ঠান্ডায় চিড়িয়াখানার নিরামিষ মেনুতে ‘মহুয়া’-র মৌতাত
মাদলের বোল নেই তো কী হল, মহুয়া তো আছে। হাড় কাঁপানো কনকনে শীতের রাতে আগুনের তাপে শরীর সেঁকে নিতে নিতে মহুয়ার মৌতাতে এখন মত্ত রামু, লক্ষ্মী আর সম্রাট। কোনও প্রত্যন্ত গ্রাম নয়, বরং রাঁচি শহরের অদূরেই প্রতিদিন রাতে এখন শুরু হয়েছে রামু-লক্ষীদের ‘ক্যাম্প ফায়ার’। ঠান্ডায় যখন গোটা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের জবুথবু অবস্থা তখন লক্ষী-রামুদের মহুয়া সেবন করে রাতে নিদ্রা যাওয়ায় অনেকেই ঈর্ষা করতে পারেন। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না লক্ষ্মী কিংবা রামুর পক্ষে শীতের পোশাক গায়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তারা যে রাঁচির বীরসা মুন্ডা বায়োলজিক্যাল পার্কের দু’টি হাতি।
ওরমানজি এলাকায় এখন তাপমাত্রা নেমেছে ৩ ডিগ্রিতে। ফলে চিড়িয়াখানার নিরামিষ ভোজীদের শরীর গরম রাখতে আপাতত পশু চিকিৎসকরা মহুয়াই ‘প্রেসক্রাইব’ করছেন। শুধু হাতিই নয়, জেব্রা, জিরাফ, জলহস্তীর খাবারেও পরিমাণ মতো মহুয়া মেশানো হচ্ছে।
বাঘের খাঁচার সামনে রাখা হয়েছে হিট ব্লোয়ার। বীরসা মুন্ডা বায়োলজিক্যাল পার্কে। ছবি: মুন্না কামদা
শরীর গরম রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে চব্যনপ্রাশও। চিড়িয়াখানার রেঞ্জার জয়প্রকাশ ভগতের কথায়, “নিরামিষ ভোজীরা যেহেতু মাংস খায় না ফলে তাদের শরীর গরম রাখতে মহুয়া ব্যবহৃত হচ্ছে। তা পরিমাণ মতোই।” আমিষ ভোজীদের জন্য অবশ্য অন্য ব্যবস্থা। শীতে বাঘ, সিংহ, লেপার্ড, চিতা, বনবিড়ালের মতো মাংসভোজীদের জন্য মোষের মাংসের স্যুপ আবশ্যিক করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের দেওয়া হচ্ছে মিনারেল পাউডার এবং শরীর গরম রাখার জন্য বিশেষ ভিটামিন।
এমনিতেই শীতের এই সময়টা পশুপাখীদের শরীরের দিকে বিশেষ যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কারণ অত্যাধিক ঠান্ডায় মানুষের মতোই পশুপাখীদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে বলেও ভগত জানান। তাই বিভিন্ন ধরনের জন্তু-জানোয়ারের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ওরমানজির চিড়িয়াখানাতে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঠান্ডার সঙ্গে যুঝতে বিভিন্ন পশুপাখীর জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। খাবারের পাশাপাশি পশুপাখীদের বাসস্থানগুলিও যতটা সম্ভব গরম রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাত হলেই পশুপাখীদের খাঁচাগুলি ঢেকে দেওয়া হচ্ছে মোটা চট দিয়ে। ঠান্ডা হাওয়া যাতে ঘরের ভিতর ঢুকতে না পারে, তারই ব্যবস্থা। একইসঙ্গে প্রতিটি ঘরেই উচ্চ ক্ষমতার আলো জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে রাতে। যাতে ঘর গরম থাকে। বিশেষত পাখীর খাঁচাগুলিতে রাতে আলো জ্বালানোর বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে। শীতঘুমে আচ্ছন্ন সাপের ‘এনক্লোজার’ গুলিও আলো জ্বালিয়ে গরম রাখা হচ্ছে। কারণ এই সময় সরীসৃপদের রক্ত এমনিতেই ঠান্ডা হয়ে যায়। প্রতি বছরের মতোই বাঘ-সিংহের ঘরগুলিতে এবারেও রাতে চালু রাখা হচ্ছে হিট ব্লোয়ার। আর যে জায়গায় হাতিরা থাকে সেই ঘরের বাইরে প্রতি রাতে জ্বলছে আগুন। ক্যাম্প ফায়ার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.