নুরুল আবসার • উদয়নারায়ণপুর |
দেদার বিকোচ্ছে কাঁকড়া আর আলুর দম!
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের সিংটিতে ‘ভাই খাঁ পিরের মেলা’র এটাই বিশেষত্ব। ফি-বছর মাঘ মাসের প্রথম দিনে এই মেলা হয়। লাখো মানুষের সমাগম হয়। অধিকাংশই ভিড় করেন কাঁকড়া আর আলুর দম বিক্রেতাদের সামনে। মঙ্গলবারও দেখা গেল সেই একই ছবি।
এক দিনের এই মেলা প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো বলে জানালেন গ্রামবাসীরা। মেলা প্রাঙ্গণের অদূরেই ভাই খাঁ পিরের মাজার। মাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত খাঁ পরিবারের লোকজনের দাবি, আরব থেকে এসেছিলেন ভাই খা।ঁ স্থানীয় মানুষের ভাল-মন্দের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। ৩০ পৌষ তাঁর মৃত্যু হয়। ১ মাঘ হয় শেষকৃত্য। ওই দিন ভক্তরা আসেন শেষকৃত্যে সামিল হতে। তা শেষ পর্যন্ত মেলায় রূপান্তরিত হয়। |
কাঁকড়ার বিক্রি। ছবি: সুব্রত জানা। |
মাজারের সামনে রয়েছে পিরের পুকুর। মেলার দিন দুপুর ১২টায় মাজার থেকে গাঁদা ফুল এনে পুকুরে ভাসিয়ে দেন খাঁ পরিবারের সদস্যরা। মেলাপ্রাঙ্গণ বলতে ফাঁকা জমি। সেখানেই বসে পড়েন ব্যাপারীরা। কিন্তু ভিড় থিক থিক করতে দেখা গেল কাঁকড়ার ব্যাপারীদের কাছে। মাপ অনুযায়ী দাম ৩০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা জোড়া। তা-ও বিকিয়েছে দেদার। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্যানিং থেকে কাঁকড়া এনেছেন। গরমাগরম আলুর দম অবশ্য প্লেট হিসেবে নয়, বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। দর্শনার্থীরা মেলায় ঘোরার ফাঁকে মুড়ি আর আলুর দম কিনে খাচ্ছেন তৃপ্তির সঙ্গে।
কেন কাঁকড়া? এর কোনও নির্দিষ্ট উত্তর মেলেনি। খাঁ পরিবারের প্রবীণতম সদস্য সিরাজ আলি খাঁ বলেন, “এলাকাটি হিন্দুপ্রধান। তাঁদের দিকে লক্ষ্য রেখেই হয়তো মেলায় কাঁকড়া বিক্রি শুরু হয়।”
মেলার মূল সুরটা সম্প্রীতির। ভাই খাঁ পিরের মাজারে রয়েছে তাঁর দুই শিষ্যের মাজারও। সইফ আলি খাঁ এবং গোপাল খা। প্রথম জন মুসলিম। অন্য জন হিন্দু। ভক্তেরা তিন জনের মাজারেই সিন্নি চড়ান। |