পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই স্কুলে, ভরসা পুকুর
পানীয় জল নেই। তাই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কিছু স্কুলে এখনও ভরসা বলতে পুকুর। পুকুরের জলেই রান্না হয় মিড-ডে মিল। আবার ওই পুকুরেই ধোওয়া হয় বাসন-কোসন। কোথাও আবার পানীয় জলের সংস্থান নেই বলে মিড-ডে মিলের রান্নাই হয় না। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে আসার পরে নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ ও সর্বশিক্ষা মিশন। অবিলম্বে জলের ব্যবস্থা করার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে চিঠি পাঠিয়েছেন জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক।
স্কুলে পানীয় জলের ব্যবস্থা ও শৌচালয় থাকা বাধ্যতামূলক হলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৫০টিরও বেশি প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও এই পরিকাঠামো নেই। তালিকায় যেমন রয়েছে কাঁথি পুর এলাকার পদ্মপুকুরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেমনই গ্রামীণ এলাকার জামুয়া রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘাগোল প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহিষাগোট শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, এগরা ২ ব্লকের দুবদা বাণীপীঠ জুনিয়র হাইস্কুল-সহ আরও অনেক। এই পরিস্থিতিতে কাছাকাছি পুকুরই ভরসা ওই সব স্কুলের পড়ুয়াদের। মিড-ডে মিলের রান্নাতেও ব্যবহার করা হচ্ছে পুকুরের জল। আবার পানীয় জলের অভাবে মিড-ডে মিল চালুই করা যায়নি কাঁথি উত্তর চক্রের পঁচিশবেটিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
পুকুরের জলে মিড-ডে মিল রান্না করার কথা মেনে নিয়েছেন কাঁথি-৩ ব্লকের বহিত্রকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝাড়েশ্বর বেরা। বহিত্রকুণ্ডা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, এক দিকে ছাত্রছাত্রীরা পড়ছে আর অন্য দিকে স্থানীয় পুকুর থেকে বালতি-বালতি জল তুলে মিড-ডে মিলের রান্না করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। দুপুরে স্কুলের বারান্দায় লম্বা সারি করে বসিয়ে সেই খাবারই পরিবেশন করা হল পড়ুয়াদের। পুকুরের জলে মিড-ডে রান্না যে উচিত নয়, তা মেনে নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কথায়, “জানি পেটের অসুখ হতে পারে। কিন্তু আমাদের কিছু করারও নেই।” স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শুভম মহাপাত্র, শিলা মাইতিরা জানায়, পড়ার বই নিক বা না নিক, জলের বোতল নিতে ভোলে না তারা। কোনও কারণে ক্লাস চলকালীন তৃষ্ণা পেলে, অন্য কোনও উপায় নেই যে।
শুধু বহিত্রকুণ্ডা নয়, কুসুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই একই সমস্যা। বহিত্রকুণ্ডার পাশাপাশি যশাবিসা প্রাথমিক, ফতেপুর প্রাথমিক, বিলাসপুর প্রাথমিক, আলামপুর সেরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতেও পুকুরের জল ব্যবহার করেই মিড-ডে মিল চালানো হচ্ছে। কাঁথি-৩ ব্লকের কুসুমপুর অঞ্চল ‘নন টিউবয়েল জোন’ বলে চিহ্নিত হওয়ায় এই সমস্যা বলে জানালেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উজ্জ্বল পণ্ডা।
সঙ্কটের কথা মেনে নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “জেলায় কতগুলি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানীয় জলের সংস্থান নেই তা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে কাঁথি শহর-সহ কাঁথি-১, দেশপ্রাণ, কাঁথি-৩, নন্দীগ্রাম-২, পটাশপুর-১, এগরা-২ ব্লক এলাকায় এমন বেশ কিছু প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারি স্কুলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যেখানে পানীয় জলের কোনও সংস্থান নেই। এই সব বিদ্যালয়গুলিতে অবিলম্বে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার জন্য জনস্বাস্থ্য দফতরে বলা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.