কোচিতে জোর পর্যটনে
প্রবাসী-লগ্নি টানার সুযোগই নিল না মমতার প্রশাসন
রেন্দ্র মোদীর রাজ্য আছে, নীতিশ কুমারেরও আছে। নবীন পট্টনায়েকের রাজ্যের সঙ্গেই রয়েছে শিবরাজ সিংহ চৌহানের রাজ্য। এমনকী যে রাজ্যে আজ বাদে কাল রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে, রয়েছে সেই ঝাড়খণ্ডও।
দেখা নেই শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গের।
তিন দিন ধরে কেরলের কোচিতে প্রবাসী ভারতীয়দের সম্মেলন চলল। কেন্দ্র ও কেরল সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের প্রায় দু’হাজার প্রতিনিধি এ বারের ‘প্রবাসী ভারতীয় দিবস’-এ যোগ দিয়েছেন। কেরল ছাড়াও আরও নয়টি রাজ্য এখানে অংশ নিয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, প্রবাসী শিল্পপতিদের সামনে রাজ্যে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরা। নীতিশ কুমার রাজনৈতিক প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদীকে এড়িয়ে চললেও, কোচির মঞ্চে দু’জনেই নিজের রাজ্যের প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। পঞ্জাব, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রের মতো রাজ্যও অংশ নিয়েছিল।
কিন্তু কোথাও পশ্চিমবঙ্গের টিকিটির খোঁজ মিলল না। প্রবাসী ভারতীয় বিষয়ক মন্ত্রক সূত্রের খবর, নিয়ম মেনে সব রাজ্যকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এক বার নয়, বার বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।
তিন দিনের সম্মেলনের শেষে বণিকসভার এক কর্তার বলেন, “এ বারের সম্মেলনে গল্ফ ট্যুরিজম, ইকো-ট্যুরিজম, টি-ট্যুরিজমের মতো বিষয় নতুন মাত্রা যোগ করছে। প্রবাসী শিল্পপতিরা এ সব ক্ষেত্রে আগ্রহও দেখাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ সে দিক থেকে অন্যতম গন্তব্য হতে পারে। কারণ দার্জিলিংয়ের চা-বাগান থেকে সুন্দরবনের জঙ্গল, সবই রয়েছে ওই রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীও এই দিকগুলিতে জোর দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু কাজেকর্মে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।”
মহাকরণ সূত্রে বলা হচ্ছে, শুধু এ বার নয়, অতীতেও পশ্চিমবঙ্গ কখনই প্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি। ২০০৮ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন প্রবল ভাবে রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে চাইছেন, সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম এক বার এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল। সেই শেষ। নতুন সরকার আসার পরেও ছবিটা পাল্টায়নি। অথচ রাজ্য থেকে বিদেশে গিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন, কলকাতায় ফিরে এসে কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে, এমন মানুষ কম নেই। তথ্যপ্রযুক্তি বা অন্যান্য ক্ষেত্রে বিদেশে বড় পদে কর্মরত বাঙালির সংখ্যাও কম নয়। তা সত্ত্বেও বিষয়টি রাজ্য প্রশাসন গুরুত্ব দেয়নি।
কী কী সুযোগ হারাল পশ্চিমবঙ্গ?
কোচি থেকে বাণিজ্য মন্ত্রকের এক কর্তা ফোনে জানালেন, “আজ শেষ দিনে প্রতিটি রাজ্যের সঙ্গে পৃথক ভাবে শিল্পপতিদের বৈঠকের ব্যবস্থা হয়েছিল। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এস জগৎরক্ষণ রাজ্যের প্রতিনিধি ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যাহ্নভোজে আপ্যায়ণও করেছিলেন। অনুপস্থিত রাজ্যগুলি এই সুযোগ হারাল।” শুধু শিল্প নয়, পর্যটন, শিক্ষা ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও বিনিয়োগের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজে সেখানে হাজির হয়ে এই সব ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিনিয়োগ চেয়েছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, “বিনিয়োগই হোক বা প্রযুক্তি-দক্ষতা ভাগ করে নেওয়া, শহরে হোক বা গ্রামে, সরকার প্রবাসীদের সব রকম সহযোগিতা করবে।”
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোথায় কী সুযোগ রয়েছে, তার ব্যাখ্যা করেছেন আনন্দ শর্মা, মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ারা। আমেরিকা তো বটেই, ব্রিটেন, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মরিশাসের মতো দেশ সরকারি ভাবে এখানে অংশ নিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা তো ছিলেনই।
পশ্চিমবঙ্গ কেন অংশ নিল না?
তৃণমূলের তরফে বলা হচ্ছে, আগামী সপ্তাহেই হলদিয়ায় শিল্পপতি সম্মেলন ‘বেঙ্গল লিড্স’ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেখানে প্রবাসী শিল্পপতিদের অনেককেই আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। সেই জন্যই কোচির সম্মেলন নিয়ে উৎসাহ দেখানো হয়নি।
তা ছাড়া কিছু দিন আগেই দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী নিজে শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর পর মুম্বইয়েও এমন বৈঠক হবে। কাজেই কোটিতে না-গেলেও লগ্নি টানার চেষ্টায় কোনও কসুর হচ্ছে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.