সূত্র দিল গণপিটুনির তদন্ত
তিলজলা-তপসিয়ায় বিপুল অস্ত্রের হদিস
ক অপরাধে জড়িতদের সন্ধানে নেমে আরও বড় এক অপরাধ-চক্রের হদিস পেয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাঁরা জেনেছেন, তিলজলা ও তপসিয়ার বহু জায়গায় মুঙ্গেরে তৈরি নাইন এম এম পিস্তল ও তার গুলি কার্যত মুড়ি-মুড়কির মতো ঢুকেছে। ওই সমস্ত এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনায় জড়িতদের খুঁজতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন তদন্তকারী অফিসারেরা। এখন তাঁদের চিন্তা, কী ভাবে ওই মারণাস্ত্র ঘিঞ্জি বসতিপূর্ণ ওই এলাকা থেকে উদ্ধার করা যায়। সেই সঙ্গে যে সব এজেন্ট মারফত ‘ইম্প্রোভাইজ্ড’ নাইন এম এম ও তার কার্তুজ ভিন্ রাজ্যে ঢুকছে, তাদেরও গোয়েন্দারা চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
রবিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধৃত ১০ জনের মধ্যে দাগি দুষ্কৃতী আব্দুল ওরফে জারুর কাছ থেকে দেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ তৈরির যন্ত্র, বন্দুক ও বোমা উদ্ধারের ঘটনাকে নেহাতই হিমশৈলের চূড়া বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এক অফিসারের কথায়, “কলকাতার, বিশেষ করে পূর্ব কলকাতার কিছু কিছু এলাকায় পাইপগান, ওয়ান শটারের মতো অস্ত্র এখনও তৈরি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তল্লাশি অভিযানের ফাঁক গলে এই কারবার চলছে। কিন্তু এত সংখ্যায় দেশি নাইন এম এম পিস্তল মুঙ্গের থেকে তিলজলা ও তপসিয়ায় ঢুকেছে, সেটা আমাদের জানা ছিল না। এর সংখ্যাটা ঠিক কত তা-ও আমাদের জানা নেই। ধৃতদের জেরা করেও বুঝতে পারছি না।”
পুলিশের একাংশের বক্তব্য, পিস্তলের সঙ্গেই গুলি ঢুকেছে মুঙ্গের থেকে। গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্তা বলেন, “অপরাধ-জগতে নাইন এম এম পিস্তলের সঙ্গে ১০ রাউন্ড কার্তুজ বিনামূল্যে দেওয়াটাই এখন রেওয়াজ। কারণ, নাইন এম এম গুলি আলাদা ভাবে বাজারে পাওয়া দুষ্কর। তাই যত পিস্তল ঢুকেছে, তার প্রতিটির সঙ্গে অন্তত ১০ রাউন্ড গুলি ঢুকেছে। চোরাই বাজারে একটি নকল নাইন এম এম পিস্তলের দাম ১৫ হাজার টাকা। এই গোত্রের আসল পিস্তলের মতো এতেও সর্বাধিক ১৪টি গুলি ভরা যায়। কিন্তু বহন করার সময়ে একবারে ম্যাগাজিনে ১০টি গুলির বেশি ভরা উচিত নয়, নচেৎ গুলি ছুটে যেতে পারে। তবে নকলে যেটা সমস্যা, টানা ব্যবহার করলে পিস্তল গরম হয়ে গিয়ে গুলি আটকে যায় অনেক সময়েই।”
গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রের খবর, ধৃতদের থেকে তদন্তকারীরা কিছু সূত্র ইতিমধ্যে পেয়েছেন। তার উপর ভিত্তি করে তিলজলা ও তপসিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র, বিশেষ করে নাইন এম এম পিস্তল ও তার গুলির খোঁজে বিশেষ অভিযান নিয়মিত চালানো হবে। মূলত, ওই সব এলাকায় দাপিয়ে বেড়ানো দু’টি প্রধান দুষ্কৃতী-দলকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ এবং ওই দলের লোকজনের ডেরাতেই অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। তবে নিতান্তই সাধারণ দুষ্কৃতীদের হাতেও কী করে নাইন এম এম এল, তা ভেবে তাজ্জব গোয়েন্দারা।
কলকাতা পুলিশের এক অফিসারের বক্তব্য, “কলকাতা পুলিশের ৬৫টি থানার মধ্যে মুঙ্গেরে তৈরি নাইন এম এম পিস্তলের সংখ্যা পূর্ব কলকাতার ওই জায়গায় সব চেয়ে বেশি। সংখ্যাটা ১০০-র বেশি তো বটেই, কিন্তু কতটা বেশি সে সম্পর্কে আমাদের ধারণা নেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাধিক অস্ত্র কারবারিদের হাত ধরেই ওই আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকছে। আগে তিলজলাও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মধ্যে ছিল। দু’বছর আগে ওই এলাকা কলকাতা পুলিশের আওতায় আসে।” কিন্তু এত নাইন এম এম নেওয়ার হিড়িক পড়ল কেন? তিলজলা থানার এক অফিসার বলেন, “ধৃতদের এক জন জেরার মুখে জানিয়েছে, প্রতিপক্ষ দলের হাতে নাইন এম এম এসেছে বলে তারাও পাল্টা হিসেবে নাইন এম এম আনিয়েছে মুঙ্গের থেকে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.