রক্ষক যখন ভক্ষক
শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর অভিযোগ শ্লীলতাহানির
কাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠল এক জন স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই শিক্ষক ছাত্রীটিকে নিজের ফ্ল্যাটে পড়াতে ডেকে একাধিক বার তার শ্লীলতাহানি করেন এবং ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য ছাত্রীটিকে ভয় দেখান। যদিও গোটা বিষয়টিই অস্বীকার করেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার শিবপুরে। আতঙ্কিত ছাত্রীটি প্রথমে ঘটনাটি কাউকে না জানালেও শেষে মঙ্গলবার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা দূরে থাক, ঘটনাটি নিয়ে ন্যূনতম তদন্তও শুরু করেনি। ওই কিশোরীর অভিযোগ, যে কোনও কারণেই হোক, পুলিশ এটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বলেও জানায় সে।
হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার অজেয় রানাডে স্বীকার করে নেন যে, এই ঘটনায় এখনও তদন্ত শুরুই করা হয়নি। তবে তিনি জানিয়েছেন, স্কুলের অভ্যন্তরীণ গণ্ডগোলের জেরে ওই শিক্ষককে ফাঁসানো হচ্ছে কি না এবং ওই কাজে মেয়েটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা আগে দেখা দরকার। তার পরেই পুলিশ সিদ্ধান্ত নেবে, এটিকে শ্লীলতাহানির ঘটনা হিসেবে দেখা হবে কি না।
থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রীটি শ্লীলতাহানির ঘটনার কোনও বিশদ বিবরণ দেয়নি। পরে মুখে সে সমস্ত ঘটনার কথা জানায়। শিবপুরের একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ওই ছাত্রীর বাড়ি সাঁকরাইলে। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বেরোনোর পরে সে জানায়, ভাল করে জীবনবিজ্ঞান পড়িয়ে দেবেন ও ভাল ‘নোট্স’ দেবেন বলে স্কুলেরই জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক তাকে ওঙ্কারমল জেটিয়া রোডে নিজের ফ্ল্যাটে ডেকে পাঠান। তার অভিযোগ, প্রথম দিন থেকেই ওই শিক্ষক তার গায়ে হাত দিতে শুরু করেন। প্রতিবাদ করলে জীবনবিজ্ঞানে ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।
বুধবার ওই ছাত্রী বলে, “ভয়ে আমি প্রথমে কয়েক দিন প্রতিবাদ করিনি। পড়তে গিয়েছি। এর পরে এক দিন দুপুরে ফোন করে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে তিনি যখন জোর করে চূড়ান্ত শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন, তখন কোনও রকমে ওঁর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসি।”
ছাত্রীটির অভিযোগ, এর পর থেকে ‘স্যার’-এর ভয়ে স্কুল যাওয়া বন্ধ করে দেয় সে। যদিও তার মোবাইলে বারবার ফোন করে ওই শিক্ষক তাকে বিরক্ত করতে থাকেন। ওই ছাত্রী জানায়, শেষ পর্যন্ত ঘটনাটি স্কুলের কয়েক জন শিক্ষককে বলে সে। তার পরে তাঁদেরই কয়েক জনকে নিয়ে শিবপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
এ দিন ওই ছাত্রী বলে, “আমি জানতে পেরেছি, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। কোনও ছাত্রী সাহস করে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে যায়নি। আমি চাই ওই শিক্ষকের শাস্তি হোক। আর যাতে কোনও দিন তিনি এ ভাবে ছাত্রীদের ক্ষতি করতে না পারেন।”
ছাত্রীর অভিযোগ অবশ্য সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক। এ দিন স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ওই শিক্ষককে প্রশ্ন করা হলে তিনি নিজের স্কুলের ছাত্রীকেও চিনতে অস্বীকার করেন। বলেন, “আমি কিছুই জানি না। ওই ছাত্রীটিকেও চিনি না। এই অভিযোগ ঠিক নয়।”
অভিযুক্ত শিক্ষক তাঁকে চিনতে পারছেন না শুনে ওই ছাত্রী জানায়, সে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে। ভয় পাওয়ার কারণ হিসেবে সে বলেছে, “কাল থেকে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনও তদন্ত শুরু করেনি। আমার লিখিত অভিযোগের পরেও ওই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেনি পুলিশ।” হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার বলেন, “আগামী কাল ওই তরুণীকে ডেকে তাঁর জবানবন্দি রের্কড করা হবে। তার পরে তদন্ত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.