তপসিয়া, তিলজলা, কড়েয়া ও বেনিয়াপুকুরের পরে একবালপুর। আবার শিশুচোর সন্দেহে গণপিটুনি মহিলাকে। আবার গণপ্রহার থেকে মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে জনতার হাতে আক্রান্ত পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে একবালপুরের রজাব আলি লেনে এক সময় পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, থানার ওসি-সহ সাত-আট জন পুলিশকর্মী ঘোর বিপদে পড়ে যান। হাজার পাঁচেক লোক তখন তাঁদের ঘিরে ধরেছে, চলছে বোমাবাজি ও ইটবৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত লালবাজার থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ)-এর ৫০ জন-সহ বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, লাঠি চালায়। ইটের আঘাতে দুই পুলিশকর্মী জখম হন। গভীর রাত পর্যন্ত বিশাল বাহিনী নিয়ে এক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও এক জন যুগ্ম কমিশনার এলাকায় ছিলেন। মহিলাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাতে ভবঘুরে চেহারার ওই মহিলাকে দেখামাত্র এলাকায় রটে যায়, ছেলেধরা ঢুকেছে। এক দল লোক তাঁকে ধরে আটকে রেখে মারধর করছিল। স্থানীয় থানার এক সার্জেন্ট দেখতে পেয়ে মহিলাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। ওসি-ও পৌঁছে যান কিছু পুলিশকর্মী নিয়ে। মহিলাকে কোনও ক্রমে উদ্ধার করে একটি ঘরে ঢুকিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু তার পরেই পুলিশকে ঘিরে ধরে বিশাল জনতা।
গত দু’মাসে তপসিয়া, তিলজলা, কড়েয়া, বেনিয়াপুকুর এলাকায় শিশুচোর সন্দেহে একের পর এক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। জনরোষে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে শিশুচোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার রাতে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম মহম্মদ ফিরোজ। তার বাড়ি গ্যাস স্ট্রিটে। দিন পাঁচেক আগে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে শিশুচোর সন্দেহে মহম্মদ আলতামাস নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করে ক্ষিপ্ত জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। |