নামছে পারদ, উধাও যানবাহন
বাপরে কী ঠান্ডা! দিন তিনেক ধরে প্রবল শীতে কাবু জেলার মানুষজনের মুখে এখন শুধু এই কথাই বারে বারে ঘুরপাক খাচ্ছে। রবিবার থেকেই তাপমাত্রার পারদ চড়চড় করে নেমেছে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। বীরভূম জেলা তার ব্যতিক্রম নয়। জেলা আবহাওয়া দফতরের সূত্র অনুযায়ী, মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার তা সামান্য নেমে হয়েছে ৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যদিও বুধবার সর্বোচ্চ তাপমত্রা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ১৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ছিল ১৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রা যেমন নামছে, তেমনি রয়েছে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস মানলে আগামী ৪৮ ঘন্টায় পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হবে না। ফলে আগুন জ্বালিয়ে হাত সেঁকে নেওয়ার সঙ্গে গরম চা-তেলেভাজা বা লেপ জড়িয়ে জড়োসড় হয়ে বিছানায় থাকার সুযোগ থাকছেই। তবে সেটা সকলের জন্য নয়। সাত সকালে বিভিন্ন কাজে বা রুজির টানে যাঁরা বাইরে বেরোচ্ছেন তাঁদের কষ্ট পেতে হবে।
আগুনে হাত। রামপুরহাটের গদাধরপুরে ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।
প্রবল শীতে জেলার রাস্তায় রাতে বা ভোরের দিকে যানবাহন তুলনায় আনেক কম চলছে। কম্বল সরিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠতে মন চাইছে না কারওই। আর ঘুম ভেঙে জলে হাত দিলে কনকনে ঠন্ডায় হাত বেঁকে যাওয়ার যোগাড়। সকাল থেকে সন্ধ্যার মাঝে স্বস্তি শুধু মাত্র বেলা দশটা সাড়ে দশটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত। তাও যতক্ষণ রোদের তাপ যতক্ষণ থাকে। তার মধ্যে শরীরটা সামান্য সেঁকে নেওয়ার সুযোগ থাকে। সন্ধ্যা নামার আগেই পাল্লা ভারি শীতের। ভিড় শুধু চায়ের দোকানগুলিতে। দুবরাজপুর পুরসভার টোল আদায়ের কর্মী মিহির হাজরা বলেন, “এখন গাড়ির চাপ অনেক কমে গিয়েছে। গত দু’তিন দিনে আরও কম।” অন্য অভিজ্ঞতার কথা শোনা গেল বোলপুরের চায়ের দোকানি পুজা দাসের মুখে। তিনি বলেন, “শীতের কারণে ভোর থেকে চায়ের দোকানে গিয়ে বসতে হচ্ছে। শীতবস্ত্র চাপিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে বসি। শীতের কারণে চা বিক্রি বেড়েছে। আগে যে পরিমাণ দুধ কিনতে হত এখন তার থেকে ৮-১০ লিটার বেশি কিনতে হচ্ছে।” অন্য দিকে, সব্জি বিক্রেতা অক্ষয় গড়াই শোনালেন তাঁর কষ্টের কথা। তিনি বলেন, “ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। সাইকেলে ঘুরে ঘুরে সব্জি বিক্রি করি।
লেপ নিয়ে পথে। বোলপুরে বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
ঠান্ডায় আঙুল বেঁকে যায়। কী করব আয় করতে হবে।”
জেলা স্বাস্থ্যদফতর সূত্রের খবর ঠান্ডা লাগা বা শ্বাসকষ্ট জনিত করাণ নিয়ে কিছু রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে ভর্তি হচ্ছেন। সিউড়ি, রামপুরহাট ও বোলপুর তিন মহকুমাতেই ওই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে খবর। সিউড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সমীরকান্তি দত্ত জানিয়েছেন, বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষেরা শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসছেন। রামপুরহাট হাসপাতালের চিকিৎসক আনন্দ মণ্ডলের বক্তব্য, “এই ঠান্ডায় শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা তো বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও।” প্রায় একই বক্তব্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুদীপ মণ্ডলেরও।
এই শীত চলতে থাকলে এবং কুয়াশা থাকলে বোরো ধানের বীজতলা এবং শীতকালীন সব্জি-- বিশেষ করে ফুলকপি এবং আলু চাষের ক্ষতির সম্ভবনা দেখছে জেলা কৃষি দফতর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.