|
|
|
|
ধৃত মাফিয়াকে জেরা করে অস্ত্র মিলল অন্ডালে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • অন্ডাল ও দুর্গাপুর |
বেআইনি সব অস্ত্র উদ্ধার করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্ডালের নানা এলাকায় প্রচুর অস্ত্র রয়েছে, এ খবর পুলিশের কাছে আগে থেকেই ছিল। সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে দেওয়ায় চাপ বেড়েছিল পুলিশের উপরে। আসানসোলে ওই সভার চার দিনের মধ্যে অন্ডালের পরাশকোল থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল পুলিশ। ধৃত কয়লা মাফিয়া তথা সিটু নেতা বিজয় সিংহকে জেরা করেই এই অস্ত্রের হদিস মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ সোমবার জানান, অন্ডালের পরাশকোলে একটি পরিত্যক্ত খনি আবাসন থেকে রবিবার রাতে দু’টি মাস্কেট, দু’টি দোনলা বন্দুক, একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি তলোয়ার, চারটি রিভলভার ও ৯২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া রিভলবারগুলির মধ্যে একটি পুলিশের চুরি যাওয়া। তবে সেটি এ রাজ্যের না কি অন্য কোনও রাজ্যের, সে ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাতে পারেননি।
গত ১০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার আগে পরাশকোলেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপরে বোমা-গুলি নিয়ে হামলা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পরাশকোল কোলিয়ারির সিটু অনুমোদিত সংগঠনের নেতা বিজয় সিংহ-সহ মোট দশ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, বিজয়কে গ্রেফতার করার পর তাঁকে ছ’দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জেরা করেই অস্ত্রশস্ত্রের সন্ধান মিলেছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য সভায় পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, “অন্ডাল থেকে যেন কোনও অস্ত্র ঢুকতে না পারে।” পুলিশ কমিশনারও বলেছিলেন, “অন্ডালের মুকুন্দপুর, খাসকাজোড়া, মধুসূদনপুর ও পরাশকোলে প্রচুর অস্ত্র রয়েছে বলে খবর রয়েছে।” গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের নলা থেকে দু’টি পথে অস্ত্র এসে পৌঁছচ্ছে অন্ডাল-পাণ্ডবেশ্বর এলাকায়। প্রথমটি, বারাবনি, জামুড়িয়া হয়ে অন্ডাল এবং দ্বিতীয়টি, বীরভূম হয়ে অজয় পেরিয়ে পাণ্ডবেশ্বর। এই অস্ত্রপথের ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসনের বৈঠকে বারবার আলোচনা হলেও বিশেষ ফল হয়নি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরেই অস্ত্র উদ্ধারের ব্যাপারে তৎপরতা ও অভিযান বাড়ানো হয় বলে পুলিশের একটি সূত্রের খবর।
রাজনৈতিক দলগুলির অবশ্য অভিযোগ, শুধু অন্ডাল বা পাণ্ডবেশ্বর নয়, গোটা শিল্পাঞ্চলই কার্যত বেআইনি অস্ত্রের গুদাম হয়ে রয়েছে। এই অভিযোগ যে অমূলক নয়, সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় তা পরিষ্কার। অন্ডাল ছাড়াও দুর্গাপুর শহর লাগোয়া ফরিদপুর (লাউদোহা) থানা এলাকাতেও পরপর অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। লাউদোহার আমদহি গ্রামে কয়েক দিন আগেই ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে খুন হন দুই যুবক। ঘটনার তদন্তে নেমে ৬ জানুয়ারি কালীনগরে একটি বাড়ি থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেও ফরিদপুর থানার ওই সব এলাকা থেকে বহু বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দের আশ্বাস, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে লাগাতার চলছে। সমস্ত অস্ত্রই উদ্ধার করে ফেলা হবে, দাবি তাঁর। |
|
|
|
|
|