও মার্শালকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করা শুরু করে।
পরবর্তী কালে মাওবাদীদের হাতে প্রাণসংশয় হওয়ায় মার্শালকে গ্রেফতার করতে হয়। পুরুলিয়া জেল থেকে তাঁকে গত বছর সেপ্টেম্বরে ঝাড়গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। |