মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই সার
শংসাপত্র পাননি, দেওয়াই হল না চাকরির পরীক্ষা
মুখ্যমন্ত্রী জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে আরও তৎপর হতে বলছেন। কিন্তু নিয়ম মেনে আবেদন জানিয়েও পুরুলিয়া পশ্চিম মহকুমাশাসকের দফতরের কিছু কর্মীর গাফিলতিতে বাঘমুণ্ডির এক যুবক ‘ওবিসি-বি’ শংসাপত্র পাননি বলে অভিযোগ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শংসাপত্র জোগাড় করতে না-পারায় চাকরির পরীক্ষায় আবেদনই করতে পারেননি তিনি।
বাঘমুণ্ডির বাড়েরিয়া গ্রামের যুবক প্রশান্ত মাহাতো জেলাশাসকের কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি কলকাতা পুরসভার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় আবেদন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কাছে আগের আমলের ‘অন্যান্য অনগ্রসর জাতি’র (ওবিসি) শংসাপত্র ছিল। কিন্তু নতুন সরকার এসে ওবিসি-দের যে বেশি পিছিয়ে পড়া (এ) এবং পিছিয়ে পড়া (বি), এই দুই শ্রেণিতে ভাগ করেছে, তার জন্য নতুন করে শংসাপত্র পাওয়া প্রয়োজন। জুতোর সুকতলা খুইয়েও প্রশান্ত তা জোগাড় করতে পারেননি।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, মাহাতো পদবির লোকেরা এখন ‘ওবিসি-বি’ হিসেবে চিহ্নিত। প্রশান্ত জানান, ১৮ ডিসেম্বর তিনি বাঘমুণ্ডির বিডিও-র কাছে ওবিসি শংসাপত্র জমা দিয়ে ওবিসি-বি শংসাপত্র চেয়ে আবেদন জানান।
কাগজপত্র হাতে প্রশান্ত মাহাতো। পুরুলিয়া শহরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
তা যাচাই করার পরে আগের শংসাপত্র-সহ পুরুলিয়া শহরে মহকুমাশাসকের (পশ্চিম) অফিসে যোগাযোগ করতে করতে বলা হয়। ২০ ডিসেম্বর তিনি মহকুমাশাসকের (পশ্চিম) অফিসে আবেদন জানান। তার পরেই হয়রানির সূত্রপাত।
প্রশান্তর অভিযোগ, “সে দিন এক কর্মী বলেন, ‘পরের দিন আসুন।’ কিন্তু পরের দিন, ২১ ডিসেম্বরও আমায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ২৪ ডিসেম্বর ওই কর্মী জানান, আমার শংসাপত্র তৈরিই হয়নি। সে দিন ফের মহকুমাশাসকের কাছে নতুন আবেদন করে জানাই, আমার চাকরির আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর। তার আগে ওই শংসাপত্র পাওয়া জরুরি। কিন্তু এর পরে তিন দিন পুরুলিয়ায় গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। ওঁরা শুধু টানা বলে গিয়েছেন, শংসাপত্র তৈরি হয়নি।” প্রশান্তের আক্ষেপ, “কিছু সরকারি কর্মীর গাফিলতির কারণেই ব্যাঙ্কের চালান কেটেও শুধু মাত্র জাতিগত শংসাপত্র না পেয়ে চাকরির পরীক্ষায় আবেদন করতে পারলাম না।”
সব শুনে মহকুমাশাসক (পুরুলিয়া পশ্চিম) নিমাই হালদার বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। বুধবার আমি বাঘমুণ্ডিতে জাতিগত শংসাপত্র বিলির একটি শিবিরে গিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে খবরটি কানে আসায় ওই যুবকের জাতিগত শংসাপত্র বিডিও-র কাছে রেখে এসেছি।”
কিন্তু সরকারি অচলায়তন নড়তে বড় দেরি হয়ে গেল যে! বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনকে মানবিক হতে বলছেন। কিন্তু বাম সরকারের মতো তৃণমূলের আমলেও কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন হয়নি। কর্মপ্রার্থীদের হয়রান করার ট্র্যাডিশন যে অব্যাহত, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।”
যে কর্মীদের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জেরে পুরুলিয়া জঙ্গলমহলের পিছিয়ে থাকা শ্রেণির এক যুবক চাকরির দৌড় শুরুই করতে পারলেন না, তাঁদের কী শাস্তি হবে, সে প্রশ্নের সদুত্তর অবশ্য মেলেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.