এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জমি অধিগ্রহণের দাবিতে মহাকরণ অভিযানে গেলেন উত্তর দিনাজপুরের কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা। বুধবার উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে রায়গঞ্জ থেকে প্রায় ৬০০ নেতা-কর্মী রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে কলকাতা যান। রায়গঞ্জের পানিশালা এলাকার ৫০ জন চাষি তথা জমির মালিকও তাতে সামিল হন। তাঁরা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশের কথা লিখে নিয়ে যাচ্ছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি লিখিত ভাবে তাঁরা সেই ইচ্ছে প্রকাশের কথা জানানোর চেষ্টা করবেন। প্রসঙ্গত, প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকে আজ মহাকরণ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির নেতৃত্বে কর্মী সমর্থকরা জমি অধিগ্রহণের দাবিতে মহাকরণ ঘেরাও করা ছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবেন। অভিযানে সামিল থাকার কথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, মানস ভুঁইয়া, দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অধীর চৌধুরী, আবু হাসেম খান চৌধুরী সহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের। দীপাদেবী বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার ষড়যন্ত্র করে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ করছে না। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন যে, জোর করে জমি অধিগ্রহণ করবেন না। কিন্তু পানিশালা এলাকার চাষিরা সবাই স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি রয়েছেন। আমরা সেই কথাই রাজ্য সরকারকে মহাকরণে গিয়ে বোঝাতে চাই।”
পানিশালা এলাকায় চিহ্নিত জমির মালিক ৮৪ জন। তাঁদের মধ্যে মহাকরণ অভিযানে সামিল হয়েছেন ৫০ জন। বাকিরা কেন অভিযানে সামিল হলেন না? মোহিতবাবুর দাবি, “প্রবল শৈত্য প্রবাহ চলছে। বয়স্ক ও অসুস্থতার কারণে বাকিদের আমরাই অভিযানে সামিল করিনি।”
এদিন মহাকরণ অভিযানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে পানিশালা এলাকার বাসিন্দা তফিল মহম্মদ, ইলিয়াস আলি ও বিশু মহম্মদের মতো চাষিরা বলেন, “আমরা জমির দাম নিয়ে রাজ্য সরকারকে কোনও চাপ দিতে চাই না। উপযুক্ত দাম পেলে আমরা হাসপাতাল তৈরির জন্য স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি রয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকে সেই কথাই লিখিতভাবে জানাব।” গত অগস্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইটাহারে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার চাষিদের বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করবে না। মুখ্যমন্ত্রী সেই সঙ্গে বলে দেন, “যারা রাজনীতি করছেন তাদের বলছি জমি জোগাড় করে দিন, আমরা হাসপাতাল তৈরি করে দেব।” মোহিতবাবু বলেন, “চাষিরা এবারে স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা লিখিতভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। এবারে দেখি মুখ্যমন্ত্রী কি ব্যবস্থা নেন?” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার রায়গঞ্জে হাসপাতাল তৈরির বিরোধী নয়। সরকারি জমি পেলে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরি করার পক্ষে রয়েছে।” |