আন্ত্রিক ছড়াতে শুরু করেছে পুরুলিয়া শহরে। ইতিমধ্যেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ৭০ জন ভর্তি হয়েছেন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, পানীয় জলের দূষণ থেকেই লাগোয়া কয়েকটি ওয়ার্ডে এই রোগ ছড়িয়েছে।
শনিবার বিকেলের পর থেকেই শহরের নামোপাড়া, রথতলা, ভাগাবাঁধ পাড়া, রামপদ কলোনি, নাপিতপাড়া থেকে কয়েক জন রোগী আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। রবিবার রাত থেকে পরের পর রোগী আসতে শুরু করেন। সকলেরই এক উপসর্গ পেটে যন্ত্রণা, বমি ও পায়খানা। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে এলাকার একটি গার্লস স্কুলের ছাত্রীনিবাসের আবাসিকেরাও। চার ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি। সোমবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ বেডেই দু’জন করে আক্রান্ত শুয়ে। অনেককে মেঝেতেও ভর্তি হতে হয়েছে। দশম শ্রেণির ছাত্রী, জয়পুরের বড়টাঁড় গ্রামের বাসিন্দা সঙ্গীতা মাহাতো এবং অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী, কেন্দার কোণাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাধবী মাহাতো বলল, “কলে যে জল আসে, সেই জলই খেয়েছিলাম। প্রথমে পেটে অস্বস্তি, পরে যন্ত্রণা, সঙ্গে বমি ও পায়খান।” সঙ্গীতার মা অঞ্জলিদেবীর কথায়, “হস্টেল থেকে বাড়িতে ফোন করে আমাদের জানানো হয়েছিল। খবর পেয়েই ছুটে এসেছি।”
পুরুলিয়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হরিশ আনসারি, শেখ মুস্তাকেরা ভর্তি হয়েছেন শনিবার রাতে। তাঁরাও বাড়িতে কলের জলই খেয়েছিলেন। সোমবার ভোরে ভর্তি হয়েছে ওই ওয়ার্ডেরই বছর বারোর কুসুম। তার বাবা দিলীপ বর্মা বলেন, “রাত থেকেই মেয়ের বমি পায়খানা শুরু হয়েছিল। বাধ্য হয়ে এ দিন ভোরে ভর্তি করেছি।” আক্রান্তদের বেশির ভাগেরই অভিযোগ, পানীয় জল থেকেই এই রোগ ছড়িয়েছে। হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে দূষিত পানীয় জল থেকেই এই রোগ ছড়িয়েছে। বিষয়টি পুরসভার গোচরেও আনা হয়েছে।” পুরুলিয়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেস কাউন্সিলর বিভাসরঞ্জন দাসের বক্তব্য, “পুরপ্রধান এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। কেননা পুরসভাই পানীয় জল সরবরাহের বিষয়টি দেখভাল করে। যে যে এলাকায় রোগ ছড়িয়েছে, সেখানে পুরসভার সঠিক নজরদারি না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট।” পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “জল সরবরাহের উৎসে কোনও সমস্যা নেই। কেন এ রকম ঘটনা ঘটল, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” |