বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: কল্যাণীতে দেশের সর্বপ্রথম
সৌরঝড়ে নজরদারির জন্য গবেষণা কেন্দ্র
পৃথিবীর মেরু অঞ্চল দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বায়ুমণ্ডলে তেজস্ক্রিয়তার কারণে প্রায়ই সমস্যায় পড়েন বিমানচালকেরা। শুধু তাই নয়, শারীরিক ক্ষতি হয় বিমানচালক, কর্মী ও যাত্রীদেরও।
একই কারণে মহাকাশে অবস্থিত কৃত্রিম উপগ্রহগুলিরও ক্ষতি হয়। সমস্যা হয় টেলি-যোগাযোগ ও গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেমের (জিপিএস) মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থাতেও। শুধু তাই নয়, মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেও মাঝেমধ্যেই বাধা সৃষ্টি করে এই তেজস্ক্রিয়তা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই তেজস্ক্রিয়তার পিছনে রয়েছে সৌরঝড়। সেটা কী?
গবেষকেরা বলছেন, সূর্যের ভিতরে পারমাণবিক বিক্রিয়ার ফলে প্রচুর পরিমাণে তড়িৎগ্রস্ত কণা (মূলত ইলেকট্রন) বেরিয়ে আসে। সেই কণাগুলি পৃথিবীর মেরু অঞ্চল দিয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে প্রবেশ করে। বিজ্ঞানীদের ভাষায়, মেরু অঞ্চলে ভূ-চৌম্বক শক্তি কাজ করার ফলেই ওই তড়িৎগ্রস্ত কণাগুলি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। আকাশে দেখা যায়, রং-বেরঙের খেলা (অরোরা)।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিমণ্ডলে ওই তড়িৎগ্রস্ত কণা ঢুকে পড়ার ফলেই মেরু এলাকায় বিমান চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। এক বিমানচালক জানিয়েছেন, মেরু অঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত সৌর বিকিরণ হলে বিমানের সঙ্গে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি হয়। অল্প পরিমাণে বিকিরণে বিমান চলতে পারলেও শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়। আন্তর্জাতিক বিমানসংস্থাগুলির নিয়ম অনুযায়ী, এক জন বিমানচালক মাসে এক বারের বেশি মেরু অঞ্চল দিয়ে যেতে পারেন না। সৌর বিকিরণের ফলে ছড়িয়ে পড়া তড়িৎগ্রস্ত কণাগুলির কারণেই কৃত্রিম উপগ্রহগুলিতে ব্যাঘাত ঘটে। সমস্যা হয় মহাকাশ অভিযানেও।
সৌরঝড়ের খতিয়ান
প্রথম
সর্বশেষ
এ দিন পর্যন্ত # নথিভুক্ত হিসেব
এ বার সেই সৌরঝড়ের গতিবিধির উপরে নজরদারি চালাতেই এ বার নতুন একটি কেন্দ্র গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, কল্যাণীর মোহনপুরে কেন্দ্রীয় সরকারি গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআইএসইআর) ক্যাম্পাসে তা গড়ে তোলা হবে। এ জন্য চার কোটি টাকাও মঞ্জুর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশে সর্বপ্রথম এই ধরনের কেন্দ্র গড়া হচ্ছে বলে খবর।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শুধু সৌরঝড়ই নয়, মহাকাশে আবহাওয়া সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়গুলিও নজরে রাখবেন তাঁরা। গবেষকেরা বলছেন, বর্তমানে মহাকাশবিজ্ঞান ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কৃত্রিম উপগ্রহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সৌরঝড়ের দাপটে সেগুলি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে সতর্কতা নিতেই এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি, বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যা দূর করতেও উদ্যোগী হবেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, কল্যাণীর ওই গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে বিমান চলাচল এবং টেলিকম মন্ত্রকের যোগাযোগ থাকবে। আইআইএসইআর-এর এক গবেষক জানিয়েছেন, মহাকাশে এ ধরনের কোনও ঘটনা আঁচ করলেই সঙ্গে সঙ্গে বিমান চলাচল মন্ত্রকে জানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে আগাম সতর্কতা নেওয়া যায়। খবর যাবে টেলিকম মন্ত্রকেও। এর ফলে তারা মহাকাশে বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন।
শুধু মহাকাশের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ নয়, আগামী দিনে এই কেন্দ্র ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, ইসরোর সঙ্গেও কাজ করবে বলে খবর। ২০১৬ সালে ইসরোর প্রথম সৌর অভিযান হবে। সূর্যের বাইরের অংশ বা ‘করোনা’র উপরে নজরদারির জন্য ‘আদিত্য’ নামে একটি মহাকাশযান পাঠানো হচ্ছে। সেই প্রকল্পে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণেও এই কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা থাকবেন বলে খবর।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.