একশো দিনের কাজ করেও পাঁচ মাসেও মেলেনি মজুরি। পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন করেও লাভ না হওয়ায় বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন শ্রমিকরা।
কাশীপুর থানার বেকো পঞ্চায়েতের ঘটনা। শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরাও প্রশাসনিক স্তরে শ্রমিকদের সত্ত্বর মজুরি দেওয়ার আবেদন করেছেন। কাশীপুরের বিডিও তপন ঘোষাল শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
স্থানীয় ও পঞ্চায়েত সূত্রে জানা হিয়েছে, প্রায় পাঁচ মাস আগে বেকো গ্রামে সিপিএমের দলীয় কার্যালয় থেকে বটতলা পর্যন্ত রাস্তায় মোরাম ফেলার কাজ হয় ১০০ দিনের প্রকল্পে। ওই কাজের দায়িত্বে ছিল স্থানীয় পঞ্চায়েত। কাজ করেছিলেন প্রায় ২৫ জন শ্রমিক। সকলেই বেকো গ্রামের বাসিন্দা। শ্রমিকদের মধ্যে গনেশ কৈবর্ত, সঞ্জয় কৈবর্ত, মন্টু কৈবর্ত, রোহিত কৈবর্তরা বলেন, “কাজ শেষ করার পরে মজুরি বাবদ অল্প কিছু টাকা দিয়েছিল পঞ্চায়েত। কিন্তু মজুরির বেশির ভাগ টাকাই এখনও এখনও মেলেনি।” তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত অফিসে মজুরি চাইতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখান থেকে জানান হয়, তহবিল শেষ। তাই এখন টাকা দেওয়া যাবে না। তাঁদের ক্ষোভ, অথচ এই প্রকল্পের নিয়ম হল, কাজ শেষ করার ১৫ দিনের মধ্যে মজুরি দিতে হবে। বাধ্য হয়ে বিডিও-র কাছে তাঁর এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। একই অভিযোগ করেছেন যুব তৃণমূলের কাশীপুর ব্লক সভাপতি হামিদ আনসারি। তাঁর অভিযোগ, “পঞ্চায়েত ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের নিয়ম মেনে ১৫ দিনের মধ্যে মজুরী দেয়নি। অথচ ওই কাজের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহকারীকে তাঁর প্রাপ্য টাকা দিয়েছে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ।” তিনি জানান, তাঁরা সংগঠনগত ভাবে পুরো ঘটনাটি বিডিওকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বিডিও বলেন, “ওই শ্রমিকদের মজুরি না পাওয়ার ঘটনা আমি শুনেছি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের তহবিল শেষ হয়ে যাওয়ায় মজুরি দেওয়া যায়নি। কিন্তু এখন টাকা এসেছে। কাজেই এখন মজুরি দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” তিনি জানান, এখনও পঞ্চায়েত কেন মজুরি দেয়নি, খোঁজ নিয়ে দেখছেন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানানো হয়েছে, ২০১১-২০১২ অর্থবর্ষে প্রথমে ওই রাস্তা নির্মাণে কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করায় কাজটি স্থগিত হয়ে যায়। পরে ২০১২-২০১৩ অর্থবর্ষে ফের কাজটি ধরা হয়। কিন্তু কাজের পরিমাণ এক থাকলেও বরাদ্দ অর্থ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়। বেকো পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান কল্যান মল্লিক বলেন “প্রথমে ওই রাস্তা নির্মাণের কাজ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর নির্দেশে বন্ধ করতে হয়েছিল। পরে আবার কাজটি শুরু করলেও বরাদ্দ অর্থ কমে যায়। তাই শ্রমিকদের মজুরি দিতে সমস্যা হয়।” তিনি জানান, শীঘ্রই শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। |