একটি অস্ত্রোপচার-সরঞ্জামের দোকানের এক কর্মীকে মারধর করে তার মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বর্ধমানে। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর। অমিত মুখোপাধ্যায় নামে ওই কর্মীর স্ত্রী মহুয়াদেবী শনিবার বর্ধমান থানায় একটি ওই দোকানের মালিক রাজর্ষি দত্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। দোকানের মালিক পলাতক। দোকানটিও বন্ধ।
বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ওই দোকান মালিকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তের বাড়ি ও তাঁর দোকানে বারকয়েক গিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু রাজর্ষি দত্ত পলাতক। তাই তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।” |
সোমবার নার্সিংহোমে শুয়ে অমিতবাবু বলেন, “ওই সংস্থায় আমি কম্পিউটারের ডেটা-অপারেটরের কাজ করতাম। কিন্তু দোকানের বিক্রিবাটার হিসেব রাখতেন অন্য এক জন। পরে তহবিল তছরুপের অভিযোগে বেশ কয়েক দিন ধরেই আমার উপর মানসিক নির্যাতন চলছিল। আমি জানাই, কোনও গরমিল হয়নি। সমস্ত হিসেবই মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” অমিতবাবুর অভিযোগ, তাঁর কথায় কান না দিয়ে শনিবার সকালে রাজর্ষিবাবু ও অন্যান্যেরা তাঁর উপর চড়াও হন। দোকানের শাটার বন্ধ করে তাঁকে মারধর করতে করতে তাঁর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়।
পুলিশের কাছে মহুয়াদেবী জানিয়েছেন, দোকানের মালিক বেশ কয়েক জনকে ডেকে আনেন। তাঁরাই তাঁর স্বামীকে মারধর করে তাঁর মুখে কার্বলিক অ্যাসিড ঢেলে দেন। বিকেল ৩টে নাগাদ খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, তাঁর স্বামী দোকানের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অমিতবাবুকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। তারপর তাঁকে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। মহুয়াদেবীর বক্তব্য, বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান শাখার কাছে রাজর্ষিবাবু অমিতবাবুর বিরুদ্ধে তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ, অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা ঘটনার বিচার না করে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধেই এক তরফা ব্যবস্থা নিতে বলেন। তবে অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি হরিহর রায়ের বক্তব্য, “আমি গত দু’দিন বাইরে ছিলাম। ঘটনাটি আমি শুনেছি। বিস্তারিত খোঁজ না নিয়ে কিছু বলতে পারব না।” অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান শহর ইউনিটের সম্পাদক রণেন্দ্রনাথ রায়ের অবশ্য বক্তব্য, “যত দূর জানি, এমন কোনও ঘটনা হয়নি। তদন্ত হলে সবই জানা যাবে। মালিকপক্ষ ও কর্মচারীদের অনেকেই ওখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনে তাঁরাও পুলিশকে বয়ান দেবেন।” পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে। |