জমি-বিবাদে মারধর, শ্লীলতাহানির নালিশ
মি নিয়ে বিবাদের জেরে দুই মহিলাকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি। শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ভক্তিনগর থানার হায়দরপাড়ায়। প্রহৃত ২ জন মহিলার মধ্যে একজনকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগিণীর হাতে, তলপেটে গুরুতর চোট রয়েছে। অপরজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ অভিযোগ পেয়েই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানি, ভাঙচুর ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা রুজু করেছে। পক্ষান্তরে, অভিযুক্তদের তরফে থানায় অভিযোগ করে জানানো হয়েছে, অভিযোগকারীরা তাঁদের ঘরদোর, পাঁচিল ভেঙে মিথ্যে মামলা দায়ের করেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমার বলেন, “পুলিশ দুটি অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”
এই ঘটনাকে ঘিরে শহরের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যেও আলোড়ন পড়েছে। কারণ, মহিলাদের তরফে করা অভিযোগে যে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অরূপ মজুমদার নামে এক ব্যবসায়ী রয়েছেন। ঘটনাচক্রে, অরূপবাবুর বিরুদ্ধে বাম আমলেও তোলাবাজি সহ নানা অভিযোগে ওই থানায় মামলা হয়েছে। তিনি গ্রেফতারও হয়েছেন। সেই সময়ে তিনি সিপিএমের তদানীন্তন ডাবগ্রাম জোনাল কমিটির সম্পাদক প্রয়াত বিক্রমাদিত্য সিংহের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে পুলিশের দাবি। ওই অভিযোগের জেরে বিডি সিংহও গ্রেফতার হন। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করে সিপিএম।
নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন মহিলার পরিবারের তরফে রঘুনাথ কর লিখিত অভিযোগে জানান, একটি জমি নিয়ে প্রতিবেশী গোপাল সরকারের সঙ্গে বিবাদ চলছে। তার জেরে বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি অরূপবাবু ও তাঁর অনুগামীরা ফের এলাকায় জমির কারবারে নেমে ওই হুমকি দিয়েছেন। ওই রাতে গোপালবাবুর হয়ে অরূপবাবুর নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাঁদের বাড়ির পাশের পাঁচিল ও একটি ঘর ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাধা দিতে গেলে রঘুনাথবাবুর স্ত্রী ও বোনকে মারধর, সম্মানহানির পরে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, হামলার সময়ে একাধিক পদস্থ পুলিশ অফিসারের সঙ্গে অরূপবাবুর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে জানিয়ে হামলাকারীরা ভয় দেখায় বলেও অভিযোগ। ঘটনাচক্রে, শনিবার ভক্তিনগর থানায় তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা স্তরের এক নেতাকে গিয়ে খোঁজখবর করতে দেখা যায়। তবে পুলিশ কর্তারা তাঁকে সাফ জানিয়ে দেন, আইন আইনের পথে চলবে। যদিও গোপালবাবু এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “রঘুনাথবাবুর অভিযোগ ঠিক নয়। কেউ ওই বাড়িতে হামলা চালায়নি। ওই জমি আমার। আমিই পাঁচিল দেওয়ার কাজ করছিলাম। রঘুনাথবাবু তা জোর করে দখলের চেষ্টা করছে। তারাই রাতে ভাঙচুর করে আমাদের নাম দিচ্ছে। পুলিশে জানানো হয়েছে।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবও ঘটনার কথা শুনেছেন। তাঁর মন্তব্য, “বাম আমলে যা-ই হোক না কেন, এখন হুমকি, তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা সেটা জানেন। আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। জমি কার তা ভূমিসংস্কার দফতর ঠিক করবে।” শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পালও দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন। এই ব্যাপারে অরূপবাবুর দাবির, “পুরোটাই চক্রান্ত। সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়া খেলাধূলার সঙ্গেও আমি জড়িত রয়েছি। সে সব নিয়েই আমাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। আমি জমির ব্যবসা করি না। ওই জমি আমার নয়।” তাঁর অভিযোগ, মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচনে তিনি নান্টুবাবুর বিরোধিতা করায় তাঁকে এখন ফাঁসানো হচ্ছে। নান্টুবাবু অবশ্য দাবি করেন, “মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের নির্বাচন বহু দিনের ঘটনা। তার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.