নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পরপর দু’দিন শিয়ালদহে ট্রেন-বিভ্রাট। মঙ্গলবার শিয়ালদহ স্টেশনের কাছেই লালগোলা প্যাসেঞ্জার বেলাইন হয়ে যাওয়ায় মেন, বনগাঁ ও ডানকুনি শাখায় ট্রেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আর বুধবার একটি লাইনে বিক্ষোভ এবং অন্য লাইনে তার ছিঁড়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয় শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায়।
ট্রেন বাড়ানোর দাবিতে ডায়মন্ড হারবার লাইনে বিক্ষোভ। আর তার ছিঁড়ে বিপত্তি লক্ষ্মীকান্তপুর লাইনে। দুইয়ে মিলিয়ে এ দিন ভোর থেকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে যায়। দুপুর ১২টার পরে লক্ষ্মীকান্তপুর শাখায় ফের ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ডায়মন্ড হারবার শাখায় বিকেল পর্যন্ত ট্রেন বন্ধই ছিল। চূড়ান্ত নাকাল হতে হয় যাত্রীদের।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোরে কুয়াশার জন্য ডায়মন্ড হারবার শাখায় ট্রেন চলাচলে কিছুটা দেরি হচ্ছিল। এক দল যাত্রী ট্রেন দেরিতে চলায় বিক্ষোভ শুরু করেন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ট্রেন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে দেন অন্য এক দল যাত্রী। এক সময় দু’দলের বিক্ষোভ মিলে গিয়ে বিরাট আকার নেয়। রেললাইন অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা।
|
ঝুঁকির সফর শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখায় ব্যাহত রেল পরিষেবা। অগত্যা ভরসা সড়ক পথই।
যাত্রিবোঝাই জিপে করেই তাই যাতায়াত চলছে। বুধবার বারুইপুরে। — নিজস্ব চিত্র |
ওই শাখার হোটর-সহ দু’টি স্টেশনের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে দেওয়ায় বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থমকে যায় ট্রেন। বিক্ষোভ চলতে থাকায় বিকেল পর্যন্ত টাওয়ার ভ্যান গিয়েও মেরামতির কাজ করতে পারেনি। ফলে ওই শাখায় ট্রেন বন্ধই থাকে। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই শাসক দল তৃণমূলের সমর্থক বলে রেল পুলিশ সূত্রের খবর।
এ দিনই ভোর ৪টে নাগাদ বারুইপুর-লক্ষ্মীকান্তপুর শাখার মথুরাপুরে ওভারহেড তার ছিঁড়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। একসঙ্গে অনেকটা এলাকা নিয়ে তার ছিঁড়ে পড়ায় সমস্যা বাড়ে। তিনটি টাওয়ার ভ্যান গিয়ে প্রায় আট ঘণ্টার চেষ্টায় তার জোড়া দেওয়ার কাজ শেষ করে। বেলা ১২টা নাগাদ ফের ট্রেন চলাচল শুরু হলেও বিকেল পর্যন্ত তা স্বাভাবিক হয়নি। রেল সূত্রে জানানো হয়, ওই সময় যাত্রীদের সুবিধার জন্য শিয়ালদহ থেকে জয়নগর এবং লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে নামখানা পর্যন্ত কিছু ট্রেন চালানো হয়েছে। ওই শাখায় পুরো পথে ফের টানা ট্রেন চলাচল শুরু হতে দুপুর গড়িয়ে যায়। |
সত্যিই কি বদলেছে সিপিএম, প্রশ্ন আরএসপি-তে নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ঠেলায় পড়ে বিড়াল এখন গাছে উঠছে! কিন্তু বামফ্রন্টের মধ্যে সিপিএমের দাদাগিরির মনোভাব সত্যিই বদলেছে কি না, প্রশ্ন উঠল আরএসপি-র রাজ্য কমিটিতে। এই বাম শরিক দলের জেলার নেতাদের একাংশের বক্তব্য, এখন বিরোধী শিবিরে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়ে সিপিএম আগের চেয়ে বেশি উদারতা দেখাচ্ছে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের ফল বামেদের পক্ষে কিছুটা ইতিবাচক হলেই বড় শরিক আবার ছোটদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আসন বণ্টনের ফয়সালার সময় নিচু তলায় বাম ঐক্য নিয়ে এই প্রশ্ন মাথায় রাখার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আর্জি জানান আরএসপি-র জেলা নেতারা।
বর্ষীয়ান সিপিএম বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার উপরে হামলা এবং ভাঙড় থেকে মিছিলে যোগ দিতে আসা সিপিএম সমর্থকদের উপরে আক্রমণের প্রতিবাদে শহরের পথে মিছিলে যখন পা মেলাচ্ছেন ফ্রন্ট নেতারা, তখনই কলকাতায় আরএসপি-র রাজ্য কমিটির অন্দরে এমন বিতর্ক তাৎপর্যপূর্ণ। ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে পাকাপাকি ভাবে বামফ্রন্ট কমিটি তৈরি না-হওয়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কিছু সদস্য। পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে রেজ্জাকেরই জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অংশে সিপিএমের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অতীতও উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ। প্রশ্ন, অতীতের অভিজ্ঞতার নিরিখে এ বারও ফ্রন্টের শরিক হিসাবেই পঞ্চায়েতে লড়া উচিত হবে কি না। |