|
|
|
|
কেমব্রিজ থেকে এল ইউনিয়ন জ্যাক |
রাজীবাক্ষ রক্ষিত • গুয়াহাটি |
স্বাধীনতার দিন, ১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট শেষ বার কোহিমা জেলাশাসকের দফতরে উড়েছিল ব্রিটিশ পতাকা। সে দিন সন্ধ্যায় সেই ইউনিয়ন জ্যাক নেমেছিল। পরের দিন ওই স্ট্যান্ডে উঠেছিল স্বাধীন ভারতের তেরঙা পতাকাটি। সে দিনের সেই ইউনিয়ন জ্যাক এখন শতচ্ছিন্ন। সম্প্রতি বিলেত ঘুরে ফের কোহিমায় ফিরল ইউনিয়ন জ্যাকটি, সংগ্রহশালার নিদর্শ হিসেবে।
স্বাধীন ভারতের কোহিমায় তেরঙা ওড়াবার পরে, ইংরেজ শাসনের শেষ প্রতীকটি অবহেলায় কোথার রাখা হয়েছিল কারও খেয়ালই ছিল না। তখন ব্রিটিশ জেলাশাসকের অফিসের করণিক ছিলেন হোনসাও কাইকোন। স্বাধীনতার পরে একই দফতরে ভারত সরকারের কর্মী হিসেবে কাজ করতে থাকেন তিনি। স্বাধীনতার কয়েক বছর পরে, দফতরের অন্যান্য পরিত্যক্ত সামগ্রীর মধ্যে ওই পতাকাটিও খুঁজে পান তিনি। যে পতাকা নামাবার জন্য বহু নাগা-ভারতীয়ের রক্ত বয়েছে, প্রাণ গিয়েছে সেই ইউনিয়ান জ্যাকটি নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিলেন তিনি। হোনসাওয়ের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের কাছে ছিল পতাকাটি। ১১ বছর আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক, লিলি দাস ও কেমব্রিজের অধ্যাপক অ্যালান ম্যাকফারলেন কোহিমা সফরে এসেছিলেন। ভারতে ব্রিটিশ শাসন নিয়ে গবেষণা করছিলেন তাঁরা। সে সময় কাইকোন পরিবারের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়। কাইকোন পরিবারই ইউনিয়ান জ্যাকটি তাঁদের হাতে তুলে দেয়। সেই থেকে পতাকাটি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় রাখা ছিল।
লিলি জানান, নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে পতাকাটি নাগাল্যান্ডে ফেরত আনতে অনুরোধ করেন। ভারতীয় ইতিহাসের অংশ হিসেবে, পতাকাটি ফেরত পাঠাতে তিনি উদ্যোগী হন। সহায়তা করে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও।
রবিবার কোহিমায়, ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম ঐতিহাসিক চিহ্ন হিসেবে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী রিওর হাতে সাত দশকেরও বেশি পুরনো সেই ইউনিয়ন জ্যাকটি তুলে দেন লিলি। পতাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন হোনসাও কাইকোনের স্ত্রী চুপনি কাইকোনও। পতাকার সঙ্গেই নাগাল্যান্ডের শেষ তিন কমিশনারের রাঁধুনি, ওপানসাও কাইথানের পাগড়িটিও ইংল্যান্ড থেকে নিয়ে আসে হয়েছে। পতাকা ফেরত আনার জন্য লিলিদেবীকে ধন্যবাদ দিয়ে রিও জানান, নিদর্শনগুলি কিসামার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংগ্রহশালায় রাখা হবে। |
|
|
|
|
|