এক ঝলকে...
পৃথিবী
কলা প্রদর্শন
• মস্কো • দুঁদে ফরাসি অভিনেতা জেরার দেপার্দুু শেষ পর্যন্ত রেগেমেগে ফ্রান্স ছেড়ে চলে এলেন, মস্কোয় আশ্রয় নিয়ে রাশিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের হাত থেকে পাসপোর্ট নিলেন, দু’জনে দু’জনকে পরমাদরে জড়িয়ে ধরলেন। দু’জনেরই কাছে যে এ বড় ব্যক্তিগত জয়! দেপার্দু ফ্রান্সকে কলা দেখাতে পারলেন, কেননা এত বড় মিলিয়নেয়ার হিসেবে ফ্রান্সে থাকলে আজ তাঁকে নতুন প্রেসিডেন্টের নতুন নিয়মে ৭৫ শতাংশ আয়কর দিতে হত, অথচ রাশিয়ায় সে বালাই নেই, সকলের জন্যই ১৩ শতাংশ ‘ফ্ল্যাট ট্যাক্স রেট’। ফ্রান্সে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি ছিছিক্কারের ঢেউ উঠলে কী হবে? প্রেসিডেন্ট অয়্যান্দের আয়কর-সংস্কার নিয়ে উল্টো প্রশ্নও তো উঠছে ফরাসিদের মধ্যে, বিত্তবান ফরাসি সমাজ (যেটা বেশ বড়ই, ঘটনাচক্রে!) দেপার্দু-র ঘটনাটি থেকে বিক্ষুব্ধও বোধ করছেন! এইখানেই দেপার্দুর অলক্ষ্য জয়।
আর পুতিনের জয়? সে-ও কি আর বলতে হবে? পশ্চিমের ‘শয়তান’ দেশগুলির থোঁতা মুখ ভোঁতা করে দেখিয়ে দিতে পারলেন তিনি, রুশদেশ কত মহান, সৃষ্টিশীল মানুষদের স্বর্গ, কোনও ইউরোপীয় দেশ এত কম আয়কর চাইতে পারে না, কিন্তু পুতিন পারেন! অর্থনীতি দিয়েই ওরা এক দিন রাশিয়াকে একঘরে করেছিল না? হুঁ, আজ অর্থনীতি দিয়েই রাশিয়া ওদের এক হাত নেওয়ার জায়গায় আসছে, পুতিনেরই রাষ্ট্র‘কলা’-পারদর্শিতায়!
পুতিন সহজে হাসেন না। তবে তাঁর অপার প্রসন্নতা প্রতিফলিত হচ্ছে গোটা রাশিয়ার সরকারি টিভি-চ্যানেলগুলির আনন্দিত হিস্টিরিয়ায়। এমন ‘পি-আর’ সাফল্য তো সচরাচর দেখা যায় না। রুশ সরকার এমনকী এই স্বপনও বপন করছে যে দেপার্দু-কাণ্ড দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে পশ্চিমি লগ্নিকারীরাও এ বার সদলবলে ছুটতে শুরু করবেন মস্কোর দিকে।

ছাপাখানার ভূত
• বেজিং • নতুন বছরের প্রথম সম্পাদকীয় নিবন্ধে লেখা হয়েছিল, রাষ্ট্রকে (আরও) গণতান্ত্রিক হতে হবে। পত্রিকা ছেপে বেরোলে দেখা গেল, নিবন্ধটি বদলে গিয়েছে তাতে শুধুই পার্টির গুণগান! ছাপাখানায় লেখা বদলে দিয়েছে পার্টির প্রচার শাখা। ঘটনাটি, হ্যাঁ অবশ্যই, চিনের। সাধারণত এই জাতীয় ঘটনা মেনে নেওয়াই দস্তুর। কিন্তু গুয়াংডং প্রদেশের গুয়াংঝৌ-এর ‘সাদার্ন উইকলি’-র সাংবাদিকরা এ বার প্রতিবাদ করলেন। ‘পার্টির যথেচ্ছ খবরদারি’ মানতে নারাজ তাঁরা। পার্টি প্রকাশ্যে জানিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার প্রশ্নই নেই। তবে কানাঘুষো, সরাসরি হস্তক্ষেপ নাকি কমবে। সাংবাদিকদের মধ্যে জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ বুঝতে সমস্যা নেই। কিন্তু সেটা গুয়াংডংয়েই কেন? দক্ষিণ চিনের এই প্রদেশেই তিন দশক আগে চিনের আর্থিক সংস্কার আরম্ভ হয়। মানসিক ভাবে এই প্রদেশটিই পশ্চিম দুনিয়ার সবচেয়ে কাছাকাছি। ভৌগোলিক ভাবেও হংকংয়ের খুব কাছে। ফলে, স্বাধীনতা খর্ব হলে এই প্রদেশের মানুষের মনেই বেশি বাজে। সাংবাদিক বিদ্রোহের সম্ভাব্য কারণ এটাই।

