অন্য বারের তুলনায় শীতকালীন সব্জির দাম বেশি মিলছে। তাতে আশায় বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। তিন দশকের পর এ বার রেকর্ড শীত জলপাইগুড়ি জেলায়। সেই প্রচণ্ড ঠান্ডায় ফলন মার খাচ্ছে বলে উদ্বিগ্ন তাঁরা। প্রায় ৫ দিন ধরে ঠিকঠাক সূর্যের দেখা নেই। সপ্তাহখানেক ধরে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায় টম্যাটো, শসা, সিম, বেগুন, টম্যাটো গাছে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ফলন অর্ধেক হয়ে গিয়েছে বলে চাষিদের দাবি। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, গত পাঁচ দিন ধরে সব্জি গাছগুলির পাতা হলুদ হয়ে নুইয়ে পড়তে শুরু করেছে। ঠান্ডার পরে ঝলমলে রোদ দেখা দিলে আলু জমিতে ধসার আক্রমণের আশঙ্কাও রয়েছে। গাছ রক্ষা করতে আগাম ব্যাপক হারে ওষুধ প্রয়োগ করতে শুরু করেছেন চাষিরা। ফলন কম হওয়ায় বাজারে কৃষকেরা যে পরিমাণ সব্জি নিয়ে আসছেন, তাতে চাহিদার তুলনায় যোগান কম। তাতেই সব্জির দাম হু হু করে বাড়ছে। মঙ্গলবার ফালাকাটায় হাট বসে। |
অন্য বার এ সময়ে গড়ে প্রতি হাটে ১২০০ টন সব্জি লেনদেন হয়। এবার তা ৮০০ টনে পৌঁছেছে বলে কৃষি দফতর সূত্রের খবর। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান তথা আবহাওয়াবিদ সুবীর সরকার বলেন, “৪৮ ঘন্টার মধ্যে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে না। ঠাণ্ডা আরও বাড়বে। তার পর বোঝা যাবে কী অবস্থা হবে।” কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কুয়াশা এবং তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শীত চলতে থাকলে সব্জি ফলন মার খাবে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক অশোক সাহা বলেন, “অন্তত তিন-চার দিন গাছে রোদ না পেলে ফুল ঝরে যাবে। তাতে উৎপাদন কম হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে পরামর্শ নিয়ে সঠিক ওষুধ নির্ধারিত পরিমাণে প্রয়োগ করা দরকার।” ফালাকাটার কৃষক তনয় মোদক জানান, তিনি ৬ বিঘা জমিতে সিম, টমেটো, বেগুন ফলিয়েছেন। তাঁর কথায়, “ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক গাছ হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কী করব ভেবে পাচ্ছি না।” বানিয়াবাড়ি গ্রামের লিটন দাসের কথায়, “১০ বিঘায় আলু করেছি। যে ভাবে ঠান্ডা পড়েছে তাতে পরে রোদ উঠলে বা বৃষ্টি পড়লে মারা পড়ব। আগাম ওষুধ প্রয়োগ করেছি।” |