তিনি আবাসন মন্ত্রী থাকাকালীন রাজারহাট সংক্রান্ত যে সব ফাইল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়েছিলেন, তাতে কী ছিল, তা মানুষকে জানানোর দাবি তুললেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। সোমবার রাজারহাটে চিনার পার্কে এক দলীয় সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে গৌতমবাবু বলেন, “আমি তখনই হিডকো অফিসে বসে বলেছিলাম ও সব ফাঁকা ফাইল। বাজার থেকে সদ্য কেনা। এখন দয়া করে ওই ফাইল খুলুন। মানুষকে বলুন, কী ছিল। আমাকে জেলে পাঠান। না হলে তিন বছর পরে ওই ফাইল আমাকে দেখতে হবে!”
এ দিন যে মাঠে সিপিএমের সমাবেশ ছিল, বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তার ঠিক উল্টো দিকের রাস্তায় সভা করেছিলেন মমতা। বর্তমান তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেনকে সঙ্গে নিয়ে সেই সভায় মমতা একের পর এক ফাইল দেখিয়ে বলেছিলেন, ওই সব ফাইলে রাজারহাট উপনগরী সংক্রান্ত দুর্নীতির তথ্য রয়েছে। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে আর মমতা তা নিয়ে উচ্চবাচ্য করেননি। সেই সূত্র ধরেই মমতাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন গৌতমবাবু। |
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সামনেই তিনি বলেন, “উনি বলেছিলেন, নতুন শহর করতে গিয়ে আমি কী কী অন্যায় করেছি, ওই ফাইলগুলিতে সে সব ছিল। সরকারে আসার পরে প্রায় দু’বছর হল। এখন দয়া করে মমতা ফাইল খুলুন।”
রাজারহাট উপনগরী গড়ার কাজে গৌতমবাবুর প্রশংসা করে বুদ্ধবাবু বলেন, “অনেক দিন পরে রাজারহাট দিয়ে এলাম। কী বিরাট কাণ্ড গৌতম করেছিল। এত বাড়ি। হাসপাতাল। শিক্ষাকেন্দ্র। তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্র।”
কিন্তু তার পরেই বুদ্ধবাবুর আক্ষেপ, “বর্তমান সরকারের আমলে রাজারহাটে সব কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাড়িগুলো সব শূন্য পড়ে আছে! নতুন করে একটা শিল্পও আসেনি।”
ভাঙড়কে কেন্দ্র করে শিরোনামে থাকা তৃণমূল নেতা আরাবুল সম্পর্কে তৃণমূল কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না দাবি করে গৌতমবাবু বলেন, “আমি মন্ত্রী থাকার সময়ে ও দু’বার আমার কাছে এসেছিল। রাজারহাট উপনগরীর ঠিক বাইরে তৃণমূলের কিছু নেতা, শিল্পী কী ভাবে জমি জোগাড় করেছে, তা আরাবুল জানে। আরাবুলকে ঘাঁটালে ও সব বলে দেবে। তাই দল ওকে সম্পদ বলছে।” বুদ্ধবাবু অবশ্য জানান, তিনি আরাবুলকে চেনেন না। তাঁর অভিযোগ, আরাবুলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বার্তা দিতে চাইছেন, এই ধরনের কাজ করলে সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে না। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, মহিলাদের উপরে আক্রমণ, বিশেষ করে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজের সামনে বাসে ছাত্রীর উপরে মদ্যপদের হামলার অভিযোগ তুলে বুদ্ধবাবু বলেন, “পাড়ায় পাড়ায় সমাজবিরোধী, লুম্পেন তৈরি হচ্ছে। তৃণমূল এদের দল। মহিলারা বিপদে পড়েছেন। তাঁরা রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।” সভায় অমিতাভ নন্দী, তড়িৎ তোপদার, রেখা গোস্বামী, তাপস চট্টোপাধ্যায়, রবীন মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। |