নজরবন্দি
আমি কখনও বাবাকে পাইনি। তিনি আমার বাবা। তিনি এমনকী আমার স্বামীর মতো। কেউ আমাকে একটা বাড়ি দেয়নি, চাভেস দিয়েছেন: বলেছেন লেনি বেয়াত্রিস। ভেনেজুয়েলার এক নারী। চোদ্দো বছর যাবত্‌ প্রেসিডেন্টের আসনে বসে ‘বলিভারিয়ান সমাজতন্ত্র’ রূপায়ণ করে চলেছেন উগো চাভেস। তাঁর সম্পর্কে অনেক অভিযোগ: প্রকৃত উন্নয়নের বদলে তেল বিক্রির টাকায় চূড়ান্ত জনমনোরঞ্জনী দান-খয়রাতি, বিরোধীদের অন্যায় ভাবে দমন করা, নির্বাচনে কারচুপি, উগ্র এবং প্রায়শ অশালীন মার্কিন-বিরোধিতা ইত্যাদি। কোনও অভিযোগই মিথ্যা নয়। তাঁর জনপ্রিয়তার প্রকৃত ব্যাপ্তি এবং গভীরতা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন আছে। কিন্তু কম সত্য নয় তাঁর জনপ্রিয়তাও। গত অক্টোবর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবার জয়ী হন তিনি। কিন্তু ব্যাধি কেন বাধ্যতে। অন্তত তিন বছর আগে তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে, কিউবায় বার বার শল্যচিকিত্‌সার পরেও আরোগ্য হয়নি, বরং এখন সম্ভবত তাঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। কথা ছিল, ১০ জানুয়ারি, গত বৃহস্পতিবার তিনি চতুর্থ বার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন। কিন্তু সেই অনুষ্ঠান মুলতুবি রাখতে হয়েছে। সরকারি মুখপাত্ররা জানিয়েছেন, দেশের সংবিধানে এমন ব্যবস্থা আছে যাতে প্রেসিডেন্ট আরোগ্যের জন্য প্রয়োজনীয় সময় নিতে পারেন। অগণিত মানুষ আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করছেন, শপথগ্রহণের নির্ধারিত দিনটিতে তাঁরা ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো-র ডাকে রাজধানী কারাকাসের রাজপথে সমবেত হয়ে চাভেসের প্রতি নিজেদের আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছেন। এই আনুগত্যের কতটা আন্তরিক, কতটা নিরাপত্তার খাতিরে, সেটা অবশ্য বলা কঠিন। তবে একটা বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চাভেসের আরোগ্যের সম্ভাবনা খুব প্রবল নয়। ফলে ভবিষ্যত্‌ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। কেবল তাঁর নিজের ভবিষ্যত্‌ নয়, দেশের সামগ্রিক ভবিষ্যত্‌ও। যে নেতা বা নেত্রী স্বভাবে একনায়ক, তাঁদের বিদায়ের পরে কী ঘটবে, সেটাও কখনওই নিশ্চিত থাকে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.