নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
জমির ধান পাহারাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে রাজনৈতিক অশান্তি ছড়াল আরামবাগের চকরুহিত গ্রামে। সকালে এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধর এবং ঘেরাও করে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। বিকেলে পাল্টা সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মারধর এবং তাঁদের ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দু’টি ক্ষেত্রেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জখম হন অন্তত ২০ জন।
পুলিশ জানায়, চকরুহিত গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের বিভিন্ন জমির ধান পাহারার জন্য বিঘাপিছু ৩০ কেজি ধান নিচ্ছেন পাহারাদাররা। তৃণমূল নেতা অসীম ঘোষ তা দিতে রাজি হননি। তাঁর অভিযোগ, পাহারার কথা তাঁকে জানানো হয়নি। পাহারা না দিয়েই ধান আদায় করছিল সিপিএমের লোকজন। তা ছাড়া তাঁর জমিতে শ্রমিকদের কাজ করতে দেওয়াও হচ্ছে না। এ ব্যাপারে তিনি সিপিএমের ১৪ জনের নামে থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। সেই আক্রোশেই এ দিন সিপিএম কর্মী বিকাশ মাজির নেতৃত্বে তাঁদের মারধর এবং ঘর ভাঙচুর করা হয়। অসীমবাবুকে ঘেরাওমুক্ত করতে গেলে পুলিশকে বঁটি নিয়ে তাড়া করেন গ্রামের মহিলারা। শেষমেশ অবশ্য পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ দুই মহিলা-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম উমা মাজি, শকুন্তলা মালিক, অরুণ মাজি, সহদেব মালিক, আদিত্য মাজি এবং প্রভাত মাজি।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএম কর্মী বিকাশবাবু দাবি করেন, পাহারার জন্য ধান না পেয়ে মানুষের ক্ষোভ ছিল ঠিকই। শ্রমিকেরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অসীমবাবুর কাজ করতে চাননি। কিন্তু গ্রামে আলোচনা না করে অসীমবাবুর ১৪ জনের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। সে ব্যাপারে এ দিন মহিলারা জানতে গেলে অসীমবাবু তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও শ্লীলতাহানিও করেন। এর পরেই গ্রামের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিকাশবাবুর অভিযোগ, “বিকেলে পুলিশের সামনেই গ্রামে তৃণমূলের মিছিল হয়। সেই মিছিল থেকে আমাদের প্রায় ১০ জন কর্মী-সমর্থকদের মারধর এবং তাঁদের ঘর ভাঙচুর করা হয়। প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টে পুলিশ আমাদের লোকেদেরই লাঠিপেটা করেছে।”
বিষয়টি নিয়ে আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “পুরো চকরহিত গ্রামের মধ্যে গুটিকয়েক পরিবার আমাদের সমর্থক। অসীম ঘোষ তাঁদের নেতৃত্ব দেন। সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে হামলা করল।” পক্ষান্তরে, আরামবাগের সিপিএম নেতা মোজাম্মেল হোসেনের অভিযোগ, “যে সব গ্রামে আমাদের সংগঠন মজবুত, পঞ্চায়েত আসন্ন নির্বাচনের আগে তা ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল।” |