নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটল খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায়। এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গভীর রাতে দরজা ভেঙে ঢুকে প্রায় ৩৫ ভরি গয়না এবং প্রায় ৪ লক্ষ টাকা লুঠ করে পালিয়ে গেল সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়। যদিও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। দুষ্কৃতীদের মারে জখম হয়ে পরিবারের একজন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। খড়্গপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” ঘটনার জেরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
ঘটনাটি খড়্গপুর ২ নম্বর ব্লকের খাটরাঙ্গা এলাকার। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার গভীর রাতে সশস্ত্র দুস্কৃতীদের একটি দল ভোলানাথ অধিকারীর বাড়িতে হানা দেয়। যৌথ পরিবার। ব্যবসা রয়েছে। দোতলা বাড়ি। পরিবারের সকলেই রাতে বাড়িতে ছিলেন। তার মধ্যেই ঘটে ডাকাতি। রাত দেড়টা নাগাদ একতলার দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পড়ে দুস্কৃতীরা। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে দাপিয়ে বেড়ায়। কাউকে ডাকাডাকি করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ১০- ১২ জনের এক দুস্কৃতী দলই বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। শুরুতে গয়না এবং নগদ অর্থ যা রয়েছে, তা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। দুস্কৃতী দল জানায়, বাড়িতে গয়না এবং নগদ অর্থ যা রয়েছে, তা দিয়ে দিতে হবে। না হলে কেউ প্রাণে বেঁচে থাকবে না। পরে আলমারি খুলে তারা সবকিছু তছনছ করে। পালানোর সময় ভোলানাথবাবু বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে মারধর করা হয়। জখম অবস্থায় উদ্ধার করে খাটরাঙ্গার ওই বাসিন্দাকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। |
গভীর রাতে ঘটনার কথা জানতে পারেন গ্রামবাসী। ওই বাড়ির সামনে ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশও। ছিলেন খড়্গপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য, সিআই অরিন্দম দাস প্রমুখ। পুলিশ আধিকারিকেরা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পুরো ঘটনার কথা শোনেন। কোন দরজা ভেঙে দুষ্কৃতী দল বাড়িতে ঢুকেছে, কোন দিক দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে, তা দেখে নেন। এই গ্রামে এমন ঘটনা এই প্রথম। ফলে, স্থানীয়দের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দেয়। পুলিশ আধিকারিকদের কাছে পেয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান গ্রামবাসীরা। সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ ভরি সোনা- রুপার গহনা এবং প্রায় ৪ লক্ষ টাকা লুঠ হয়েছে বলে অভিযোগ। সঙ্গে বাড়ি থেকে দু’টি মোবাইলও নিয়ে পালিয়েছে দুস্কৃতী দল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারনা, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। ঘটনার সঙ্গে কোনও দুষ্টচক্র জড়িত। যারা আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। দুস্কৃতী দলের সঙ্গে আশপাশ এলাকার কারও যোগ থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। রবিবার রাতের পর সোমবার দিনভরও ওই এলাকার এবং তার আশপাশে পুলিশি তল্লাশি চলে। ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের খোঁজ পেতে কয়েকটি এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। খড়্গপুরের এসডিপিও অবশ্য বলেন, “ঘটনার কিনারা করার চেষ্টা চলছে। তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |