ক্ষোভ লোবায়
পুলিশ আদৌ গুলি চালায়নি, হাইকোর্টে রিপোর্ট এসপি-র
রাতারাতি পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দিয়েছিল সরকার। খোদ মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য জনসভায় থানার ওসি-কে সরিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। অথচ যার জেরে এত সব, সেই লোবা-কাণ্ডে পুলিশ আদৌ গুলি চালায়নি দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট দিলেন বীরভূমের নতুন এসপি মুরলীধর শর্মা।
এই রিপোর্ট ‘সর্বৈব মিথ্যা’ বলে দাবি লোবার ‘কৃষিজমি রক্ষা কমিটি’ এবং তাদের সহযোগী পিডিএসের। ‘মিথ্যা’ রিপোর্ট দেওয়ার প্রতিবাদে ১১ জানুয়ারি এসপি অফিস ঘেরাও করে গণ-বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক সমীর পূততুণ্ড।
গত ৬ নভেম্বর দুবরাজপুরের লোবায় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে আহত বাবুপুর গ্রামের গৌতম ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “তা হলে আমার পায়ে এই ক্ষত কীসের? এর জন্যই তো দেড় মাস হাসপাতালে থাকতে হল! এখনও পুরোপুরি সুস্থ হইনি। এর পরেও পুলিশ গুলি চালায়নি বলেছে। কী বলব বুঝতে পারছি না।” লোবা গ্রামের পূর্ণিমা ডোম বললেন, “পুলিশই গুলি চালিয়েছিল আমার পায়ে।
ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা কার্তুজের খোল। —ফাইল চিত্র
এখন গুলি চালায়নি বললেই হল! এত তাড়াতাড়ি ওই স্মৃতি মুছে যাবে কী করে?”
‘প্রতিবাদের ভাষা, গণতন্ত্রের ভাষা’ নামে একটি সংস্থার দাবি, লোবায় তারা তদন্ত করে জেনেছে, গুলিতে পাঁচ জন আহত হয়েছিলেন। এই তদন্তের কথা উল্লেখ করে এক ব্যক্তি হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেন। তার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করে। বুধবার জমা দেওয়া সেই রিপোর্টে পুলিশ সুপার দাবি করেছেন, লোবায় পুলিশ গুলি চালায়নি। কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়। দু’পক্ষের কয়েকজন আহত হন। তবে গুলিতে কেউ জখম হননি।
আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এ দিন জানান, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে তিনি এসপি-র রিপোর্ট নিয়ে তাঁদের বক্তব্য হলফনামা করে জমা দেবেন। তার পরেই ফের শুনানি হবে।
এসপি-র রিপোর্ট নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। কারণ লোবা-কাণ্ডের পরেই সরানো হয়েছিল তৎকালীন পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সংঘর্ষের দিন ‘পুলিশ সংযত ছিল’ বলে মন্তব্য করার পরেও কেন ওই পদক্ষেপ, তা পুলিশ মহলে নানা জল্পনা উস্কে দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীই কিছু দিন পরে বলেছিলেন, “লোবায় যা হয়েছে, তা অন্যায়।” গত মাসে লোবায় জনসভা করে প্রকাশ্যেই দুবরাজপুর থানার ওসি অর্ণব গুহকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন মমতা। তাঁর হাতে ছিল আহত গ্রামবাসীর জন্য ক্ষতিপূরণের চেকও। বদলি করা হয়েছে ডিআইজি (বর্ধমান রেঞ্জ) বাসব তালুকদারকেও।
কৃষিজমি রক্ষা কমিটির সম্পাদক জয়দীপ মজুমদারের প্রশ্ন, “পুলিশ যদি গুলিই না চালায় ঘটনাস্থলে কার্তুজ কী ভাবে এল? গ্রামবাসীরা আহতই বা হলেন কী ভাবে? ঘটনার পরে পরে এসপি এবং একে একে ওসি, ডিআইজি-কে কেন সরানো হল?”
এ সব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। বরং এসপি-র পাল্টা প্রশ্ন, “আপনারা কি আমার রিপোর্ট দেখেছেন যে এই প্রশ্ন করছেন?” তা হলে ঘটনাস্থলে কার্তুজের খোল কোথা থেকে এল? এসপি-র জবাব, “পুরোটাই তদন্তের মধ্যে রয়েছে।” তদন্ত করছেন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) সুরজিৎ পুরকায়স্থ। পিডিএস নেতা সমীরবাবুর বক্তব্য, “আমরা বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়েছিলাম। পুলিশকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করালে পুলিশকে আড়াল করার চেষ্টা হবেই! এই মিথ্যা রিপোর্ট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.