জামশেদপুর
দেশ ভাগের ৬৫ বছর পরেও পাট্টা পাননি উদ্বাস্তুরা
থা রাখেনি সরকার। তাই এবার বসতবাড়ির জমির মালিকানা আদায়ের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন জামশেদপুরের ইস্টবেঙ্গল কলোনির উদ্বাস্তুরা।
দীর্ঘদিন বিহারের অধীনে থাকার পরে শেষ বারো বছর ঝাড়খণ্ড সরকারের অধীনে এসেছেন জামশেদপুরের ওই কলোনির বাসিন্দারা। কিন্তু না বিহার সরকার, না ঝাড়খণ্ড সরকার---কেউই এই উদ্বাস্তুদের পাট্টা সমস্যার সমাধান করেনি। ফলে বাধ্য হয়েই এ বার কলোনির বাসিন্দারা আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেন।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত বাঙালিরা তো রয়েছেনই।
সেই সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসা পাঞ্জাবি ও সিন্ধিরাও বসবাস করেন ওই কলোনিতে। বর্তমানে কলোনির সব ভাষাভাষি মানুষ একটি কমিটি তৈরি করেছেন। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন সঞ্জয় নন্দী নামে এক বাঙালি বাসিন্দাই। সঞ্জয়বাবুর কথায়, “বিহারে অনেক জায়গাতে উদ্বাস্তুরা এসেছিলেন। তাঁদের জমির মালিকানা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরাই শুধু বাদ পড়েছি। প্রতিবার সরকার শুধু প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাই বাধ্য হয়েই এ বার আদালতে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।”
কলোনির সাতশো বাড়ির মধ্যে বাঙালিদের সংখ্যাই সবচেয়ে কম। সাতশো ঘরেরমধ্যে আড়াইশো ঘর বাঙালি রয়েছেন। তবে তাতে কিছু যায় আসে না সেখানকার বাসিন্দাদের।
জামশেদপুরের ইস্টবেঙ্গল কলোনি। —নিজস্ব চিত্র
কমিটির অন্যতম সদস্য বলবিন্দর সিংহের কথায়, “আমাদের একটাই পরিচয়, আমরা উদ্বাস্তু। আমাদের মালিকানা দিতে হবে। বাঙালি কিংবা অবাঙালির বিভেদ আমাদের কলোনিতে নেই।”
ইস্টবেঙ্গল কলোনির বাসিন্দারা জানান, দেশ ভাগের সময় তৎকালীন বিহারের রাঁচি, জামশেদপুর, ধানবাদ, ভাগলপুর, মুজফ্ফরপুর, হাজারিবাগের মতো জায়গাগুলিতে এসে ডেরা বাঁধেন বহু উদ্বাস্তু মানুষ। তারপর অনেক জায়গাতেই উদ্বাস্তুরা জমির মালিকানা পেয়ে গেছেন। এমনকী রাঁচির কাঁটাটোলির নেতাজী নগরের বাসিন্দাদেরও জমির পাট্টা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জামশেদপুরের ইস্টবেঙ্গল কলোনির বাসিন্দাদের পাট্টা জোটেনি।
যে জায়গায় ইস্টবেঙ্গল কলোনি তৈরি হয়, ১৯০৭ সালে টাটা গোষ্ঠীকে সেই জমি লিজ দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। আজও তা বহাল রয়েছে। যদিও জমির মালিক বর্তমানে ঝাড়খণ্ড সরকারই। বাসিন্দাদের জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করে টাটা স্টিল। একই ভাবেই এখানে পুলিশ লাইনকেও জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। আর যে জায়গায় উদ্বাস্তুদের বসানো হয়েছিল তার আশপাশে পুরোটাই পুলিশের জায়গা। আগে সীমানা না থাকায় সমস্যা হয়নি।
কিন্তু বর্তমানে সেখানে পুলিশ লাইনের সীমা বরাবর দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে তার ফলে আটকে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল কলোনির বাসিন্দাদের যাতায়াতের পথ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের অনুমতি না নিয়ে তাদের কলোনিতে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে পারে না।
তাঁদের আশঙ্কা, কোনও কারণে আগুন লাগলে দমকল ঢুকতেও সমস্যা হবে।
রাজনৈতিক ডামাডোলের জেরে বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে সরকার পড়ে গিয়েছে। পুরনো সরকারের পুনর্বাসন মন্ত্রী মথুরা প্রসাদ মাহাত বলেন, “ইস্টবেঙ্গল কলোনির ফাইলটি আইন দফতরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু জবাব আসার আগেই তো সরকার পড়ে গেল। তবে আমরা সমস্যার সমাধান করতে চাই।” যদিও কলোনির বাসিন্দাদের ধারণা, রাজ্যে যতক্ষণ না কোনও স্থির সরকার তৈরি হবে, ততদিন তাঁদের সমস্যার কোনও সমাধান হবে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.