বিদেশে বসে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজতে এ বার ট্যাক্সিচালকদের সাহায্য চাইলেন বাবা। বর্ষশেষের রাতে ম্যাঞ্চেস্টার থেকে হারিয়ে যাওয়া শৌভিক পালকে যত দিন না খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে, তত দিন সে দেশেই বসে থাকবেন বলে পণ করেছেন তাঁর বাবা শান্তনু পাল।
বুধবার সন্ধ্যায় ম্যাঞ্চেস্টার থেকে ফোনে তিনি বলেন, “ম্যাঞ্চেস্টার ও সংলগ্ন এলাকার ট্যাক্সিচালকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে শৌভিকের ছবি দিয়েছি। ওঁরা যদি কোনও ভাবে দেখতে পেয়ে যান!” নিঃসঙ্গ এশীয় যুবক ইংল্যান্ডে রাতের রাস্তায় বিপদে পড়েছেন, এ রকম উদাহরণ ভূরি ভূরি। স্রেফ এশীয় বলেই দুষ্কৃতীরা খুন করেছে, এমন ঘটনা যেমন রয়েছে, তেমনই মাদক চোরাচালানদারদের হাতেও খুনের ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনুজ বিদভেও এমনই এক ঘটনায় খুন হন। ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ম্যাঞ্চেস্টারের স্যালফোর্ড-এ। কিন্তু শৌভিকের সঙ্গে এমন কিছু ঘটেনি বলেই এখনও পর্যন্ত পুলিশের ধারণা।
|
শৌভিক পাল |
ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশের ডিটেকটিভ চিফ ইন্সপেক্টর কলিন লারকেন-এর কথায়, “খুনের ঘটনা হলে এত দিনে জেনে যেতাম। শৌভিক বেঁচে রয়েছেন বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”
৩১ ডিসেম্বর রাতে ‘ওয়্যারহাউস প্রজেক্ট’ নাইটক্লাবের বাইরে যে সিসিটিভি ফুটেজে শৌভিকের ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল, তা থেকে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা হয় শৌভিক সেখান থেকে বেরিয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড স্টেডিয়ামের দিকে হাঁটা লাগিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার লারকেন জানান, ওঁদের হাতে আরও কিছু সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে।
তদন্তের স্বার্থে এখনই সে বিষয়ে বিশদ কিছু বলতে চাইছেন না তিনি। তবে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে প্রায় ৬৪টি সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পেয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার পুলিশ। সমস্ত ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লারকেনের যুক্তি, “শৌভিককে খুন করা হলে আমরা তার দেহ এত দিনে খুঁজে পেয়ে যেতাম। যারা এই ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তারা খুন করে হয় রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যাবে। নয়তো কাছাকাছি খালে দেহ ফেলে দেবে। সেই কারণেই গত ৪ জানুয়ারি আমরা স্থানীয় ব্রিজওয়াটার খালে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালিয়েছি। কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি।”
৩১ ডিসেম্বর ম্যাঞ্চেস্টারের কোথাও গুলি চললে এত দিনে সেটা জানা যেত বলেও দাবি করছেন এই গোয়েন্দা অফিসার। সেই আশাতেই বুক বাঁধছেন শৌভিকের বাবা-মা। |