নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পরীক্ষার আনুমানিক সময় নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমনকী তার ফলপ্রকাশের দিনও মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছে উচ্চশিক্ষা সংসদ। কিন্তু পরীক্ষার পদ্ধতি কী হবে, তা নিয়ে এখন সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত চাইছে তারা! এবং এখনও নিশ্চিত নয়, প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ওই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আদৌ মানবে কি না। মানলেও কতখানি মানবে।
এই টানাপোড়েন রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তির অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে। এই পরীক্ষার ব্যাপারে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছিল সংসদ। তারা সোমবার জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ জুনের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে ২৫ জুনের মধ্যে ফলপ্রকাশের সুপারিশ করেছে ওই কমিটি।
সংসদ ওয়েবসাইটে ওই পরীক্ষার যে-রূপরেখা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫০% গুরুত্ব প্রবেশিকার। বাখি ৫০ শতাংশের মধ্যে ৪০% গুরুত্ব পাবে স্নাতকের নম্বর এবং ১০% গুরুত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রবেশিকা বা মৌখিক পরীক্ষার। কিন্তু কলকাতা, যাদবপুর-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগই এখন ভর্তির জন্য কোনও পরীক্ষা নেয় না। তা হলে কি স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে অভিন্ন প্রবেশিকার পরে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় বসতে হবে?
সোমবার পর্যন্ত এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি সংসদ-কর্তারা। সংশ্লিষ্ট মহলের মতামত জানার আগে এই বিষয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে রাজি নয় সংসদ। তা হলে পরীক্ষার সময় বা ফলপ্রকাশের সম্ভাব্য সময় ঘোষণা করা হল কেন? এর জবাবও এড়িয়ে গিয়েছেন সংসদ-কর্তারা। তবে তাঁরা জানান, ওই পরীক্ষায় মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে, সময় দু’ঘণ্টা। সবই মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন। ঠিক উত্তরে মিলবে চার, ভুল হলে এক নম্বর কাটা ইত্যাদি।
যাদবপুর ও প্রেসিডেন্সির পড়ুয়ারা ইতিমধ্যেই অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন। বিশেষ করে আপত্তি তুলেছে যাদবপুরের ১৯টি বিভাগ। একটি বিভাগ আলাদা ধরনের কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। এ ভাবে ভর্তিতে সায় নেই সেখানকার শিক্ষক সংগঠনেরও। তারা মনে করে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র আলাদা। সকলকে এ ভাবে এক নিক্তিতে ওজন করা ঠিক নয়। তা ছাড়া এর জেরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সুসংহত পাঠ্যক্রম বজায় রাখা বা নতুন করে চালু করা কোনও দিনই সম্ভব হবে না। ভাল পড়ুয়া পাওয়াও কঠিন হবে।
উচ্চশিক্ষা সংসদের তৈরি প্রবেশিকার রূপরেখা পুরোপুরি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মালবিকা সরকার। তাঁর কথায়, “প্রেসিডেন্সিতে পড়াশোনার ধরন আলাদা। প্রবেশিকার রূপরেখা কতটা প্রয়োগ করা যাবে,
তা দেখতে হবে।” স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, প্রেসিডেন্সি বা যাদবপুর যদি না-মানে, তা হলে উচ্চশিক্ষা সংসদ বা রাজ্য সরকার কি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অভিন্ন প্রবেশিকায় বাধ্য করতে পারে?
২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন উচ্চশিক্ষা দফতরের কর্তারা। তার আগে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না। |