|
|
|
|
স্বস্তিতে নেই বরাকের ডি-ভোটাররা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
পুলিশ বিদেশি বলে সন্দেহ করায় জেলা নির্বাচন শাখা যাদের ডি অর্থাৎ ডাউটফুল ভোটার হিসাবে চিহ্নিত করছে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাদের প্রকৃত ভারতীয় বলে ঘোষণা করলেও ভোটার তালিকায় তাঁরা ‘ডি-মুক্ত ’ হতে পারছেন না।
ধলাইয়ের লালমোহন দাস জানান, ট্রাইব্যুনাল সমস্ত কাগজপত্র পরীক্ষা করে ২০০৯-এর ২৯ ডিসেম্বর তাঁকে ভারতীয় বলে রায় দেয়। তাঁর স্ত্রী সুভাষী দাসের ক্ষেত্রেও একই রায় হয় ৯ মাস পরে। উধারবন্দের তাজিমউদ্দিন লস্কর ও তাঁর স্ত্রী লাইলি বেগমের রায় বেরোয় ২০০১ সালের ২৯ জানুয়ারি। একই দিনে রায় বের হয় এলাকার বেবি বেগম লস্কর ও রহিমা বেগমের। বড়খলার গোবিন্দচন্দ্র দাস ও ধলাইয়ের উপেন্দ্র দাসদের রায় আরও পুরনো। গোবিন্দবাবুকে ১৯৮৮ সালে এবং উপেন্দ্রবাবুকে ১৯৯০ সালে ভারতীয় বলে রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। অথচ এর পরেও ‘সন্দেহজনক ভোটার’ তকমামক্ত হতে পারছেন না তাঁরা।
এমন ভুক্তভোগীদের সকলেরই অভিযোগ, পুলিশের অহেতুক সন্দেহে একবার যে ভোটাধিকার গেল, আর তা ফেরত পাচ্ছেন না তাঁরা। নির্বাচন অফিস বলছে পুলিশের সীমান্ত শাখায় যোগাযোগ করতে। সেখান থেকে পাঠানো হচ্ছে ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রতিলিপি নিয়ে আসাতে। সমস্ত কাগজ জোগাড় করার পর গেলে নির্বাচনী শাখা অফিস থেকে বাঁধা জবাব- “জমা দিয়ে যান, দেখছি।” নাগরিক স্বার্থরক্ষা সমিতির মহাসচিব সাধন পুরকায়স্থ ক্ষুব্ধকণ্ঠে বলেন, “ওই দেখা আর শেষ হয় না। বহু মানুষ এমন ভোগান্তির শিকার। ‘ডি- ভোটার’ দাগানো পরিবারের নতুন কেউও তালিকায় নাম তুলতে পারছেন না।”
এমন ভোগান্তির কথা জেনে বিস্মিত বরাক উপত্যকা ও পার্বত্য জেলাগুলির কমিশনার এম আরিজ আহমদ। অভিযোগ পেয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে জেলাশাসককে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন। জেলাশাসক হরেন্দ্রকুমার দেবমহন্ত জানান, ৬ নম্বর ফর্ম পূরণ করে জমা দিলেই নাম উঠে যাবে।
কাছাড়ের নির্বাচন অফিসার রঞ্জিতকুমার লস্কর দিন কয়েক আগে জানান, ৬ নম্বর ফর্মে শুধু নতুন ভোটারদের নাম তোলা হয়। ‘ডি-মুক্ত’ হওয়ার জন্য পুলিশের সীমান্ত শাখা ট্রাইব্যুনালের রায় উল্লেখ করে নির্বাচন শাখাকে চিঠি দেবে। ওই চিঠি আনতে পারলে আর কোনও চিন্তা নেই। ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে যাঁরাই চিঠি এনে দেবেন, তাঁদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
লস্কর দাবি করেন, ভারতীয় ঘোষণার পরও ‘ডি’-মুক্তি ঘটছে না, এই অভিযোগটি পুরোপুরি ঠিক নয়। এটি একটি প্রক্রিয়া, তা চলছে ও চলবেই। এমন উদাহরণও আছে, ১৯৯৭-৯৮ সালে মামলা শুরুর সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেখানে বাস করতেন এখন আর সেই ঠিকানায় নেই। কাউকে নতুন ঠিকানাও জানাননি। ফলে সীমান্ত শাখার চিঠি পেয়ে যখন পুরোনো ঠিকানায় খোঁজ করা হয়, তখন আর তাঁদের পাওয়া যায় না। ফলে তাঁদের নাম ডি-মুক্ত করা সম্ভব নয়।
সদ্য প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় জেলার ভোটারসংখ্যা ৯ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৩৫। এর মধ্যে ডি-চিহ্নিত ৬ হাজার ৬৮৭ জন। ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও এঁরা ভোট দিতে পারবেন না। |
|
|
|
|
|