শীতবস্ত্রের পসরা নিয়ে দুর্গাপুরে হাজির রাজস্থান থেকে মেঘালয়
ঠান্ডা যত বাড়ছে, তত বেশি খোঁজ পড়ছে পছন্দসই গরম পোশাকের। লম্বা ঝুল, ছোট ঝুলের রঙিন সোয়েটার কিংবা শ্রাগ, চাহিদা সবেরই। শীতের বিয়েবাড়িতে চমক যে দিতেই হবে। আর এই চাহিদা মেটাতেই সুদূর উত্তর-পূর্ব, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড থেকে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এই ঋতুই যে তাঁদের লক্ষ্মী।
দুর্গাপুরের জাতীয় সড়কের মোড় থেকে সাবেক বাজারের সামনে বেশ খানিকটা ফাঁকা জায়গা। সেখানেই খোলা আকাশের নীচে বা তাঁবু খাটিয়ে নানা রঙের পসরা তাঁদের। রঙ-বেরঙের আধুনিক, সাবেক ডিজাইনের সোয়েটার, বিভিন্ন স্টিচের শাল, মাফলার, টুপি, জ্যাকেট থেকে গালিচা, শতরঞ্চি, কার্পেট সাজানো রয়েছে থরে থরে। দুর্গাপুরে উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান থেকেই মূলত এই ব্যবসায়ীরা এসেছেন। রানিগঞ্জে আবার বেশির ভাগ এসেছেন উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি থেকে। সংখ্যায় অল্প হলেও রয়েছেন ভুটানিরা। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিশেষ ঠান্ডা না পড়ায় বেশ সংশয়ে ছিলেন এই ব্যবসায়ীরা। শেষ পর্যন্ত আক্ষেপ দূর হয়েছে। হাসিমুখে তাঁরা জানাচ্ছেন, অন্য বছরের থেকে এ বার মুনাফা বেশি।
এখনও চলছে কেনাকাটা। দুর্গাপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুরে জাতীয় সড়কের পাশে নবারুণ ক্লাবের মাঠে বেশ কিছুদিন ধরেই স্টল সাজিয়ে বসেছেন কয়েকজন। উত্তরপ্রদেশের বালিয়া থেকে আসা হরি সিংহ জানালেন, বছরভর দেশের নানা জায়গায় পসরা নিয়ে ঘুরে বেড়ান। কয়েক বছর হল দুর্গাপুরে আসছেন। কিন্তু এত দিন ঘরছাড়া, বাড়ির জন্য মন কেমন করে না? বললেন, “ক্যয়া করু। নিকলনা তো পড়তাহি হ্যায় (কী আর করব। বেরোতে তো হবেই)।” দোকান দিয়েছেন রাজস্থানের শ্যাম থরুরও। তিনি জানান, প্রায় মাস তিনেক আগে বেরিয়েছেন। দুর্গাপুরে আসার আগে দু’মাস ছিলেন মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে। বেনাচিতি বাজারের নির্মলা ঠাঙি এসেছেন মণিপুর থেকে। প্রতি বছরই তাঁরা দল বেঁধে আসেন এই শহরে। সকালে উঠেই বসে পড়েন পসরা নিয়ে। বেলা বাড়লে ছোট উনুনে ভাত, আলু সিদ্ধ বানিয়ে নেন। তার সঙ্গে কোনও দিন আচার, কোনও দিন বেগুন পোড়া দিয়েই চলে যায় দুপুরটা। রাতে রুটি, সবজি। এ রাজ্যে আসা-যাওয়ার সুবাদে নির্মলা দিব্যি বাংলা শিখে ফেলেছেন। তিনি বলেন, “এত দিন একটু চিন্তায় থাকলেও শীত পড়ায় স্বস্তি পেয়েছি। মুনাফা হচ্ছে।”
রাজস্থান হোক বা মেঘালয়, মণিপুর হোক কিংবা রামপুর, শীতবস্ত্রের সম্ভারে ফারাক তেমন নেই। তবে রাজস্থানের কার্পেট, গালিচায় মরু অঞ্চলের সাবেকিয়ানার ছাপ। উত্তর-পূর্বের গরম পোশাকে রয়েছে ফ্যাশন ও আধুনিকতার ছোঁয়া। হাতে পছন্দসই সোয়েটার নিয়ে দুর্গাপুরের বাসিন্দা অপর্ণা রায় বলেন, “প্রতি বছরই কিছু না কিছু কিনি। বেশ সস্তায় পাওয়া যায়।” জাতীয় সড়কের পাশের এই সব স্টলে সুযোগ পেলেই ঢুকে পড়ছেন পথচারীরা। তার পরে দরদাম। শেষে দু’পক্ষের হাসিমুখেই শেষ হচ্ছে কেনাকাটা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.