দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল
আজও শীতঘুমে এসএনসিইউ
নির্ধারিত সময় পেরিয়েছে বছর খানেক আগেই। কিন্তু দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে এখনও চালু হয়নি সিক নিউ-বর্ন কেয়ার ইউনিট। এ নিয়ে ক্ষোভ জমেছে রোগী এবং চিকিৎসকদের একাংশের মধ্যেও। তবে আশ্বাস মিলেছে আগামী ফেব্রুয়ারিতে সদ্যোজাত শিশুদের বিশেষ দেখভালের জন্য এই ইউনিটটি চালু হতে পারে। মহকুমাশাসক তথা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান আয়েষারানি বলেন, “ভবনের নির্মাণ কাজ হয়ে গিয়েছে। বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ চলছে। কর্মীদের প্রশিক্ষণ পর্বও শেষ। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আনার কাজ চলছে। আশা করা যায়, ফেব্রুয়ারিতে নতুন এই ইউনিট চালু হয়ে যাবে।”
২০১১ সালে একসঙ্গে বহু শিশুর মৃত্যুর পরে কলকাতা ও জেলার মহকুমাস্তরের হাসপাতালগুলিতে সিক নিউ-বর্ন কেয়ার ইউনিট চালু করার পরিকল্পনা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের জন্য প্রাথমিক ভাবে বরাদ্দ হয় ৭৫ লক্ষ টাকা। পরে অবশ্য ধাপে ধাপে আরও ৭৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এরপর বিধানসভা নির্বাচন চলে আসায় টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া পিছিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ১০ অক্টোবর টেন্ডার চূড়ান্ত হয়। কিন্তু পূর্ত দফতর অভিযোগ, সিক নিউ-বর্ন কেয়ার ইউনিট গড়ে তোলার জন্য হাসপাতালের মূল ভবনের পাশে যে জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে সেখানে বেশ কয়েকটি গাছ আছে। সেই গাছ না কাটা হলে নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে না। তাদের বক্তব্য, গাছগুলির মালিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাজেই সেগুলি কাটার উদ্যোগ নিতে হবে তাঁদেরই। অন্যদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বন দফতরের মাধ্যমে কোন কোন গাছ কাটা হবে তা চূড়ান্ত করে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। গাছ কাটবে পূর্ত দফতরই। এ ভাবে দুই তরফের টানাপোড়েনে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ ক্রমাগত পিছোতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মহকুমাশাসকের উদ্যোগে সমস্যা মেটে। নির্ধারিত সময়ের কয়েক মাস পরে শুরু হয় নির্মাণকাজ।
সোনার কাঠি ছোঁবে কবে? —নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ত দফতর প্রথমে জানিয়েছিল, ২০১২ সালের ৩১ মার্চ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। পরে তা পিছিয়ে হয় ১ জুলাই। কিন্তু তাও কাজ শেষ হয়নি। জুলাই মাসেই হাসপাতাল পরিদর্শনে আসে চিকিৎসক সাংসদ রত্না দে নাগের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি এক্সপার্ট গ্রুপ’। রোগী ও চিকিৎসকদের একাংশ এসএনসিইউ চালু করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আর্জি জানান তাঁদের কাছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রত্নাদেবী জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইউনিট চালু করার ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু সেপ্টেম্বর পেরিয়ে নতুন বছর পড়লেও এখনও সেই ইউনিট চালু হয়নি। হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাসের সরাসরি অভিযোগ, পূর্ত দফতরের গড়িমসিতেই নতুন ইউনিটটি চালু করার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে পূর্ত দফতর অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, গাছ কাটা নিয়ে বিতর্কের জেরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে বেশ দেরিতে। তাই শেষ হতেও দেরি হচ্ছে। তবে দফতর সূত্রে আশ্বাস মিলেছে, ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ। এখন বৈদ্যুতিকীকরণের কাজ চলছে।
এসএনসিইউ চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগীর পরিজন ও চিকিৎসকদের একাংশও। চিকিৎসা করাতে আসা জেমুয়ার বিধান দে বলেন, “বহুদিন ধরেই শুনছি এখানে সিক নিউ-বর্ন কেয়ার ইউনিট চালু হবে। কিন্তু কবে হবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।” ইস্পাতনগরীর অশোক অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা শ্যামলী সূত্রধর বলেন, “সদ্যোজাত শিশুদের অনেকেই নানা সমস্যা নিয়ে জন্মায়। এসএনসিইউ চালু হলে তাদের উপযুক্ত চিকিৎসার সুযোগ মিলবে।” একমত ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা হাসপাতালের চিকিৎসক মিহির নন্দীও। তিনিও বলেন, “যত দ্রুত সিক নিউ-বর্ন কেয়ার ইউনিট চালু হবে তত ভাল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.