সফর অনিশ্চিত তবু সেজে আছে হরিণঘাটা
ফাঁকা মাঠ। ন্যাড়া মঞ্চ। কালো কালিতে মহিলা, পুরুষ লেখা কাগজগুলো ঝুলছে বাঁশের খুঁটিতে, শৌচাগার। পাশে নারকেল দড়িতে ভেজা গামছা, জামা, গেঞ্জি।
ভিআইপিদের বসার জায়গায় সবুজ ঘাসে রোদে মেলা লেপ, কম্বল, শীতের খান কতক পোশাক। দুই অফিসার-সহ ১৪ জন পুলিশ কর্মীর অস্থায়ী ঠিকানা। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে হরিণঘাটা খামারের মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সফর বাতিল হওয়ার পরেও ওঁদের ঠিকানা বদলায়নি। দিন কয়েক পরে সেখানে যে ফের আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। কবে? না কেউ জানেন না। শুধু পুলিশকর্মীরাই নন, রাত জেগে মঞ্চ বেঁধেছিলেন যাঁরা সেই ডেকোরেটরের এগারো জন কর্মীও ফাঁকা মাঠে প্লাস্টিকের তাঁবুর পাশে রোদ্দুর খোঁজার চেষ্টা করছেন। ‘সিএম’ ডিউটি বলে কথা।
অপেক্ষায় হরিণঘাটা। —নিজস্ব চিত্র।
গত ৭ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর জনসভার জন্য নদিয়ার হরিণঘাটায় জাতীয় সড়কের ধারে মাঠে বিশাল মঞ্চ বাঁধা হয়েছিল। সাধারণের বসার জায়গায় শাল খুঁটি, বাঁশ দিয়ে অসংখ্য ব্যারিকেড। ফাঁকা মাঠ সেজে আছে নিরাপত্তায়। নিরাপত্তা প্রশ্ন থাকায় স্থানীয় নয় ডাক পড়েছিল খোদ কালীঘাটের ‘নির্ভরযোগ্য’ ডেকোরেটরের। এমনই বলছেন স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। কুড়ি দিন টানা কাজ করে সভার ঠিক আগের দিন মঞ্চ তৈরির কাজ সবে যখন শেষ হয়েছে, তখনই খবর আসে মুখ্যমন্ত্রীর শরীর খারাপ। আপাতত আসছেন না। সভা বাতিল। তবে মোতায়েন থাকে পুলিশ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই খরচ হয়েছে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। নীল-সাদা কাপড়ে ঢাকা শুধু মঞ্চ তৈরিতেই খরচ পড়েছে ১২ লক্ষ। ডেকোরেটরের খরচ ছাড়াও সভার কিছু দিন আগে থেকেই পুলিশ ও অন্যান্য আধিকারিকদের থাকার জন্য স্থানীয় হোটেল ও লজ বুক করে রাখা হয়েছিল। জেলা পরিবহণ দফতরের খবর, সিএম-ভিজিট’র জায়গাটা সরেজমিন দেখার জন্য গত কয়েকদিনে গাড়ির পিছনেই খরচ হয়েছে প্রায় সোয়া লক্ষ টাকা। এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘যে টাকার তেল পুড়ল, তাতে এক মাসে জেলার সব থানার টহলদারি হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রী যখন আসবেন তখন ফের আরেক প্রস্থ তেল পুড়বে।’’
শুধু কি তেল, ৭ তারিখের সভার জন্য গোটা মাঠ জুড়ে বসেছিল বাতিস্তম্ভ। পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, সাত তারিখের পর সন্ধে নামলেই আঁধার মাঠ আলো করে আলো জ্বলছে। আলো নিভিয়ে রাখার উপায় নেই। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চের নিরাপত্তা বলে কথা! গোটা মাঠ জুড়ে কয়েক হাজার ওয়াটের হ্যালোজেন জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে সন্ধ্যার পর থেকেই। লোডশেডিং হলে জেনারেটরের ব্যবস্থাও আছে। হরিণঘাটার সভার উপলক্ষ্য ছিল জল প্রকল্পের সূচনা করা। প্রশাসনের একাংশের মতে, এত টাকা খরচ করে প্রস্তুতি নেওয়ার পরে পুরো অনুষ্ঠান বাতিল না করে অন্তত জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রীকে পাঠিয়েও তো কাজটা সেরে রাখা যেত। নদিয়ার জেলাশাসক অভিনব চন্দ্রা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ১৮জানুয়ারি আসতে পারেন। সেই মতো আমরা ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি।’’ কিন্তু খরচের বহরটা? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, “সব প্রশ্ন কী তোলা যায়!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.