সরকারি স্বাস্থ্য শিবিরে ভুল চিকিৎসায় এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলিয়াবেড়ায়। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে রবিবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে স্থানীয় কুলিয়ানা গ্রামের বছর তেরোর প্রণব বারিক। তাঁর বাবা রঞ্জিতবাবু জানান, গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে রান্টুয়া হাইস্কুলে একটি ডেঙ্গি ও কুষ্ঠ সচেতনতা সংক্রান্ত শিবির ও ক্যুইজ প্রতিযোগিতা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক চিকিৎসক প্রণবের ডান পায়ের একটি দাগ দেখে কুষ্ঠ হয়েছে বলে চিহ্নিত করেন। পরে তপসিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক কুষ্ঠের প্রতিষেধক দিলে তা খেয়ে প্রণব অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। প্রবল জ্বর ও মাথার যন্ত্রণার পাশাপাশি, প্রণবের ঠোঁট কালো হয়ে যায়। সারা শরীরে র্যাশ বেরোয়। এরপর গত তিন মাস ধরে মেদিনীপুর হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম, ভূবনেশ্বরসরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে প্রণবের। শেষমেশ আর্থিক ভাবে নিঃস্ব রঞ্জিতবাবু ডিসেম্বরের গোড়ায় প্রণবকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
গত ৫ জানুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) সবিতেন্দ্র পাত্রকে লিখিত অভিযোগ করে রঞ্জিতবাবু জানান, দুই চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় জন্যই তাঁর ছেলে মৃত্যুপথযাত্রী। রঞ্জিতবাবুর বক্তব্য, “এরপরই গত ৯ জানুয়ারি ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুদীপ কাঁড়ার নিজে কুলিয়ানা গ্রামে গিয়ে প্রণবকে এসএসকেএম-এ ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করেন।” গত রবিবার ওই হাসপাতালেই প্রণবের মৃত্যু হয়। কান্নায় ভেঙে পড়ে রঞ্জিতবাবু বলেন, “যথাসর্বস্ব বিক্রি করে নিঃস্ব হয়েও ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। সরকারি চিকিৎসকদের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতাই পেলাম না।”
কুলিয়ানা পঞ্চায়েতের প্রধান তথা তৃণমূলের বেলিয়াবেড়া ব্লক সভাপতি স্বপন পাত্র বলেন, “রঞ্জিতবাবুর ছেলের চিকিৎসার জন্য আমিও সাধ্যমতো সাহায্য করেছিলাম। কিন্তু কিছু করার ছিল না। শুরুতেই প্রণবের ভুল চিকিৎসা হয়েছিল বলে শুনেছি। বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে দেখা উচিত।” |