শিল্পোৎপাদন হতাশ করলেও কিছুটা স্বস্তি দিল মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান।
মাত্র তিন দিন আগেই শিল্পোৎপাদন সরাসরি ০.১% কমায় সংশ্লিষ্ট মহলের দুশ্চিন্তা বাড়লেও সোমবার মুশকিল আসান হিসেবে দেখা দিল সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার তিন বছরে সবচেয়ে নীচে নামার খবর। পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা এই হার ডিসেম্বরে কমে হয়েছে ৭.১৮%। মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা বাগে আসায় চলতি মাসের ২৯ তারিখ ঋণনীতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে বলেও প্রত্যাশা শিল্প ও ব্যাঙ্কিং মহলের। তাদের মতে শিল্পের চাকা দ্রুত ঘুরিয়ে আর্থিক বৃদ্ধিকে টেনে তুলতে সুদ কমানোর সম্ভাবনা ছিলই। তা আরও বাড়াল মূল্যবৃদ্ধির এই খবর। বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের চোদ্দ মাস আগে অর্থনীতির হাল ফেরানোয় উৎসাহী রাজনৈতিক মহলও। |
উৎসাহ বাড়ে শেয়ার বাজারেও। মূল্যবৃদ্ধি কমার খবরে ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর আশায় ভর করে সেনসেক্স বেড়ে যায় ২৪৩ পয়েন্ট। বাজার বন্ধ হয় ১৯,৯০৬.৪১ পয়েন্টে, যা গত দু’বছরে সর্বোচ্চে। উত্থানে ইন্ধন জোগায় কর ফাঁকি প্রতিরোধ আইন (জিএএআর) এখনই রূপায়ণ না-করার সিদ্ধান্ত। এই আইন বলবৎ করার সিদ্ধান্ত ২০১৬ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে যাওয়ায় খুশি বিদেশি লগ্নিকারীরা। ভোডাফোনের মতো সংস্থার পুরনো অধিগ্রহণের উপর এখনই বকেয়া কর আদায় করা হচ্ছে না, এই সিদ্ধান্তে বাজারে টাকা ঢালতে থাকেন লগ্নিকারীরা। বাজার উঠেছে ইনফোসিসের পর টিসিএসের ভাল আর্থিক ফলাফলেও। ডিসেম্বরে শেষ হওয়া তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থার নিট মুনাফা ২৩% বেড়ে হয়েছে ৩,৫৫২ কোটি টাকা। আর মোট আয়ও ২১.৭% বেড়ে হয়েছে ১৬,০৭০ কোটি টাকা। গত কয়েক বছর ধরেই মন্দার কারণে ভাল ফল করতে পারছিল না দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। সোমবার টিসিএস আগামী দিনে ব্যবসার কোনও পূর্বাভাস না-দিলেও, ভবিষ্যতে ভাল ফলের আশা জাগিয়েছে শুক্রবার ইনফোসিসের বয়ান। দু’সপ্তাহে দেশের প্রথম সারির দুই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার মুনাফার অঙ্কে সুদিন ফেরার আশায় সংশ্লিষ্ট মহলও।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরের পর পাইকারি সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি এত নীচে নামেনি। রয়টার্সের পূর্বাভাসও ছিল ৭.৪% মূল্যবৃদ্ধি। বাস্তবে তার চেয়েও নীচে নেমেছে এই হার। মূলত শিল্পে উৎপাদিত পণ্য, জ্বালানি ইত্যাদির দাম কমার হাত ধরেই তা কমেছে। নভেম্বরের হার ৭.২৪%। ২০১১-এর একই সময়ে তা ছিল আরও চড়া, ৭.৭৪%। এ দিকে, খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ডিসেম্বরে ১০% ছাড়িয়ে ছুঁয়েছে ১০.৫৬%। বেড়েছে শাক-সব্জি, ডাল ইত্যাদির দাম। |