ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন ময়নাগুড়ি কলেজের ছাত্র ও শিক্ষকরা। সোমবার সকালে ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ হয়। পরে প্রতিবাদে ক্লাস বয়কট করে শিক্ষক ও ছাত্ররা মুখে কালো কাপড় বেঁধে মিছিল করেন। এনসিসি এবং এনএসএসের ছাত্রছাত্রীরা ওই মিছিল করেন। পরে ধৃত যুবকের কড়া শাস্তির দাবিতে ময়নাগুড়ি থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এ দিকে যে ছোট গাড়িতে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে সেই গাড়ির চালককে এখনও পুলিশ গ্রেফতার না করায় শিক্ষক ও ছাত্র মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দাবি উঠেছে দ্রুত ওই ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করার।
গত শনিবার কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। গ্রেফতার করা হয় এক ময়নাগুড়ির মাধবডাঙা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আশ্রমপাড়ার বাসিন্দা ৩৫ বছরের এক বিবাহিত যুবককে। অভিযোগ, পিন্টু রায় পরিচয় দিয়ে সে গত ৯ জানুয়ারি ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে প্রধাননগরে নিয়ে যায়। সেখানে এক বাড়িতে দু’দিন আটক রেখে ধর্ষণ করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্ত যুবক নাম ভাঁড়িয়ে ছাত্রীটির সঙ্গে প্রথমে ভাব জমায়। প্রেমের প্রস্তাব দেয়। কলেজে যাওয়ার সময় রাস্তায় একা পেয়ে ছাত্রীকে বেড়াতে যাওয়ার নাম করে ভাড়া গাড়িতে প্রধাননগরে নিয়ে যায়। কলেজের ছাত্র শিক্ষকরা মনে করেন, অভিযুক্ত যুবক পরিচিত গাড়ি ভাড়া করে থাকবে। কারণ, অচেনা হলে চালকের সন্দেহ হত। সে ফিরে এসে নিজেই পুলিশ অথবা কলেজে ঘটনার কথা জানাত। কিন্তু তা হয়নি। উল্টে ঘটনার পরে উধাও হয়েছে চালক। ময়নাগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন,“চালককে না ধরা পর্যন্ত অনেক কিছু আড়ালে থেকে যাচ্ছে। গাড়িতে আরও কেউ ছিল কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা জরুরি। কলেজের পক্ষ থেকে দ্রুত চালককে গ্রেফতারের দাবি জানানো হবে।” ছাত্র সংসদের তরফে সোমবার থানায় স্মারকলিপি দিয়ে একই দাবি জানানো হয়েছে। সংসদের সাধারণ সম্পাদক অলোক রায় বলেন, “ছাত্রী স্বেচ্ছায় গাড়িতে উঠেছে নাকি তাঁকে হুমকি দিয়ে তোলা হয়েছে সেটা চালককে গ্রেফতার না-করা পর্যন্ত জানা সম্ভব নয়।” সেই সঙ্গে এ দিন ছাত্র শিক্ষকরা ছাত্রীর দ্রুত মেডিক্যাল পরীক্ষার দাবিও জানান। কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার বলেন, “যতটা দ্রুত সম্ভব ছাত্রীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো জরুরি।”
জেলা পুলিশ কর্তারা কলেজ শিক্ষক ও ছাত্রদের দাবি অস্বীকার করেননি। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “গাড়ির ও চালকের খোঁজ চলছে। ছাত্রী মানসিক দিক থেকে একটু সুস্থ হলেই মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” |