রাজ্যপালের কথায় টনক নড়েনি, অভিযোগ সূর্যের
প্রকাশ্য মঞ্চে রাজ্যপালের সঙ্গে নৈকট্য দেখিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত-পর্বে ইতি টানার বার্তা দিতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সৌজন্যের আড়ালে প্রশাসনিক কতর্ব্য চাপা পড়ে গেল কেন, প্রশ্ন তুলে সরকারের উপরে চাপ বাড়াতে চাইলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর প্রশ্ন, প্রবীণ বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা এবং তার দু’দিন পরে ভাঙড়ে সিপিএম সমর্থকদের উপরে হামলার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হল না কেন? রাজ্যপালের হুঁশিয়ারির পরেও জাঙ্গিপাড়া বা হলদিয়ায় আক্রমণই বা কী ভাবে অব্যাহত?
বিধানসভার ফটকের বাইরে বিরোধী দলনেতা সোমবার বলেন, “রাজ্যপালকে যিনি হলুদ কার্ড দেখিয়েছিলেন, তাঁকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে শুনেছি। জানি না, গড়াপেটা খেলা কি না! কিন্তু হামলায় যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তিনি বলেছেন দল ও সরকার তাঁর পক্ষে আছে! মন্ত্রীরা ওখানে গিয়ে সভা করে বা মহাকরণে কী বলেছিলেন, আমরা জানি। বিবেকানন্দের নামে যুব উৎসব থেকে সরকার কি বার্তা দিতে চায়, যুব সমাজের কাছে এটাই (আরাবুল-কাণ্ড) অনুকরণীয় আদর্শ?” ভাঙড়ের পরেও যে ভাবে রাজ্যের নানা এলাকায় বিরোধীদের উপরে আক্রমণ চলছে, তা নিয়েও সরব হয়েছেন সূর্যবাবু। ‘বেঙ্গল লিডস’-এর মঞ্চ যেখানে তৈরি হচ্ছে, সেই হলদিয়াতেই শিল্পের দাবিতে ডিওয়াইএফআইয়ের সমাবেশ-মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। জাঙ্গিপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে হামলা এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্য ও হুগলি জেলা সম্পাদক সুদর্শন রায়চৌধুরীর গাড়ি ভাঙচুরের পরেও তৃণমূল-আশ্রিত এক দুষ্কৃতী কী ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, প্রশ্ন সূর্যবাবুর। তাঁর কথায়, “যে গুন্ডারাজের কথা রাজ্যপাল বলেছেন, তাতে টনক নড়েছে মনে হচ্ছে না!”
বিধানসভার বাইরে সাংবাদিক সম্মেলনে সূর্যকান্ত মিশ্র।—নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি রাজ্যের সিদ্ধান্ত হয়েছে, আইএএস ও আইপিএস অফিসারদের ‘অ্যানুয়াল কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্টে’ (এসিআর) চূড়ান্ত মূল্যায়ন করবেন মুখ্যমন্ত্রীই। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, “উনিই শেষ কথা বলবেন! ডিএম, এসপি-দের আনুগত্য অন্য কাউকে দিতে নারাজ! পুলিশ-প্রশাসনে সন্ত্রাস তৈরি হচ্ছে, যাতে কেউ নিরপেক্ষ কাজ না করতে পারে। সবই গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক।”
বিবেকানন্দের সার্ধ-শতবর্ষে যুব উৎসব নিয়েও বিতর্ক অব্যাহত। সরকারি অনুষ্ঠানে স্বামীজিকে কেন ‘বিবেক’ বলা হচ্ছে, তা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণকেই চিঠি দিয়েছেন সূর্যবাবু। তিনি এ দিন বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকেও মা-মাটি-মানুষের রাজনৈতিক স্লোগানের শপথ পাঠ করিয়েছেন! আর বিবেকানন্দকে কেউ ছোট করে বিবেক বানাতে পারে, এটা আমাদের সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের প্রতি অপমানজনক। রবীন্দ্রনাথকে রবি ঠাকুর বলা হত, সেটা অন্য বিষয়। উনি নিজেও তার বিরুদ্ধে ছিলেন না। যে সব সন্ন্যাসী যুব উৎসবে গিয়েছিলেন এবং যাঁরা যাননি, সকলকেই বিবেকানন্দের নাম ছেঁটে দেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখতে বলব।” একই প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও। তাঁর বক্তব্য, “বিবেকানন্দকে বিবেক বলা যেতে পারে, ভাবা যায় না! বিবেকানন্দের নামে প্রতি বছর বেলুড় মঠ বা দক্ষিণেশ্বরে মানুষের ঢল নামে। তার জন্য টলিউড তুলে আনতে হয় না!”
প্রসঙ্গত এ দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে রেজ্জাক মোল্লাকে দেখতে যান সিপিএমের গৌতম দেব। অদূর ভবিষ্যতে দলের কর্মসূচিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হলে তাঁকে দ্রুত সুস্থ হতে হবে এবং তার জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ শুনতে হবে, রেজ্জাককে এই কথাই বলেন গৌতমবাবু।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.