টিম ঠিক দিকেই এগোচ্ছে: গম্ভীর
ভারতের কাছে নাকি সিরিজের প্রথম ম্যাচ
“পাঁচ নয়, সিরিজটাকে চার ম্যাচের সিরিজ হিসেবে দেখছি। যার প্রথম ম্যাচ কাল।”
“ম্যাচটাকে ০-২ হেরে যাওয়া তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ নয়, এক ম্যাচের নতুন একটা সিরিজ হিসেবে দেখতে হবে।”
দুই ব্যক্তিত্ব, দুই সময়। ক্যালেন্ডারের হিসেবে দিন দশেকের ব্যবধান। মাঝে প্রতিপক্ষ বদলেছে, টিমে বদল এসেছে, কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটে আর বদল কোথায়?
ডেথ বোলিংয়ের টোটকা? প্র্যাক্টিসে চলছে বোলিং কোচ ডসের ওয়ার্কশপ। ছবি: পিটিআই
প্রথম বক্তার নাম গৌতম গম্ভীর। দ্বিতীয় জন খোদ ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ইডেনে দিন দশেক আগে ০-২ হেরে উঠে ধোনি যা বলেছিলেন, সোমবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে প্রায় একই ‘রেকর্ড’ বাজিয়ে গেলেন গম্ভীর। সে দিনের ইডেনের চেয়ে অবশ্য এ বার কোচিতে সামান্য ভাল জায়গায় ভারত। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ম্যাচ হয়েছে মোটে একটা। বাকি আরও চারটে এবং যে কোনও দিকে যেতে পারে সিরিজ। তবু ভিন্ন সময়ে দু’জনের বক্তব্যে উঠে আসে টিম ইন্ডিয়ার মননের ছবিটা। ভারত সমর্থকদের কাছে যা মোটেও সুখের নয়।
কী সেই ছবি? না, ওয়ান ডে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের এখন এমনই অবস্থা যে, টিমের মনোবল বাঁচিয়ে রাখতে প্রত্যেকটা ম্যাচকেই আলাদা সিরিজ হিসেবে দেখতে হচ্ছে! এবং সেটাও দেখতে হচ্ছে নিজেদেরই দেশে, চেনা উইকেটে। হবে না? যে ভাবে স্তুপাকৃত সমস্যার চোরাবালিতে গলা পর্যন্ত ডুবে যাচ্ছে ধোনি-বাহিনী!
সমস্যা এক) ডেথ ওভারের দাওয়াই নেই। দিন্দা থাকলেও তাঁকে বসে থাকতে হচ্ছে।
সমস্যা দুই) বিরাট কোহলির চরম অফ ফর্ম। ওয়ান ডাউন স্লট মোটামুটি ফোকলা। শেষ পাঁচ ম্যাচে ‘নেক্সট ইন্ডিয়ান ক্যাপ্টেনের’ স্কোর যথাক্রমে ২৭, ০, ৬, ৭, ১৫!
সমস্যা তিন) ওপেনিংয়ে সহবাগ-ধুন্ধুমারের কোনও বদলি এখনও নেই, এবং ব্যাটিং বড় বেশি ধোনি-নির্ভর।
সমস্যা চার) এটাই সবচেয়ে মারাত্মক। টিমের শরীরীভাষা, যেখানে ম্যাচের পর ম্যাচ হেরেও লজ্জা-বিষাদের বিশেষ ছায়া নেই। বরং আনন্দ আছে, ফুর্তি আছে।
কোচিতে যুবরাজ। সোমবার। ছবি: এএফপি
সোমবার যেমন। কোচিতে কোহলি-রায়না-ইশান্তদের দেখে বোঝা গেল না, সিরিজের পাল্লা এখন কাদের দিকে ভারী। হাসি-ঠাট্টা, ‘থোড়াই কেয়ার’ মনোভাব দিয়ে এ দিনের দু’সেশনের অনুশীলন শুরু এবং শেষ। এর সঙ্গে কি কিছুটা হলেও মিশেছে নিজেদের দুর্বলতা সম্পর্কে ঔদাসীন্য? নইলে ডেথ বোলিং নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কেন গম্ভীর বলবেন, “ডেথ বোলারদের দোষ দিচ্ছেন কেন? ওরা তো খারাপ করেনি। কোটলায় ওরাই জিতিয়েছিল। ইংরেজ বোলাররাই বা রাজকোটে কোন ভাল বোলিংটা করেছে? ওরা তো আমাদের ৩১৫ তুলতে দিল!” ঔদাসীন্যের সঙ্গে মিশে আছে বোধহয় ঔদ্ধত্যও। যেটা না থাকলে দু’বছর আগে ভারতের মাটিতে ইংল্যান্ডের ০-৫ ব্রাউনওয়াশের প্রসঙ্গ আজকের মঞ্চে টেনে আনতে পারেন না গম্ভীর। বলতে পারেন না, “টিম ঠিক দিকেই এগোচ্ছে।”
শুনে এক ব্রিটিশ সাংবাদিক আর থাকতে পারলেন না। বেরিয়ে পড়ল, “ঠিক দিকে এগোচ্ছে! এরা কোন দুনিয়ার বাসিন্দা?”
বিস্ময়টাই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। যে টিমের হেভিওয়েট ব্যাটিং ম্যাচের পর ম্যাচ ব্যর্থ। যে টিমের বোলিং ছোট কেন্দ্রের ম্যাচ আয়োজনের ব্যবস্থার থেকেও বেশি ছন্নছাড়া। যে টিমের অধিনায়ক আন্তর্জাতিক সিরিজের ‘প্রোটোকল’-কে দূরছাই বলে ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন টিমের অন্য কাউকে। যে টিমটা পরপর সিরিজ হেরেও অদ্ভুত ভাবে অবিচল থাকতে পারছে। সেই টিমটাই কি না ঠিক দিকে এগোচ্ছে! আশ্চর্য শব্দটাকেও ক্লিশে শোনাবে। বরং আলেকজান্ডারের মতো বলা যায়, ‘সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এই ভারতীয় ক্রিকেট!’




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.