মকর সংক্রান্তির ভোরে টুসুর চৌডল ভাসানোর মধ্য দিয়ে টুসু উৎসবে মেতে উঠল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। সোমবার ভোর থেকেই দুই জেলার অনেক জায়গায় এই উপলক্ষে মেলা বসে। টুসুর চৌডল বিসর্জনের পরে মেলায় মাতোয়ারা হন তরুণ-তরুণী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে এ দিন ভোর থেকেই কংসাবতী, কুমারী, শিলাবতী, দ্বারকেশ্বর, জয়পন্ডা, গন্ধেশ্বরী ও শালি নদীর ঘাটে ঘাটে টুসুর চৌডল ভাসিয়ে পুণ্যস্নানে নেমে পড়েন এলাকার মানুষ। |
কংসাবতীর তীরে খাতড়ার পরকুলে, কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া রানিবাঁধের পরেশনাথ মন্দিরে এ দিন মেলা বসে। শিলাবতী নদী তীরবর্তী সিমলাপালের আনন্দপুরে এ দিন থেকেই শুরু হয়েছে গঙ্গামেলা। দিন সাতেক মেলা চলবে। বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী নদীতে, তালড্যাংরার জয়পন্ডা নদীর ঘাটে, বড়জোড়া, সোনামুখী, পাত্রসায়রের শালি নদীতে এ দিন ভোর থেকেই স্নান সারতে নেমে পড়েন বহু মানুষ। মেলার পাশাপাশি নদীর তীরে চড়ুইভাতির আসর বসে বেশ কিছু এলাকায়। বছর দুয়েক আগেও মাওবাদী আতঙ্কে কিছুটা হলেও টুসু পরব জৌলুস হারিয়েছিল দক্ষিণ বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে। গত বছর থেকেই অবশ্য ছবিটা বদলে গিয়েছে। |
এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পরকুলে মেলা দেখতে আসা বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের শিক্ষক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়, বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা প্রবীর ঘোষরা বললেন, “কংসাবতীতে মকর স্নান করে নদীর ধারে পিকনিক করলাম। মেলাও দেখলাম এখানে এসে। একই সঙ্গে মকরস্নান, পিকনিক ও মেলাসব কিছুর মজা উপভোগ করলাম। সারাটা দিন আমাদের হইহুল্লোড় করে কেটে গেল।”
টুসু ভাসান উপলক্ষে পুরুলিয়ায় সবথেকে বড় জমায়েত হয় ঝালদা ও ঝাড়খণ্ডের সীমানায় সুবর্ণরেখা নদীর দুই পাড়ে। মেলা বসে জয়পুরের দেউলঘাটায়, রঘুনাথপুর থানার চেলিয়ামা গ্রামের কাছে দামোদরের পাড়ে। এ ছাড়াও মানবাজার ও বরাবাজার থানার সীমানায় কুমারী নদীর দুয়ারসিনি ঘাটে, পুঞ্চায় শিলাবতী নদীর পাড়ে দু’দিনের মেলা বসে। সাঁতুড়ির সীমানায় মাইথন জলাধারকে ঘিরেও বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। বান্দোয়ানে টটকো নদীর পাড় বরাবর টুসু ভাসান উপলক্ষে একাধিক মেলা হয়। |